—প্রতীকী চিত্র।
মাত্র আঠারো মাস। ২০২৫ সালের মধ্যে পৃথিবীর আকাশ থেকে উধাও হয়ে যাবে শনির বলয়! জানাল আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
সূর্য থেকে দূরত্বের নিরিখে ষষ্ঠ গ্রহ শনি, যা বৃহস্পতির পর সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহও বটে। তবে একে সবচেয়ে আকর্ষণীয় করে তোলে এর বলয়। শনিতে মোট ৮২টি বলয় রয়েছে। মূল বলয় ৭টি। এই বলয়গুলি মূলত অসংখ্য বরফ কণা, পাথরের ভগ্নাংশ ও ধূলিকণা নিয়ে গঠিত। এগুলি আসলে ধূমকেতু, গ্রহাণু বা উপগ্রহের অংশবিশেষ। লক্ষ লক্ষ বছর আগে শনির কাছাকাছি এসে তার মাধ্যাকর্ষণের প্রবল টানে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল মহাজাগতিক পদার্থগুলি। এই বলয় কিন্তু চিরস্থায়ী নয়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আগেই জানিয়েছিলেন সে কথা। এর আয়ু খুব বেশি হলে ১০ কোটি বছর। ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছে বলয়। শনির বুকে আছড়ে পড়ছে বলয়ে ঘূর্ণায়মান পাথরখণ্ড।
কিন্তু ১০ কোটি বছর তো দূরের কথা, আর দেড় বছরের মধ্যে পৃথিবীর আকাশ থেকে উধাও হয়ে যাবে শনির বলয়! শনি-পৃষ্ঠ থেকে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার মাইল বিস্তৃত বলয়কে টেলিস্কোপে চোখে রাখলেই দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু ২০২৫-এ তা আর দৃশ্যমান হবে না। তবে সত্যি সত্যি এখনই গায়েব হয়ে যাবে না বলয়। সবটাই দৃষ্টিভ্রম। পৃথিবীর সাপেক্ষে ৯ ডিগ্রি কোণে আনত শনি। ২০২৪ সাল নাগাদ এই কোণটি কমে প্রায় ৩.৭ ডিগ্রি হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। এক বছর পরে, পৃথিবী থেকে দূরত্ব বাড়ার জন্য শনির অক্ষটি তার বর্তমান হেলানো অবস্থান থেকে একটি উল্লম্ব অবস্থানে পৌঁছবে, যা বলয়গুলিকে পৃথিবীর সমান্তরালে একটি পাতলা অনুভূমিক রেখার মতো করে দেবে। ফলে চোখের ভুলে বলয়গুলিকে প্রায় দেখাই যাবে না।
বিষয়টি সরলীকরণ করলে দাঁড়ায়, আমাদের চোখের সমান্তরালে একটি কাগজ ধরলে যেমন হবে, কাগজটিকে দেখাই যাবে না।
তবে এ-ও স্থায়ী হবে না। ফের দৃশ্যমান হবে শনির বলয়। গ্রহ ঘুরতে ঘুরতে তার বলয়ের অন্য দিক সামনে আসবে। ২০৩২ সালে পৃথিবীর সাপেক্ষে শনি ২৭ ডিগ্রি কোণে হেলে থাকবে। বলয় সবচেয়ে ভাল দেখতে পাওয়া যাবে ওই বছর। এর আগে ২০০৯ সালে উধাও
হয়ে গিয়েছিল শনির বলয়। তারও আগে ১৯৯৬ সালে।