ওই বিষাক্ত রাসায়নিকগুলি থাকে বাড়ি বা ফ্ল্যাটের দেওয়াল, মেঝে, ছাদে। থাকে মেঝেতে পাতা নতুন কার্পেটে। থাকে নতুন আসবাবেও। -ফাইল ছবি।
ঝকঝকে নতুন বাড়ি, ফ্ল্যাট তৈরি হয়ে যাওয়ার পর সেখানে ঢুকে পড়তে আর তর সইছে না তো? রঙিন কার্পেটে মুড়ে ফেলেছেন ঘরের মেঝেগুলি। ভাবছেন, কতক্ষণে তার উপর পা রাখবেন। মার্বেলের মেঝেও ঘষার পর কী ঝকঝক করছে! পা না ফেললে হয়! ঘরের দেওয়ালগুলির ডিসটেম্পার রং থেকে বেরিয়ে আসছে মনভোলানো সুগন্ধ।
এই সব দেখে কার না মন আনচান করে নতুন বাড়ি বা ফ্ল্যাটে চটজলদি ঢুকে পড়তে?
কিন্তু এ বার নিজেদের একটু সামলে নেওয়াই ভাল। নতুন বাড়ি বা ফ্ল্যাটে হুট করে ঢুকে পড়ার হাজারও সমস্যা আছে। বিষাক্ত রাসায়নিকের। যেগুলি আমাদের ফুসফুস, নাক, চোখ, শ্বাসনালির খুব ক্ষতি করে দিতে পারে বাকি জীবনের জন্য। এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা। নতুন বাড়ি বা ফ্ল্যাটে থাকা অন্তত ৫৫টি খুব বিষাক্ত রাসায়নিককে চিহ্নিত করেছে ওই গবেষণা।
আমেরিকার মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘জার্নাল অব হ্যাজার্ডাস মেটিরিয়ালস্’-এ। গবেষকরা ওই বিষাক্ত রাসায়নিকগুলির সন্ধান পেয়েছেন বাড়ি বা ফ্ল্যাটের দেওয়াল, মেঝে, ছাদ যে পদার্থগুলি দিয়ে বানানো হয় তাদের মধ্যে। পেয়েছেন মেঝেতে পাতা নতুন কার্পেটে। পেয়েছেন নতুন আসবাবেও। অন্য উপাদানগুলির সঙ্গে তাদের যে ন্যূনতম হারে থাকার কথা তার চেয়ে এক হাজার গুণ বেশি পরিমাণে।
বিজ্ঞানীরা যে বিষাক্ত রাসায়নিকগুলিকে অত্যধিক পরিমাণে থাকতে দেখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম ফরম্যালডিহাইড। যা ক্যানসার সহায়ক। যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়— ‘কার্সিনোজেন’। লিউকেমিয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ফরম্যালডিহাইডের। নতুন বাড়ি, ফ্ল্যাটের নতুন ঝকঝকে কাঠের আসবাবপত্রে এদের পরিমাণ হয় অস্বাভাবিক বেশি।
পাওয়া গিয়েছে ‘বিউটিলেটেড হাইড্রোক্সিঅ্যানিসোল (বিএইচএ)’। যা খুব বেশি পরিমাণে থাকে নতুন ঝকঝকে কার্পেটে। যে মাত্রায় থাকার কথা তার চেয়ে ৮০০ গুণ বেশি। এই রাসায়নিকটি আমাদের ফুসফুস ও শ্বাসনালীর পক্ষে খুব ক্ষতিকারক। নতুন কার্পেটে আরও একটি রাসায়নিক খুব বেশি পরিমাণে পেয়েছেন গবেষকরা। ‘হেক্সামিথিলিন ডাইআইসোসায়ানেট’। এটিও আমাদের ফুসফুস ও শ্বাসনালীর পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। ক্ষতি করে আমাদের চোখ, নাক ও গলারও।