বিক্রম। ছবি- ইসরোর সৌজন্যে
চাঁদের পিঠে আছড়ে পড়লেও ‘চন্দ্রযান-২’-এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়নি। এমনকি, দু’টুকরোও হয়নি। সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (পিটিআই)-কে সোমবার এ কথা জানিয়েছেন ইসরোর এক পদস্থ কর্তা, যিনি ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রাভিযানের সঙ্গে জড়িত।
ইসরোর ওই কর্তা এ দিন বলেছেন, “অরবিটারে থাকা ক্যামেরা যে ছবি তুলে পাঠিয়েছে, তা দেখে বোঝা যাচ্ছে চাঁদের পিঠে নেমে পড়ার সময় কিছুটা দ্রুতই অবতরণ করেছিল বিক্রম। গত ৭ সেপ্টেম্বর, রাত ১টা ৫২ মিনিটে। তবে তার পরেও মনে হচ্ছে, ল্যান্ডার অক্ষতই রয়েছে। সেটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়নি। দু’টুকরোও হয়নি। তবে বিক্রম চাঁদের পিঠে কিছুটা হেলে পড়ে রয়েছে।” তিনি এও জানিয়েছেন, ল্যান্ডারের সঙ্গে ফের যোগাযোগ গড়ে তোলা যায় কি না, আমরা তার জন্য সব রকম ভাবে চেষ্টা চালাচ্ছি।”
গত ৭ সেপ্টেম্বর চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ২.১ কিলোমিটার উপরে থাকার সময় হঠাৎই চন্দ্রযান-২-এর অরবিটারের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
চন্দ্রযান-২-এর মধ্যে রয়েছে, অরবিটার, ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান। ল্যান্ডার এবং রোভারের আয়ু এক চান্দ্রদিবস বা পৃথিবীর ১৪টি দিন।
শনিবার ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবন জানান, ১৪ দিন ধরে ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালানো হবে। রবিবার, চাঁদের মাটিতে অরবিটারের ক্যামেরায় ল্যান্ডারের ছবি দেখতে পাওয়ার পর সেটি আবারও মনে করিয়ে দেন তিনি।
আরও পড়ুন- একটা সাফল্যের পিছনে অজস্র ব্যর্থতা! বিজ্ঞানের ইতিহাসই তো ইসরোর সম্বল
আরও পড়ুন- কালামের জেদেই ভেঙে পড়েছিল ইসরো রোহিনী! ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করেছিলেন এক বছরের মধ্যেই
ইসরোর এক কর্তা অবশ্য এও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘যদি না বিক্রম অক্ষত থাকে, তা হলে তার সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলা খুবই কঠিন। সম্ভাবনা কম। যদি সেটি ধীরে ধীরে (সফ্ট ল্যান্ডিং) অবতরণ করতো আর যদি এখনও তার সবক’টি ব্যবস্থা সচল ও সক্রিয় থাকে, তা হলেই একমাত্র যোগাযোগ করা সম্ভব বিক্রমের সঙ্গে।”
ইসরোর আর এক কর্তা বলেছেন, ল্যান্ডারের জীবন ফিরে পাওয়ার যে আশা দেখা দিয়েছে, তা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
তাঁর কথায়, “তবে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। নিখোঁজ মহাকাশযান খুঁজে পাওয়ার অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। সেটা অবশ্য পৃথিবীর কক্ষপথে। তবে বিক্রমের ক্ষেত্রে সেই সুবিধাটা নেই। সেটি চন্দ্রপৃষ্ঠে পড়ে রয়েছে। হেলে রয়েছে। তার অবস্থান আমরা বদলাতে পারছি না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বিক্রমের অ্যান্টেনা থাকা উচিত গ্রাউন্ড স্টেশন বা অরবিটারের দিকে। হেলে পড়ার পরেও তা রয়েছে কি না, দেখতে হবে।’’