ব্ল্যাক হোল থেকেও বেরিয়ে এল আলো। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
রাক্ষুসে অন্ধকারও উগরে দিল আলো! আর আচমকাই সেটা আমাদের চোখে পড়ে গেল।
আলো ঠিকরে বেরিয়ে আসতে দেখা গেল ব্ল্যাক হোল থেকে। আলোর ঝিলিক! ঝলকও বলা যায়। এই প্রথম।
এই আলোই কি এক দিন হয়ে উঠবে ‘রানার’? রাক্ষুসে ব্ল্যাক হোলের বার্তা আমাদের কাছে পৌঁছে দেবে?
নাসা জানিয়েছে, সান ডিয়েগোর কাছে পালোমার অবজারভেটরিতে বসানো ‘জুইকি ট্রানসিয়েন্ট ফেসিলিটি (জেডটিএফ)’ টেলিস্কোপেই ধরা পড়েছে এই বিরল দৃশ্য। গবেষণাপত্রটি বেরিয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘ফিজিক্যাল রিভিউ লেটার্স’-এ।
ব্ল্যাক হোলের আর এক ‘রানার’?
মহাকর্ষীয় তরঙ্গের পাশাপাশি হয়তো এই আলোর ঝিলিকও এ বার হয়ে উঠবে ব্ল্যাক হোলের রহস্য-জগতের আরও এক বার্তাবাহক। আরও এক ‘রানার’! ব্ল্যাক হোলকে চেনা, জানার আরও একটি চাবিকাঠি।
ব্ল্যাক হোলের রং ঘুটঘুটে কালো। সে কৃষ্ণগহ্বর। তার নাগালে যা আসে, তাকেই সে রাক্ষসের মতো গিলে নেয়। তার অসম্ভব জোরালো অভিকর্ষ বলের নাগপাশ এড়িয়ে এমনকী আলোও বেরিয়ে আসতে পারে না। তাই কোনও টেলিস্কোপেই ব্ল্যাক হোল দেখা যায় না।
সেই ব্ল্যাক হোল থেকেই এ বার ঠিকরে বেরিয়ে আসতে দেখা গেল আলো। তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ। এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে, তার তাত্ত্বিক পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু সংঘর্ষের সময় কোনও ব্ল্যাক হোল থেকে আলোর মতো তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ বেরিয়ে আসার প্রমাণ এত দিন মেলেনি হাতে-কলমে।
নাসার খবর, এই আলোর ঝিলিক দেখা গিয়েছে একে অন্যের চার দিকে ঘুরতে ঘুরতে কাছে এসে পড়া দু’টি ব্ল্যাক হোলের মধ্যে খুব জোরে ধাক্কাধাক্কি/সংঘর্ষ (‘কলিশন’) হওয়ার পর। ওই ধাক্কাধাক্কিতে তুলনায় ছোটখাটো দু’টি ব্ল্যাক হোল (সূর্যের চেয়ে একটু বেশি ভারী) মতো মিলেমিশে গিয়ে একটি বড় ব্ল্যাক হোল তৈরি করেছে। আলোর ঝিলিকটা বেরিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে নবজাতক বড় ব্ল্যাক হোলটি থেকে। আর সেই ঝিলিকটি গত বছরের ২১ মে আমাদের নজরে এসেছে। আলোরও যে মহাকাশে অনেকটা পথ পেরিয়ে আসতে হয়।
দু’টি ব্ল্যাক হোলের সংঘর্ষে কী ভাবে তৈরি হয় মহাকর্ষীয় তরঙ্গ, দেখুন ভিডিয়ো।
তবে এটাও হক কথা, দু’টি ব্ল্যাক হোলের সংঘর্ষে কিন্তু শুধুই মহাকর্ষীয় তরঙ্গেরই জন্ম হবে। এ ক্ষেত্রে একই সঙ্গে আলোর ঝিলিকও দেখা গেল, ধাক্কাধাক্কি করা দু’টি ব্ল্যাক হোলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে কণা, পদার্থও ছিল বলে। নাগালে আসা সব কিছুই গিলে খেতে গিয়ে যে কণা ও পদার্থের কিছুটা ছিটকে ছড়িয়ে পড়ে ব্ল্যাক হোলেরই চার পাশে, তার ‘অ্যাক্রিশন ডিস্ক’-এ। প্রচণ্ড তাপমাত্রায় যে কণা ও পদার্থ গ্যাসের পুরু চাদরটা বানিয়ে ফেলে ব্ল্যাক হোলের চার পাশে। যেন গ্যাসের মেঘ।
এখন খবর বয়ে আনে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ
মহাকাশে এমন সংঘর্ষ হলে তীব্র আলোড়ন হয়। দুমড়ে মুচড়ে যায় স্থান ও কাল (স্পেস অ্যান্ড টাইম)। তার ফলে বেরিয়ে আসে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ।
পুকুরে ভাসা দু’টি বড় পাথরের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিতে যেমন তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে জলে, ঠিক তেমনই। তার পর সেই জলের তরঙ্গ যেমন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একটু একটু করে পুকুরের পাড়ে পৌঁছয়, তেমনই দু’টি ব্ল্যাক হোলের মধ্যে সংঘর্ষে তৈরি হওয়া মহাকর্ষীয় তরঙ্গ পৃথিবীতে পৌঁছলে আমরা তা দেখতে পাই। আর সেই তরঙ্গের সূত্র ধরেই হিসাব কষে বুঝে নিতে পারি আমাদের থেকে কত দূরে আজ থেকে কত কোটি বছর আগে সেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল ওই দু’টি ব্ল্যাক হোলের মধ্যে। মহাকাশে পথ পেরতে যে সময় লাগে মহাকর্ষীয় তরঙ্গেরও।
আরও পড়ুন- হ্যাক করতে পারবে না কোয়ান্টাম কম্পিউটারও, মহাকাশ থেকে এমন বার্তা পাঠাল চিন
আরও পড়ুন- সুপারপাওয়ার শিশুর খোঁজ পেল নাসা, জন্ম যার পলাশির যুদ্ধেরও অনেক পরে!
মহাকর্ষীয় তরঙ্গ বেরিয়ে আসে যেমন দু’টি ব্ল্যাক হোলের বা একটি ব্ল্যাক হোলের সঙ্গে একটি নিউট্রন নক্ষত্রের সংঘর্ষে, তেমনই সেই তরঙ্গ বেরিয়ে আসে দু’টি নিউট্রন নক্ষত্রের মধ্যে সংঘর্ষেও।
যেহেতু এই তরঙ্গ আলোর মতো কোনও তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ নয়, তাই কোনও টেলিস্কোপে বা আলোসন্ধানী যন্ত্রে তা ধরা পড়ে না। তা ধরা পড়ে বিশেষ এক ধরনের যন্ত্রে। ‘লাইগো (লেসার ইনটারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অবজারভেটরি)’-র ডিটেক্টরে।
ব্ল্যাক হোলকে দেখার উপায় নেই। তাই ব্ল্যাক হোলের অজানা জগতের খবরাখবর আমাদের কাছে এত দিন বয়ে আনত মহাকর্ষীয় তরঙ্গই। যার আবিষ্কার হয় ২০১৬-য়। এই তরঙ্গই আপাতত ব্ল্যাক হোলের এক ও একমাত্র বার্তাবাহক। আমাদের কাছে।
এ বারও দু’টি ছোট ব্ল্যাক হোলের মধ্যে সংঘর্ষে একটি বড় ব্ল্যাক হোল জন্মানোর সময় মহাকর্ষীয় তরঙ্গ তৈরি হয়েছে। সঙ্গে দেখা গিয়েছে এই আলোর ঝিলিকও। ঘটনাটির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘জিডব্লিউ১৯০৫২১জি’।
এই ঘটনা ঘটল কী ভাবে?
গবেষকদের ব্যাখ্যা, ছোট দু’টি ব্ল্যাক হোল একে অন্যের চার দিকে ঘুরতে ঘুরতে উত্তরোত্তর নিজেদের কাছে এসে পড়ছিল। একই সঙ্গে দু’টি ব্ল্যাক হোল আবার ঘুরছিল একটি সুপারম্যাসিভ বা দানবাকৃতি ব্ল্যাক হোলেরও (সূর্যের চেয়ে কয়েকশো কোটি গুণ ভারী) চার দিকে। সেই দানবাকৃতি ব্ল্যাক হোলের চার দিকে ছিল গ্যাসের পুরু চাদর। যা ভরা অসংখ্য কণায়।
আরও পড়ুন- ছায়ার সঙ্গে কুস্তি করে এ বার মিলবে বিদ্যুৎ, খরচ সৌরবিদ্যুতের চেয়ে কম
আরও পড়ুন- ইসরোর প্রথম উদ্যোগ, দেবস্থলের নজর পড়বে মহাকাশের ধ্বংসাবশেষে!
ক্রমশই কাছে আসতে আসতে এক সময় দু’টি ছোট ব্ল্যাক হোল একে অন্যকে খুব জোরে ধাক্কা মারে। তার ফলে, তারা মিশে গিয়ে তৈরি করে বড় একটি ব্ল্যাক হোল। যার ভর মোটামুটি ভাবে ১০০টি সূর্যের সমান।
পালানোর জোশ ছিল না এই ব্ল্যাক হোলের
গবেষকরা মনে করছেন, নবজাতক ব্ল্যাক হোলটি এর পরেই কিছুটা দিগ্বিদিকশূন্য হয়ে চত্বর ছাড়ার চেষ্টা করে। পালাতে চায়। চায়, ‘যে দিকে মন যায়’ পালাতে! পারেনি। ভিটে ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার জোশ (‘এসকেপ ভেলোসিটি’, যে গতিবেগে অভিকর্ষ বলকে অগ্রাহ্য করা সম্ভব হয়) লাগে যে।
নৈনিতালের ‘আর্যভট্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ অবজারভেশনাল সায়েন্সেস (এরিস)’-এর অধ্যাপক ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, দু’টি ছোট ব্ল্যাক হোলের সংঘর্ষে তৈরি হওয়া বড় ব্ল্যাক হোলটি দানবাকৃতি ব্ল্যাক হোলের গ্যাসের পুরু চাদরটা ফুঁড়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। সেকেন্ডে ২০০ কিলোমিটার গতিবেগে। ফোঁড়ার সময়েই সেই পুরু গ্যাসের চাদরটার সঙ্গে নবজাতক বড় ব্ল্যাক হোলটির ধাক্কাধাক্কি হয়। তার ফলেই ওই আলোর ঝিলিক দেখা গিয়েছে।’’
ইন্দ্রনীল জানাচ্ছেন, এটা খুবই উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তবে কোনও গ্যালাক্সির কেন্দ্রে থাকা দানবাকৃতি ব্ল্যাক হোলের আশপাশে ছোট ছোট ব্ল্যাক হোলগুলি ঘুরতেই পারে। ঘুরতে ঘুরতে তারা মহাকর্ষীয় তরঙ্গও তৈরি করে। আবার দানবাকৃতি ব্ল্যাক হোলের আশপাশের গ্যাসের পুরু চাদরটাকেও নিজের দিকে টেনে এনে আলো তৈরি করতে পারে। কিছু দিন আগে দেখা গিয়েছিল, দু’টি নিউট্রন নক্ষত্রের মধ্যে সংঘর্ষে মহাকর্ষীয় তরঙ্গের পাশাপাশি আলোর ঝিলিকও বেরিয়ে আসে। জন্ম হয় তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গেরও। এ বার দেখা গেল, সেই আলোর ঝিলিক বেরিয়ে আসে এমনকী দু’টি ব্ল্যাক হোলের মধ্যে সংঘর্ষেও। অভূতপূর্ব। এই আলোর ঝিলিক কিন্তু দেখা গেল, ধাক্কাধাক্কি করা দু’টি ব্ল্যাক হোলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে কণা, পদার্থও ছিল বলে।
বেঙ্গালুরুর ‘রমন রিসার্চ ইনস্টিটিউট (আরআরআই)’-এর অধ্যাপক বিমান নাথ বলছেন, ‘‘ব্ল্যাক হোল থেকে আলোর ঝলক দেখা গিয়েছে, এই খবর আপাতদৃষ্টিতে আশ্চর্যজনক মনে হলেও বিজ্ঞানীরা কিন্তু এতে অবাক হননি। কারণ, এটা হতে পারে এমন তাত্ত্বিক পূর্বাভাস ছিলই। তাঁরা অনেক দিন ধরেই হাতে-কলমে তার প্রমাণ পেতে চাইছিলেন। ফলে, এই আবিষ্কার তাঁদের গবেষণায় নতুন রসদ জুগিয়েছে। ব্ল্যাক হোলের চার দিকে যে সব ঘটনা ঘটে সেই রহস্য এখন ধীরে ধীরে উন্মোচিত হওয়ার পথে।’’
কেন এই আলোর ঝলক?
বিমান জানাচ্ছেন, আসলে দু’টো ব্ল্যাক হোলের মধ্যে সংঘর্ষ হলে যখন মহাকর্ষীয় তরঙ্গ বিকিরিত হয়, তখন সেই তরঙ্গেরও ভরবেগ আছে বলে নবজাতক ব্ল্যাক হোলও ধাক্কা খায়। ক্রিয়া-বিক্রিয়া সংক্রান্ত নিউটনের তৃতীয় নিয়ম মেনেই এই ঘটনা ঘটে। আর তার ফলে সেই ব্ল্যাক হোলের চার পাশের গ্যাসও তার পিছন পিছন চলতে শুরু করে। এখানে সেই ছুটতে থাকা গ্যাসই দানবাকৃতি ব্ল্যাক হোলটির চার দিকে ঘুরতে থাকা গ্যাসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আলোর ঝলক তৈরি করেছে।
আলোর ঝলকের অন্য কোনও কারণ আছে কি?
‘‘বিজ্ঞানীরা তা নেই বলেই মনে করছেন’’, বলছেন বিমান। তাঁর বক্তব্য, এমনিতে প্রতিটি গ্যালাক্সিরই কেন্দ্রে যে দানবাকৃতি ব্ল্যাক হোল থাকে, সেখানেও যখন গ্যাস, কণা ও পদার্থ এসে পড়ে তখনও আলোর ঝলক দেখা যায়। তাতে গ্যালাক্সির আলো কমা-বাড়া করে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এ ক্ষেত্রে সেটা হচ্ছে না ততটা। ফলে, তাঁরা মনে করছেন, সেই সম্ভাবনা খুবই কম।
বিমান জানাচ্ছেন, সুপারনোভার মতো নাক্ষত্রিক বিস্ফোরণের জন্য এই আলোর ঝলক কি না, বিজ্ঞানীরা সেটাও বুঝতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দেখেছেন, না, তা নয়। সুপারনোভার বিস্ফোরণের ঝলকানির নমুনা একেবারেই অন্য রকম। ফলে, সেই সম্ভাবনাও বাতিল করতে হয়েছে বিজ্ঞানীদের। তা হলে কি মহাকর্ষীয় লেন্স এই আলোর ঝলকের জন্য দায়ী? না। বিজ্ঞানীরা সেই সম্ভাবনাও বাতিল করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।
আবার ফিরে আসবে সে
বিজ্ঞানীদের একাংশ অবশ্য মনে করছেন, এই ব্ল্যাক হোলটি আবার ফিরে আসবে।
ইন্দ্রনীলের কথায়, ‘‘যে গতিবেগ (সেকেন্ডে ২০০ কিলোমিটার) নিয়ে বড় ব্ল্যাক হোলটি গ্যাসের চাদর ফুঁড়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল, তা পালিয়ে যাওয়ার পক্ষে পর্যাপ্ত নয়। এসকেপ ভেলোসিটির চেয়ে কম। তাই বিজ্ঞানীদের অনুমান, ১৮ মাস পর ব্ল্যাক হোলটি ফিরে আসবে। তখন আবার ধাক্কা মারবে সেই গ্যাসের চাদরে। তার ফলে, আবার আলোর ঝিলিক দেখা যাবে। তখন মহাকর্ষীয় ও তড়িৎ-চুম্বকীয়, দু’ধরনের তরঙ্গ দিয়েই এই ব্ল্যাক হোলটির খবরাখবর জানার চেষ্টা চালানো সম্ভব হবে। যদিও ১৮ মাস পরে ফিরে আসবে কি না, এ ব্যাপারে এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যদি তা-ই হয়, তা হলে বিজ্ঞানীদের অনুমান সঠিক প্রমাণিত হবে।’’
তবে যতই নবজাতক ব্ল্যাক হোলটি বারে বারে ফিরে আসবে দানবাকৃতি ব্ল্যাক হোলের গ্যাসের চাদরটির কাছে, ততই কৌণিক গতিবেগ খুইয়ে সে আরও বেশি করে দানবাকৃতি ব্ল্যাক হোলের কাছে চলে যাবে।
আদত ঘটনা হল, তুলনায় অনেক ছোট (নবজাতক ব্ল্যাক হোল) কৃষ্ণগহ্বরটি যত বার প্রদক্ষিণ করবে দানবাকৃতি ব্ল্যাক হোলটিকে, ততই বেশি বেশি করে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ তৈরি হওয়ার জন্য তার কৌণিক ভরবেগ (‘অ্যাঙ্গুলার মোমেন্টাম’) কমবে। আর তখন দানবাকৃতি ব্ল্যাক হোলটিকে আরও ছোট কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করবে তুলনায় অনেক ছোট ব্ল্যাক হোলটি (এখানে নবজাতক)। তাতে সৃষ্ট মহাকর্ষীয় তরঙ্গের তীব্রতা আরও বাড়বে। আর দানবাকৃতি ব্ল্যাক হোলের অ্যাক্রিশন ডিস্কে থাকা গ্যাসের পুরু চাদরটার সঙ্গে নবজাতক কৃষ্ণগহ্বরের ধাক্কাধাক্কি লাগবে। তাতেই আলোর ঝিলিকের মতো তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গের জন্ম হবে।
ফলে, লাইগো ডিটেক্টর ও টেলিস্কোপের মাধ্যমে যথাক্রমে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ ও তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ, দু’ভাবেই ব্ল্যাক হোলটিকে দেখার সুযোগ আমাদের আরও বাড়বে।
গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
ছবি সৌজন্যে: নাসা।
ভিডিয়ো সৌজন্যে: ‘নেচার ’ জার্নাল।