পূর্ণ আয়োজনের লক্ষ্মীপুজোয় অপরাজিতা আঢ্য। এ বার অবশ্য সেই ছবি দেখা যাবে না। —ফাইল চিত্র।
টলিউডে লক্ষ্মীপুজো বললে তাঁর কথাই প্রথম মনে পড়ে। অথচ সেই তিনিই কিনা লক্ষ্মীপুজার আগে বসে আছেন মনখারাপ করে। দশমীতে সিঁদুর খেলেননি। সামনে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য প্রতি বছর লাল শাড়ি, সোনার গয়না, নাকে টানা নথ পরে পুজোয় বসেন। এ বছরও পুজো করবেন। তবে বিনা আড়ম্বরে। আনন্দবাজার অনলাইন কারণ জানতে চাওয়ায় অভিনেত্রী বললেন, ‘‘সময়টা ভাল নয়। সবারই মন খারাপ। বাড়িতে পুজো হবে। তবে এ বার আর বিশেষ আয়োজন করব না।’’
শহরেরই এক প্রান্তে মঞ্চ বেঁধে অনশন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। এই পরিস্থিতিতে অন্ন আর সমৃদ্ধির দেবীর আরাধনায় মন বসছে না অভিনেত্রীর। অপরাজিতা বললেন, ‘‘কোভিডের সময়েও খুব সামান্য আয়োজনে পুজো করেছিলাম। যে বছর আমার শ্বশুরমশাই মারা গেলেন সে বারও পুজো হয়েছিল বাহুল্যহীন ভাবে। এ বারও তাই করব। কাউকে নিমন্ত্রণ করব না। শুধু পরিবারের ক’জন থাকবেন।’’
পুজোয় ব্যস্ত অপরাজিতা। — ফাইল চিত্র।
তবে অপরাজিতার বাড়িতে ‘পরিবারের ক’জন’ মানেও অনেক! বাড়ির সদস্যই ১২ জন। তার সঙ্গে রয়েছেন ন’জন দেওর, জা এবং তাঁদের ছেলেমেয়েরা। সব মিলিয়ে জনা পঞ্চাশেক পরিবারের সদস্য থাকবেন পুজোয়। অপরাজিতা জানালেন, ‘‘সবার জন্য লক্ষ্মীর খিচুড়ি ভোগেরই আয়োজন থাকবে। সঙ্গে একটা লাবড়া, চাটনি আর পায়েস।’’ তবে এর পাশাপাশি অভিনেত্রীর বাড়ির পুজোর রীতি মেনে বিশেষ দুই মিষ্টিও থাকবে। যে মিষ্টি দেবী লক্ষ্মীর জন্য প্রতি বছর পরম আদর আর যত্নে বানান অপরাজিতা— এলোঝেলো আর ক্ষীরের নাড়ু। অপরাজিতা বললেন, ‘‘পুজো যখন হবে, দেবীকে ভোগও তো অর্পণ করতে হবে! পুজোর আয়োজনে ত্রুটি রাখলে তো চলবে না।’’ আনন্দবাজার অনলাইন অপরাজিতার কাছে জানতে চেয়েছিল তাঁর বাড়ির পুজোর দুই বিশেষ মিষ্টির রেসিপি। অপরাজিতা জানালেন ক্ষীরের নাড়ু আর এলোঝেলো বানানোর প্রণালী।
এলোঝেলো ছবি: সংগৃহীত
এলোঝোলো
এলোঝেলো ছাড়া পুজো হয় না অপরাজিতার বাড়িতে। অপরাজিতার কথায়, ‘‘এলোঝেলো বললে হয়তো অনেকেই বুঝবেন না। কিন্তু জিভেগজা বললে বুঝবেন। এলোঝেলো হল জিভেগজা।’’
কী ভাবে বানাবেন: লুচির মতো করে ময়দা মেখে নিতে হবে। তাতে কালো জিরে আর ময়ান মেশাতে হবে। এ বার ছোট ছোট লেচি কেটে একটু লম্বাটে লুচির মতো বেলে নিয়ে আধাআধি কেটে নিলেই প্রথম ধাপ তৈরি। এ বার ওই অর্ধেক লুচিগুলি প্রথমে ঘিয়ে ভেজে তুলে রসে ফেলে তুলে নিতে হবে। তা হলেই তৈরি এলোঝেলো।
ক্ষীরের নাড়ু। ছবি: সংগৃহীত
ক্ষীরের নাড়ু
বিভিন্ন ধরনের নাড়ু দেওয়া হয় অপরাজিতার বাড়ির পুজোয়। তিনি বলছেন, ‘‘লক্ষ্মীর ভোগে আমরা নানা রকম নাড়ু দিই। নাড়কেল নাড়ু, তিলের নাড়ু, মুড়ির নাড়ু তো থাকেই। তার সঙ্গে আমাদের বাড়িতে হয় ক্ষীরের নাড়ু।’’
কী ভাবে বানাবেন: ঘন দুধের সঙ্গে ক্ষোয়া ক্ষীর মেশাতে হবে। তার পরে ভাল করে মিশিয়ে দুধটাকে অনেক ক্ষণ ধরে মেরে নেওয়ার পরে শুকিয়ে এলে হাতে নিয়ে ছোট ছোট গোল পাকিয়ে নিন। অপরাজিতা বলছেন, ‘‘অনেকে এতে চিনি মেশান। কিন্তু আমরা মেশাই না। চিনি না মিশিয়েও খেতে ভাল লাগে।’’