Science News

একাই নানা প্রজাতির ডিম পাড়বে এই মুরগি

দেখতে নিতান্ত ভাল ‘মানুষ’-এর মতো। দিব্যি নিপাট বাদামি পালকের মুরগি। হৃষ্টপুষ্ট। কিন্তু এই পর্যন্ত দেখে তার ভেল্কির কথা ঘুণাক্ষরেও টের পাবেন না আপনি। সাধারণ মুরগির সঙ্গে তুলনা করলে চলবে না মোটেই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৬:০৮
Share:

সৃষ্টি ও সৃষ্টিকর্তা। হাইব্রিড মুরগির সামনে বিজ্ঞানীদল। ছবি: সংগৃহীত

দেখতে নিতান্ত ভাল ‘মানুষ’-এর মতো। দিব্যি নিপাট বাদামি পালকের মুরগি। হৃষ্টপুষ্ট। কিন্তু এই পর্যন্ত দেখে তার ভেল্কির কথা ঘুণাক্ষরেও টের পাবেন না আপনি। সাধারণ মুরগির সঙ্গে তুলনা করলে চলবে না মোটেই। ছোট্ট একটা জিনের সামান্য নড়াচড়ায় এখন রীতিমতো তারকা এই মুরগি।

Advertisement

কারণ সে একাই একশ। কী ভাবে? নানা প্রজাতির ডিম একাই পারতে পারে জেনেটিক্যালি মডিফ্যায়েড এই মুরগি। শুনে আকাশ থেকে পরছেন নিশ্চয়ই। কিন্তু শুনে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি।

নিজেদের গবেষণাগারে এমনই হাইব্রিড মুরগির জন্ম দিলেন এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি ম্যাসাচুসেটসের আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্স-এর এক সম্মেলনে এই অভিনব বিষয়টি সকলের সামনে তুলে ধরেন বিজ্ঞানীরা। এই সম্মেলনেই তাঁরা জানান, জেনেটিক কারিগরির ফলে জন্ম নেওয়া হাইব্রিড এই মুরগি বিভিন্ন প্রজাতির ডিম পারতে পারবে। শুধু তাই নয়, বার্ড ফ্লু’র মতো রোগও অনায়াসেই প্রতিরোধ করতে পারবে এই মুরগি। অর্থাৎ এর ডিম থেকে জন্ম নেওয়া কোনও মুরগিই বার্ড ফ্লু’য়ের বাহক হবে না।

Advertisement

আরও পড়ুন: নতুন সাত ‘পৃথিবী’র খোঁজ পেল নাসা, মিলবে কি প্রাণের সন্ধান?

হাইব্রিড মুরগীর পারা ভিন্ন প্রজাতির ডিম

এডিনবরার বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পাখিদের প্রজননে মুখ্য ভূমিকা নেয় ডিডিএক্স৪(DDX4) নামক জিনটি। জিন এডিটিং পদ্ধতিতে মডিফাই করা হয়েছে এই জিনটিই। তবে নিজের ডিম পারতে পারবে না হাইব্রিড এই মুরগি। তাহলে কী ভাবে বিভিন্ন প্রজাতির মুরগির জন্ম দেবে সে?

বিজ্ঞানীদলের মুখ্য গবেষক মাইক ম্যাকগ্রিউ জানাচ্ছেন, এই মুরগি আসলে সরোগেট মাদারের ভূমিকা পালন করবে। সেটা ঠিক কী রকম? যদি অন্য কোনও প্রজাতির মুরগির স্টেম সেল এনে হাইব্রিড মুরগির গর্ভে স্থাপন করা হয় তাহলে সেই প্রজাতির ডিম নিজের দেহে তৈরি করবে এই হাইব্রিড মুরগি। এবং সেই প্রজাতির মুরগির ডিম পারবে সে।

কিন্তু হঠাৎ কেন এই ধরনের মুরগি তৈরির কথা মাথায় আসল বিজ্ঞানীদের?

“আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বিলুপ্ত প্রজাতির মুরগি সংরক্ষণ”— জানালেন ম্যাকগ্রিউ। যেহেতু এই মুরগি অন্য প্রজাতির ডিমও পারতে পারে তাই বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি সংরক্ষণ করতে নতুন এই হাইব্রিড মুরগি সাহায্য করবে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

ইতিমধ্যেই ‘রাম্পেল্স গেম’, ‘স্কটস ডাম্পি’, ‘সিসিলিয়ান বাটারকাপ’, ‘ওল্ড ইংলিশ ফেজ্যান্ট ফাউল’ প্রভৃতি বিরল প্রজাতির মুরগির ডিম পেরেছে এই হাইব্রিড মুরগি। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, অদূর ভবিষ্যতে বিরল ও লুপ্তপ্রায় প্রজাতিকে ফের নতুন করে বাঁচিয়ে তুলবে এই মুরগি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement