গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক আবার সংবাদের শিরোনামে চলে এল। কোনও তাৎপর্যপূর্ণ আবিষ্কার বা উদ্ভাবনের জন্য নয়। একটি নতুন প্রকল্প ঘোষণার খবর নিয়ে। যার নাম- ‘সূত্র’।
যার লক্ষ্য, অন্যান্য দেশের গরুর থেকে ভারতের গরু কেন আলাদা, কোথায় তার স্বাতন্ত্র্য, নিজস্বতা, তার অনুসন্ধান করা।
বিজ্ঞান মন্ত্রকের প্রকল্পে কেন ক্ষুব্ধ বিজ্ঞানীদের একাংশ?
কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের এই নতুন প্রকল্পে দেশের বিজ্ঞানীদের একটি বড় অংশ হতাশ তো বটেই, অত্যন্ত অসন্তুষ্টও। তাঁদের ক্ষোভ, অসন্তোষের কারণ, এই প্রকল্পটি কোনও নিয়মিত বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ডের উপর ভিত্তি করে নয়। বরং তাঁর ভিতটা মূলত বিশ্বাসের উপরেই তৈরি। যা বিজ্ঞানসম্মত যুক্তিধারার পরিপন্থী।
বিজ্ঞানীদের ক্ষোভের অন্য কারণ, কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের সচিব দেশের এক জন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী। যাঁকে বিজ্ঞানী হিসেবে অনেকেই শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু দুঃখের হলেও সত্যি, তিনিও এই প্রকল্পে জড়িত। এক জন শ্রদ্ধেয় বিজ্ঞানীর তত্ত্বাবধানে কী ভাবে এই প্রকল্প গৃহীত হল, তা নিয়ে দেশের বিজ্ঞানীদের একটি বড় অংশ বিস্মিত।
প্রতিবাদে চিঠি, রয়েছে ভিন্ন সুরও
কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের ‘সূত্র’ প্রকল্প চালুর পরিকল্পনার প্রতিবাদ জানিয়ে ইতিমধ্যেই একটি চিঠি লেখা হয়েছে, যাতে স্বাক্ষর করেছেন বহু বিজ্ঞানী। ফলে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের এই প্রকল্প নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশ জুড়ে আলোড়ন হয়েছে।
তবে ভিন্ন মতাবলম্বীরা যে একেবারেই নেই, তা কিন্তু নয়। আমি তাঁদের কথা বলছি না, যাঁরা বিশ্বাস করেন, গরুর দুধ থেকে সোনা বের করে আনা যায়। অথবা যাঁরা বিশ্বাস করেন, গোমূত্র থেকে অলৌকিক ভাবে বিভিন্ন রোগের নিরাময় হয়।
ভুল প্রমাণের জন্য অপেক্ষা করতে চান কেউ কেউ
আমি যুক্তিবাদী মানুষের কথা বলছি। যাঁদের একাংশ এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে সরাসরি সমর্থন না করলেও, তার বিরোধিতাতেও আপত্তি জানিয়েছেন।
তাঁদের বক্তব্য মূলত দু’টি। যেগুলিকে তাঁদের ‘যুক্তি’ও বলতে পারেন।
এক, কোনও প্রকল্পের লক্ষ্য যদি কিছু অধ্যয়ন করা হয়, তা হলে তা যতই অবৈজ্ঞানিক মনে হোক না কেন, যত ক্ষণ না সেটি ভুল প্রমাণিত হয়, তার বিরোধিতা করা সুকৌশল নয়। বরং অধ্যয়নের পরে সেটি ভুল প্রমাণিত হলে, তখন তার সমালোচনা করা ভাল। সেটাই শ্রেয়।
আরও পড়ুন- প্রলয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ব্রহ্মাণ্ডে, তৈরি হল ১০০ কোটি সৌরমণ্ডলের আকারের গর্ত!
আরও পড়ুন- পরিচয়ভেদে মস্তিষ্কের নির্দেশে বদলে যায় গলার স্বর, দেখালেন বেহালার ভীষ্মদেব
দুই, আমরা এখন যে ভাবে মূল ধারার বিজ্ঞান (ফান্ডামেন্টাল সায়েন্স) অনুশীলন করি, তাতেই অনেক ভুলত্রুটি রয়েছে। আর সেগুলি এই জাতীয় প্রকল্পের থেকে খুব আলাদা নয়। তাই এখনই এই প্রকল্পের বিরোধিতা করাটা সমীচীন হবে না।
ছদ্ম-বিজ্ঞানের ঠেলা পরে বুঝতে হবে না তো?
প্রথম আপত্তিটির উত্তর সহজেই দেওয়া যায়। অনেকে তার উত্তর ইতিমধ্যেই দিয়েছেন। ছদ্ম-বিজ্ঞানকে (সিউডো-সায়েন্স) অনায়াসে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ দেওয়া হলে, সমাজের প্রভূত ক্ষতি করার আগে বৈজ্ঞানিক ভাবে তার মোকাবিলা করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। বিজ্ঞানীদের পক্ষে সেই কাজটা আরও কঠিন হয়ে যায় যখন সেই ছদ্ম-বিজ্ঞান বা তার প্রসারের চেষ্টা রাষ্ট্র থেকে আদর্শগত পৃষ্ঠপোষকতা পায়।
ভারতের গর্ব। পুণের জায়ান্ট মিটার ওয়েভ রেডিও টেলিস্কোপ (জিএমআরটি)।
আমরা সকলেই জানি, ছদ্ম-বিজ্ঞানের বেঁচে থাকার জন্য, এমনকি পল্লবিত হয়ে ওঠার জন্য তার নিজস্ব একটা ‘সিস্টেম’ আছে। ট্রফিম লিসেঙ্কোর কথা মনে পড়ছে। ‘জেনেটিক্স’ নিয়ে লিসেঙ্কোর দেওয়া অবৈজ্ঞানিক তত্ত্বগুলির জন্য সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চাষব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আর তার ফলে, ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যায়।
সেই ভয়ঙ্কর সময়ের অন্ধকার থেকে সাবেক সোভিয়েতের জেনেটিক্স এবং জীববিজ্ঞানের গবেষণাকে উদ্ধার করতে বেশ কয়েক দশক সময় লেগেছিল।
খেসারত গুনতে হবে অনেক, দীর্ঘ দিন ধরে
তাই দেশের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকই যদি অবৈজ্ঞানিক নীতির ভিত্তিতে কোনও একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প চালু করে, তা হলে সেটি ভুল প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তা নিয়ে প্রশ্ন না তোলাটা হয়ে দাঁড়াবে একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক উদাসীনতা। যার খেসারত অনতিদূর ভবিষ্যতেই আমাদের দিতে হবে। আর সেই খেসারত গুনতে হবে একটা দীর্ঘ সময় ধরে।
দ্বিতীয় আপত্তিটি বরং অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটা নিয়ে একটু ভাবারও প্রয়োজন। ছদ্ম-বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে নিখুঁত ও দীর্ঘস্থায়ী হাতিয়ার হল, উন্নত মানের মূল ধারার বিজ্ঞানচর্চা আর তার নিয়মিত প্রয়োগ।
ছদ্ম-বিজ্ঞান তখনই সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায়, যখন মূল ধারার বিজ্ঞানের কিছু কিছু দিক ছদ্ম-বিজ্ঞানের মতো দেখতে লাগে।
সার্নের গবেষণাগারেই তো জন্ম ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের...
একটি নামী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আমার এক বন্ধুর কথা মনে পড়ছে। যিনি বলেছিলেন, ‘‘পদার্থবিজ্ঞানের বড় বড় গবেষণাগুলি থেকে প্রত্যক্ষ ভাবে সমাজের কোনও উপকার হয় না। অথচ, সেই সব গবেষণায় প্রচুর টাকা খরচ করা হয়।’’
আমি অবশ্য বন্ধুর এই বিশ্বাসের সঙ্গে সহমত নই। হতে পারিনি। পদার্থবিজ্ঞানের বড় বড় গবেষণাগুলি থেকে প্রত্যক্ষ ভাবে সমাজের কোনও উপকার হয় না, এটা আমি মানি না।
ইন্টারনেটের জন্মভূমি। জেনিভায় ‘সার্ন’-এর ভূগর্ভস্থ গবেষণাগার।
আজ ইন্টারনেট ছাড়া আমাদের একটা মুহূর্তও চলে না। আরপানেটের হাত ধরে ইন্টারনেটের জন্ম সাতের দশকে। আর বার্নার্স লি-র মাধ্যমে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের (www) মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সূচনা হয়েছিল সুইৎজারল্যান্ডের জেনিভায় ‘সার্ন’-এ, ‘হাই-এনার্জি ফিজিক্স’ নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম একটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা থেকেই। ১৯৮৯-এ।
তবে সেটা যদি সব সময় না-ও হয়, তা হলে বলতে হবে, সমাজ শুধুমাত্র সঙ্কীর্ণমনা হলেই প্রকৃতির রহস্য উন্মোচনে সেই সমাজ কোনও সামাজিক মূল্য খুঁজে পায় না।
আধুনিক ভারতে পদার্থবিজ্ঞানের বড় বড় গবেষণা ও পরীক্ষানিরীক্ষাগুলির কয়েকটি গৌরবময় উদাহরণ রয়েছে। যার মধ্যে প্রথমেই যে নামটি মনে আসে, সেটা হল, পুণের ‘জায়ান্ট মিটার ওয়েভ রেডিও টেলিস্কোপ (জিএমআরটি)’। বহু বিজ্ঞানীর দীর্ঘ দিনের কঠোর পরিশ্রমে বানানো বিশ্ব মানের এই টেলিস্কোপের মাধ্যমে যে কত অসাধ্য সাধন হয়েছে, উন্নত মানের কত গবেষণা হয়েছে, তার সবটুকু বলতে গেলে অনেক সময় লেগে যাবে।
‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র ভারতে বিদেশ থেকে আনা হচ্ছে টেলিস্কোপ!
কিন্তু হাওয়া যে এখন অন্য দিকে বইছে! বিজ্ঞানকে তাড়াতাড়ি একুশ শতকে নিয়ে যেতে আমরা প্রযুক্তির বিকাশের লক্ষ্য পরিত্যাগ করতে শুরু করেছি। এক সময়ে আমরা এই ভারতেই ২ মিটার ব্যাসের লেন্সের টেলিস্কোপ বানাতে পারতাম।
আর এখন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র জোরালো হাওয়া সত্ত্বেও শক্তিশালী টেলিস্কোপ বিদেশ থেকে কিনে এনেই খুশি থাকেন এ দেশের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
মহাকর্ষীয় তরঙ্গের যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় ২০১৬-য়। বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি-প্রকৌশলের এটি একটি অসাধারণ কীর্তি| এই আবিষ্কারের নোবেল-প্রাপ্তির পর আমাদের কারও কারও ধারণা হয়েছে, মহাকর্ষীয় তরঙ্গের পরের গুরুত্বপুর্ণ আবিষ্কারটি ভারতবর্ষ থেকেই হতে পারে। যেন হতেই হবে! যাতে আগামী দিনে মহাকর্ষীয় তরঙ্গের সূত্রেই ভারতের ঘরে আসে নোবেল পুরস্কার। তার জন্য বিদেশ থেকে অনেক দাম দিয়ে টেলিস্কোপ কিনে আনতেও পিছপা হচ্ছি না আমরা। পরবর্তী প্রজন্মের গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ টেলিস্কোপ আমরা বিদেশ থেকে কিনে আনছি ১২০০ কোটি টাকার বিনিময়ে।
কিন্তু যেটা ভুলে যাওয়া হচ্ছে, সেটা হল, নোবেল পুরস্কার আমাদের ভারতেও এসেছে। আর মহাকর্ষীয় তরঙ্গের ক্ষেত্রে যেমন, তেমন একই ভাবে ভারতে সেই নোবেল এসেছে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষার অসাধারণ কিছু ফলাফল এবং প্রযুক্তির জন্য। যা পরিমাপ বিজ্ঞানকে নির্ভুলতার এক নজিরবিহীন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে।
বিদেশ থেকে প্রযুক্তি কিনে এনে দেশে বসে শুধুমাত্র পর্যবেক্ষক এবং তাত্ত্বিক বিজ্ঞানীদের দিয়ে আমাদের বিজ্ঞানকে কি কোনও দিন বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করা যাবে?
কেন এত দিনেও হল না নিউট্রিনো অবজারভেটরি?
ছদ্ম-বিজ্ঞানের প্রতিবাদ করা যতটা আমাদের দায়িত্ব, এই প্রশ্নগুলো তোলার দায়িত্বও আমাদের ঠিক ততটাই। ‘ইন্ডিয়ান নিউট্রিনো অবজারভেটরি (আইএনও)’-র মতো একটি দেশীয় প্রকল্প, যা ভারতে অত্যন্ত উন্নত মানের কণাবিজ্ঞানের গবেষণার পরিবেশের বিকাশ ঘটাতে পারতো, রাজনৈতিক টানাপড়েনে তা দশকের পর দশক ধরে আটকে রয়েছে।
অধরা স্বপ্ন! আজও গড়ে উঠল না ইন্ডিয়ান নিউট্রিনো অবজারভেটরি। তামিলনাড়ুর থেনি জেলার সেই নির্বাচিত এলাকা।
তবে এই কথাগুলি যে শুধুই কণাপদার্থবিজ্ঞান এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, তা কিন্তু নয়। এ বারের কেন্দ্রীয় বাজেটে কোয়ান্টাম প্রযুক্তির জন্য মোট ৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এ তো হাতি পোষার খরচ!
কোয়ান্টাম কম্পিউটার নয়, দরকার প্যারাম্যাগনেটিক লবণ
এটা ঠিক, কোয়ান্টাম প্রযুক্তির গবেষণা যথেষ্টই সম্ভাবনাপূর্ণ। কিন্তু আমরা কি নিজেদের প্রশ্ন করেছি, আমাদের দেশের কোয়ান্টাম প্রযুক্তি গবেষকদের এই মুহূর্তে এই পরিমাণ অর্থ বিচক্ষণতার সঙ্গে খরচ করার ক্ষমতা আদৌ আছে কি না? নাকি আমরা বিভিন্ন গবেষণার বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরতদের শুধুই কোয়ান্টাম প্রযুক্তিবিদ্যা নিয়ে কাজ করার ভান করতে বাধ্য করছি?
এর পরিবর্তে যদি কেউ এখন প্যারাম্যাগনেটিক লবণের চৌম্বকীয় ধর্ম বা তাপগত বৈশিষ্ট্যের গবেষণা করেন, সেটা বরং অত্যন্ত উচ্চ মানের বিজ্ঞান গবেষণা হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু অত্যুৎসাহে সেটাকেই যদি ‘কোয়ান্টাম কম্পিউটিং’ বলে বাজারে চালানো হয়, তা হলে কি এ দেশের শিক্ষিতদের পদার্থবিজ্ঞানের অগ্রগতি নিয়ে বিভ্রান্ত করা হয় না?
সরকার ভুল জায়গায় অর্থ বরাদ্দ করছে
পাঠক, আমাকে ভুল বুঝবেন না। আমি এ কথা বলছি না, বিজ্ঞানের গবেষণায় আমাদের অর্থের প্রয়োজন নেই। বিজ্ঞানের গবেষণায় আমাদের সরকারি বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। এটা ঠিক, নয়ের দশকের শেষের দিকে এবং একুশ শতকেক প্রথম দশকে ভারতে বিজ্ঞানে সরকারি অর্থবরাদ্দ ও বিনিয়োগ অনেকটা বেড়েছিল। তার ফলে নতুন নতুন উচ্চ মানের অনেক গবেষণাগার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ভারতে। আমার অনেক তরুণ সহকর্মী সেই সব প্রতিষ্ঠানে চমৎকার গবেষণা করছেন। এক দশক আগে যখনই আমি কোনও জাতীয় সম্মেলনে যেতাম, বার বার পুরনো মুখগুলি দেখতে পেতাম। কিন্তু এ বছর আমি ইতিমধ্যেই ৫টি সম্মেলনে গিয়েছি। আর প্রত্যেকটিতেই নতুন নতুন গবেষকদের সঙ্গে আমার আলাপ, পরিচয় হয়েছে। এই তরুণ গবেষকদের গ্রুপগুলিকে আরও টাকা দিয়ে উৎসাহিত করা উচিত। এমন আরও অনেক গ্রুপ গড়ে তোলার পরিকাঠামো বানানো উচিত।
সোনার হরিণ! কোয়ান্টাম কম্পিউটার।
তড়িঘড়ি বিশ্বের চোখ টানতে আকর্ষণীয় বিষয়ে কাজের ভান করার পরিবর্তে যে কোনও ক্ষেত্রেই উন্নত মানের গবেষণাকে উৎসাহিত করাটাই সঠিক পথ হবে। কৌশলের দিক থেকেও তা অনেক ফলপ্রসূ হবে।
মানুষ কোয়ান্টাম কম্পিউটার চাইলে কী উত্তর দেবে সরকার?
আর সেটা না করে এ বার কেন্দ্রীয় বাজেটে কোয়ান্টাম প্রযুক্তির জন্য যে বিপুল অর্থবরাদ্দ করা হয়েছে, তাতে আর ১০ বছর পর মানুষ কোয়ান্টাম কম্পিউটারের চেয়ে ‘অল্প কিছু’তে আর সন্তুষ্ট হবে না! মানুষ শুধুই বলবে, ‘‘আমার কোয়ান্টাম কম্পিউটার কোথায়? কবে হাতে পাব কোয়ান্টাম কম্পিউটার?’’
আমরা উত্তর দিতে পারব তো?
বাস্তব যে বলছে, কোয়ান্টাম কম্পিউটার আগামী ৫০ কেন, ৮০ বছরেও ঘরে ঘরে পৌঁছবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্টই সংশয় রয়েছে!
লেখক মুম্বইয়ের ‘টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চে’র ‘ভাটনগর’ পুরস্কারজয়ী অধ্যাপক।
ফাইল ছবি।