‘মঙ্গলে’ বাস করবেন নভশ্চরেরা। ছবি সংগৃহীত।
ভিন্গ্রহে মানুষ পাঠানোর কাজ অনেক দিন থেকেই চলছে পৃথিবীর বিভিন্ন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার। চাঁদ নিয়ে আজও মহাকাশ বিজ্ঞানীদের উৎসাহের সীমা নেই। ইসরো থেকে নাসা— একে অপরকে টেক্কা দিতে নতুন নতুন গবেষণা চালাচ্ছে। তার মধ্যেই এ বার নাসার নতুন গবেষণা নিয়ে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে বিজ্ঞানী মহলে। চার জন নভশ্চর ‘মঙ্গলের মাটি’তে পা দিচ্ছেন!
চাঁদের মাটিতে মানুষ পৌঁছলেও মঙ্গলে এখনও কারও পা পড়েনি। স্বয়ংক্রিয় নভোযান পাঠিয়ে লাল গ্রহে গবেষণা চালাচ্ছে বিভিন্ন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। কিন্তু কেউই এখনও সেখানে মানুষ পাঠাতে পারেনি। নাসার চার নভশ্চর এ বার মঙ্গল ‘পাড়ি’ দিতে চলেছেন। টানা ৪৫ দিন সেখানেই থাকবেন তাঁরা। আগামী ১০ মে থেকে মঙ্গল গ্রহে থাকা শুরু করবেন জেসন লি, স্টেফানি নাভারো, পিয়ুমি উইজেসেকারা এবং শরিফ আল রোমাইথি। আবার ২৪ জুন ‘পৃথিবী’তে ফিরে আসবেন তাঁরা!
এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে বিজ্ঞানী মহলেও। এত দিন যা অসম্ভব ছিল, সেটাই কি সম্ভব করতে চলেছে নাসা? মঙ্গলে কি থাকার উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে? আদতে মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর মতো কোনও ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে কী ভাবে এই মিশনকে বাস্তবায়িত করা হচ্ছে?
জানা গিয়েছে, মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর নিরীক্ষায় এক অভিনব পরিকল্পনা নিয়েছে আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। নাসা এক কৃত্রিম পরিবেশে গবেষণা চালানোর পরিকল্পনা করেছে। হাউস্টনে নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে মঙ্গলের আবহাওয়া, পরিবেশই কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হচ্ছে। সেই পরিবেশেই ৪৫ দিন কাটাবেন জেসনেরা। নাসা এই গবেষণার নাম দিয়েছে ‘হিউম্যান এক্সপ্লোরেশন রিসার্চ অ্যানালগ’ (এইচইআরএ)। এর আগেও এমন মিশন সম্পন্ন করেছে নাসা।
চার নভশ্চরের মধ্যে জেসন একজন গবেষক। কানেক্টিকাট বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত তিনি। স্টেফানি নাসার স্যাটেলাইট প্রোগামের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তা ছাড়া, তিনি সেনাবাহিনীতেও কাজ করেছেন। আবু ধাবির বাসিন্দা শরিফ পেশায় একজন বিমানচালক। এই পেশায় ১৬ বছরের বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। আর পিয়ুমি নাসারই একজন গবেষক।
মঙ্গলে স্বয়ংক্রিয় নভোযান পাঠিয়ে সেখানকার পরিবেশ, পরিস্থিতির উপর দীর্ঘ দিন গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। সে গ্রহ বসবাসের অনুকূল কি না, জল পাওয়া যায় কি না, জীবনধারণের পরিবেশ কতটা অনুকূল— সবই নিরীক্ষা করে দেখছেন তাঁরা। যদি কখনও পৃথিবী বাসের অযোগ্য হয়ে ওঠে, তবে মঙ্গলে থাকা যাবে কি না, তা-ও বিজ্ঞানীদের ভাবনায় রয়েছে। সেই সব চিন্তারই প্রতিফলন এই এইচইআরএ।