—ফাইল চিত্র।
চাঁদের দেশে কি আদৌ ঘুম ভাঙবে বিক্রম-প্রজ্ঞানের? এই অসাধ্যসাধন করতেই এখন মুখিয়ে রয়েছেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর বিজ্ঞানীরা। চাঁদে আবার রাত শুরু হয়েছে। এই সময় চাঁদে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নেমে যায়। প্রবল ঠান্ডায় অকেজো হয়ে যেতে পারে যন্ত্র। তাই চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান আর কাজ করবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। তবে বিক্রম-প্রজ্ঞানের ঘুম ভাঙাতে চেষ্টার কসুর করছে না ইসরো।
গত ২৩ অগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামে ভারতের চন্দ্রযান-৩। এই প্রথম কোনও দেশের মহাকাশযান চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পদার্পণ করল। অবতরণের পর ল্যান্ডারের পেট থেকে বেরোয় রোভার প্রজ্ঞান। ছ’চাকাবিশিষ্ট এই যন্ত্র চাঁদের মাটিতে ঘুরে বেড়িয়েছে এবং অনুসন্ধান চালিয়েছে। চাঁদে ১০০ মিটারেরও বেশি পথ অতিক্রম করেছে প্রজ্ঞান। তার সংগৃহীত যাবতীয় তথ্য বিক্রমের মাধ্যমে পৃথিবীতে এসে পৌঁছেছে। কিন্তু বিক্রম আর প্রজ্ঞানের পৃথিবীতে ফেরা হবে না।
চাঁদে এক চন্দ্রদিবস বা ১৪ দিনের কর্মসূচি নিয়ে গিয়েছিল ইসরোর চন্দ্রযান-৩। তাদের অনুসন্ধানে অনেক অজানা তথ্য বিজ্ঞানীদের হাতে এসেছে। অবতরণের পর ১৪ দিন ধরে চাঁদের মাটিতে ঘুরে বেরিয়েছে প্রজ্ঞান। তার পরই চাঁদে রাত নামে। তার আগেই ঘুম পাড়ানো হয়েছিল বিক্রম এবং প্রজ্ঞানকে। কারণ তাদের শক্তির উৎস ছিল সূর্য। আশা করা হয়েছিল, আবার ভোর হলে সূর্যের আলোয় যন্ত্রগুলিকে জাগিয়ে তোলা যাবে। সে ক্ষেত্রে বিক্রম, প্রজ্ঞান চাঁদে তাদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে পারে।
কিন্তু চাঁদে দ্বিতীয় বার ভোর হওয়ার পর এই যন্ত্রগুলির সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি। অনেক চেষ্টা করেও বিক্রম বা প্রজ্ঞানের থেকে কোনও সাড়া মেলেনি। রাতে চাঁদের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ২৫০ ডিগ্রি নীচে নেমে যায়। এই তীব্র শীত চন্দ্রযান-৩ সহ্য করতে পারেনি। আবার চাঁদে রাত নেমেছে। ফলে বিক্রম-প্রজ্ঞানের ঘুম ভাঙানো ইসরোর কাছে চ্যালেঞ্জের মতোই। বিজ্ঞানীদের ধারণা, বিক্রম-প্রজ্ঞানকে নতুন করে জাগানোর আশা ক্ষীণ। তবে হাল ছাড়তে রাজি নয় ইসরো। জানা গিয়েছে, চাঁদের মাটিতে যাতে প্রজ্ঞান এবং বিক্রমের ঘুম ভাঙে, তার জন্য যাবতীয় চেষ্টা চালাচ্ছে ইসরো।