—প্রতীকী চিত্র।
এই বিশ্ব সংসারে কি একটাই সূর্য? একটাই পৃথিবী আর একটাই জীবজগৎ! দীর্ঘদিন ধরে এর উত্তর খুঁজে চলেছে মানুষ। সম্প্রতি সেই রহস্য আরও উস্কে দিল কেপলার-৩৮৫।
আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা-র অবসরপ্রাপ্ত স্পেস টেলিস্কোপ কেপলার খবর দিয়েছে এক ভিন্ জগতের। সে জগতেও এক ‘সূর্য’ রয়েছে, যাকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছে সাতটি গ্রহ। তবে এই গ্রহগুলি সৌরজগতের বাসিন্দাদের থেকে অনেক বেশি গরম। সাতটি গ্রহই আকারে পৃথিবীর থেকে বড়, নেপচুনের থেকে ছোট। কেপলারের নামে ভিন্গ্রহীদের এই জগতের নাম রাখা হয়েছে কেপলার-৩৮৫। এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘দ্য জার্নাল অব প্ল্যানেটারি সায়েন্স’ নামক বিজ্ঞান পত্রিকায়।
প্রাথমিক ভাবে, কেপলারের অভিযান শেষ হয়েছিল ২০১৩ সালে। কিন্তু তার পরেও কাজ চালিয়ে গিয়েছে সে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত কাজ করেছে কেপলার। অভিযানের এই দ্বিতীয় অধ্যায়কে বলা হত ‘কে২’। কেপলারের মহাকাশ-অনুসন্ধান থেকে পাওয়া তথ্য এখনও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আর উঠে আসছে নতুন নতুন তথ্য। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের বাসিন্দা অসংখ্য গ্রহের সন্ধান দিয়েছে এই দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি। সংখ্যায় নক্ষত্রদের পিছনে ফেলে দিয়েছে গ্রহেরা।
নাসার বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত ৪৪০০ গ্রহের খোঁজ দিয়েছে কেপলার। এর মধ্যে ৭০০টি মাল্টি-প্ল্যানেট সিস্টেম (নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণকারী একাধিক গ্রহের সংসার)। কিন্তু একই পরিবারে ছ’টি বা তার বেশি গ্রহ রয়েছে, এমন সংসার খুব কমই দেখতে পেয়েছে কেপলার। ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালিতে নাসার ‘এমস রিসার্চ সেন্টার’-এর বিজ্ঞানী জ্যাক লিসাউয়ের বলেন, ‘‘কেপলারের সন্ধান দেওয়া গ্রহগুলি নিয়ে একটি ক্যাটালগ তৈরি করছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের চরিত্র, বৈশিষ্ট্য... এ সব উল্লেখ রাখা হচ্ছে তাতে। এ বারে ওই তালিকায় কেপলার-৩৮৫-র নাম সংযোজন হল।’’ তিনি জানাচ্ছেন, কেপলার-৩৮৫-এর কেন্দ্রস্থলে রয়েছে সূর্যের মতো একটি তারা। তবে সূর্যের থেকে এটি ১০ শতাংশ বড়। ৫ শতাংশ বেশি গরম। নক্ষত্রটির কাছাকাছি থাকা গ্রহ দু’টি পৃথিবীর থেকে সামান্যই বড় আকারে। পাথুরে জমি। পাতলা বায়ুস্তরও থাকতে পারে। বাকি গ্রহগুলি বেশ বড়। এক-একটির ব্যাসার্ধ পৃথিবীর ব্যাসার্ধের দ্বিগুণ। বিজ্ঞানীদের অনুমান, এই গ্রহগুলিতে মোটা বায়ুস্তর রয়েছে।