মঙ্গলের কক্ষপথের অনেকটা দূর থেকে লাল গ্রহের এই ছবি পাঠিয়েছে চিনা মহাকাশযান। ছবি সৌজন্যে: সিএনএসএ।
দৌড়টা শুরু হয়েছিল একই সময়ে। গত জুলাইয়ে। তবু প্রাথমিক ভাবে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-কে দৌড়ে পিছনে ফেলে দিল চিনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। মঙ্গলের কক্ষপথের বেশ কিছুটা দূর থেকে লাল গ্রহের দু’টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকার তাক লাগানো টাটকা ছবি পাঠিয়ে।
মঙ্গলের ভূপৃষ্ঠের সেই দু’টি এলাকার একটি- ‘স্কিয়াপ্যারেল্লি ক্রেটার’ (সুবিশাল গর্ত)। অন্যটি, গিরিখাতে ভরা এলাকা ‘ভ্যালেস মারিনেরিস’।
চিনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ)’ জানিয়েছে, তাদের পাঠানো মহাকাশযান ‘তিয়ানওয়েন-১’ লাল গ্রহের কক্ষপথের ২২ লক্ষ কিলোমিটার (বা, ১৪ লক্ষ মাইল) দূরত্বে থেকে মঙ্গলের ভূপৃষ্ঠের ‘স্কিয়াপ্যারেল্লি ক্রেটার’ (সুবিশাল গর্ত) আর গিরিখাতে ভরা এলাকা ‘ভ্যালেস মারিনেরিস’-এর একের পর এক তাকলাগানো ছবি পাঠিয়ে দিয়েছে। মাসখানেক আগে তোলা ছবিগুলি শুক্রবার প্রকাশ করেছে সিএনএসএ।
চিনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, তিয়ানওয়েন-১ মহাকাশযানটি এই মুহূর্তে মঙ্গলের কক্ষপথ থেকে রয়েছে ১১ লক্ষ কিলোমিটার দূরে। একটি ল্যান্ডার ও একটি রোভার নিয়ে ৫ টন ওজনের তিয়ানওয়েন-১ মহাকাশযান লাল গ্রহের কক্ষপথে ঢুকে পড়বে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি। আর আগামী মে মাসে তার লাল গ্রহের ‘ইউটোপিয়া’ এলাকায় পা ছোঁয়ানোর কথা।
সব কিছু ঠিকঠাক চললে অবশ্য তার ৩ মাস আগেই মঙ্গলে পা ছোঁয়াবে নাসার পাঠানো ‘পারসিভেরেন্স’ রোভার। ১৮ ফেব্রুয়ারি। দু’টিরই উৎক্ষেপণ হয়েছিল গত জুলাইয়ে।
তুলনায় অনেক পরে মহাকাশ অভিযান শুরু করেও আমেরিকা, সোভিয়েত ইউনিয়ন (এখন রাশিয়া), ভারত, জাপান, ইউরোপের দেশগুলিকে কিছুটা চমকে দিয়েই গত দশকে, ২০০৩ সালে মহাকাশে চিন মহাকাশচারী পাঠিয়ে দিতে পেরেছিল। ২০২২ সালে চিন পৃথিবীর কক্ষপথে তাদের স্পেস স্টেশনও গড়ে তুলতে চলেছে। যা আক্ষরিক অর্থেই আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন (আইএসএস)-এর পরিপূরক হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
কিন্তু মঙ্গল বরাবরই বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলির কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে থেকেছে। হয়ে রয়েছে। লাল গ্রহে পৌঁছনোর চেষ্টা আগেও করেছিল চিন। রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে। ২০১১-য়। ব্যর্থ হয়েছিল।
চাঁদেও ইতিমধ্যে দু’-দু’টি রোভার নামিয়েছে চিনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। একটি আবার চাঁদের অন্য পিঠে। যে দিকটা আমাদের চোখের বাইরে থেকে যায় সব সময়ই।