Holi 2024

দোলেও জমিয়ে হোক পেটপুজো! হেঁশেলে অল্প সময়েই সুস্বাদু কী কী বানানো যায়, শেখালেন সুদীপা

দোলের দিন হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে কারও ভাল লাগে না। তবে উৎসবের দিনে ভালমন্দ খেতে তো সবারই মন চায়। চটজলদি কী ভাবে দোলের দিন ভূরিভোজের আয়োজন করবেন, তার হদিস দিলেন রন্ধনশিল্পী সুদীপা চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৪ ১২:০৫
Share:

সুদীপা চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

শহর জুড়ে রঙিন মেজাজ। দোল উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি তুঙ্গে। বিভিন্ন দোকান সেজে উঠেছে ভেষজ আবির, রং, পিচকারিতে। আর বাঙালির কাছে পার্বণ মানেই তো ভূরিভোজ মাস্ট! তাই রং খেলার পাশাপাশি পেটপুজোর বিষয় নিয়েও ভাবতে হবে বইকি। প্রতিটি উৎসবের দিনেই সঞ্চালিকা ও রন্ধনশিল্পী সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে ভূরিভোজের আয়োজন হয়। দূর্গাপুজোর সময় মাছ-মাংস হলেও দোলের দিন কিন্তু সুদীপার বাড়িতে আমিষ ঢোকে না। রাধামাধব এবং গোপালের জন্য ভোগে বানানো হয় চালের পায়েস। ঠাকুরের জন্য দেওয়া হয় ক্ষীরের মিষ্টি আর মালপোয়ার ভোগ।

Advertisement

বাড়িতে নয়, সুদীপা সপরিবারে দোল উদ্‌যাপন করেন তাঁর জামাইবাবুর ফার্ম হাউসে। সেখানেই হয় ভূরিভোজের আয়োজন। প্রতি বছর মেনুতে বিরিয়ানি থাকবেই। এ বারে কাচ্চি বিরিয়ানি বানানোর জন্য পাকিস্তান থেকে আসবেন রাঁধুনিরা। আনন্দবাজার অনলাইনকে সুদীপা বললেন, ‘‘আমাদের বাড়ির ছোট থেকে বড় সকলেই জমিয়ে দোল খেলে। বড়রা ভেষজ আবির দিয়ে দোল খেললেও ছোটরা বাঁদুরে রং নিয়েই মাতামাতি করে। বছরের ওই একটা দিনই কাচ্চি বিরিয়ানির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকি। পরিবারে সকলের সঙ্গে জমিয়ে রং খেলার পর কাচ্চির স্বাদ যেন আরও বেড়ে যায়।’’

দোলের দিন হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে কারও ভাল লাগে না। তবে উৎসবের দিনে ভালমন্দ খেতে তো সবারই মন চায়। চটজলদি কী ভাবে দোলের দিন ভূরিভোজের আয়োজন করবেন, তার হদিস দিলেন সুদীপা।

Advertisement

আমাদা নিয়েই বানিয়ে ফেলুন সুস্বাদু ডাল। ছবি: সংগৃহীত।

আমাদা দিয়ে মুগডাল:

কড়াইতে মুগডাল হালকা করে ভেজে নিন। এ বার কুকারে নুন, হলুদ ছাড়াই মুগডাল সেদ্ধ করে নিন। এ বার কড়াইয়ে তেল দিয়ে কয়েক দানা জিরে, কাঁচালঙ্কা, টোম্যাটো আর আমাদা বাটা দিয়ে কষিয়ে নিন। এ বার সেদ্ধ করা ডাল আর নুন-মিষ্টি দিয়ে ভাল করে ফুটিয়ে নিন। নামানোর আগে সামান্য ঘি দিয়ে গ্যাসের আঁচ বন্ধ করে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে সুস্বাদু মুগ ডাল। বাসমতি চালের ভাতের সঙ্গে এই ডাল আর আলু ভাজা থাকলে কিন্তু আর কিচ্ছু চাই না।

দোলের ভূরিভোজে পাঁঠার মাংস চাই-ই চাই। ছবি: সংগৃহীত।

সাদামাঠা মাংস:

পাঁঠার মাংস রান্না মানেই অনেকটা সময় ব্যয়। তবে দোলের দিন হেঁশেলে খুব বেশি সময় না কাটাতে চাইলে বানিয়ে ফেলতে পারেন সাদামাঠা মাংসের ঝোল। যতটা মাংস, তার অর্ধেক পরিমাণ পেঁয়াজ নিয়ে ভাল করে কুচিয়ে নিন। একটি পাত্রে সেই পেঁয়াজে সামান্য নুন মিশিয়ে খুব ভাল করে চটকে রস বার করে নিন। এ বার পেঁয়াজ মাখার মধ্যে মাংস নিয়ে তার মধ্যে এক এক করে হলুদ গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, নুন, কয়েক দানা চিনি আর সর্ষের তেল ভাল করে মাখিয়ে নিন। একটু সময় খরচ করেই মাখামাখির প্রক্রিয়াটি করতে হবে। এ বার মাংসের মধ্যে গোটা রসুন, আদা-রসুন বাটা, কাঁচালঙ্কা বাটা দিয়ে আবারও মাখতে হবে। রাতের বেলা এই প্রক্রিয়ায় মাংস মেখে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। পরের দিন দোল খেলতে যাওয়ার আগে প্রেশার কুকারে তেল দিয়ে তাতে গোটা গরমমশলা আর জিরে ফোড়ন দিয়ে মাংসটা ঢেলে সামান্য কষিয়ে নিন। এ বার পরিমাণ মতো জল দিয়ে কুকারে সেদ্ধ করে নিন মাংস। মাংস সেদ্ধ হয়ে এলে কুকারের ঢাকনা খুলে মিনিট পনেরো অপেক্ষা করুন। ঝোল বেশ মাখোমাখো হয়ে এলে সামান্য ঘি আর ধনেপাতার ডাঁটা কুচি ছড়িয়ে গ্যাসের আঁচ বন্ধ করে দিন।

ভূরিভোজের পর হজম করতে শেষ পাতে চাটনিটা কিন্তু রাখতেই হবে। ছবি: সংগৃহীত।

টক-ঝাল-মিষ্টি চাটনি:

জমিয়ে ভূরিভোজ করলেই তো আর হল না, পেটের কথাটাও ভাবতে হবে। দুপুরের ভোজের পর শেষপাতে তাই একটু চাটনি কিন্তু রাখতেই হয়। তেঁতুলের ক্বাথ বার করে রেখে দিন। এ বার সর্ষের তেলে সর্ষে, শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে টোম্যাটো কুচি দিয়ে দিন। স্বাদ বৃদ্ধির জন্য আমসত্ত্ব আর খেজুরও দিতে পারেন। এ বার সামান্য নুন আর শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে ভাল করে নাড়াচাড়া করে আঁচ কমিয়ে সামান্য জল দিয়ে ঢেকে রাখুন কিছু ক্ষণ। টোম্যাটো সেদ্ধ হয়ে গেলে নামানোর সময় তেঁতুলের ক্বাথ আর খেজুর কিংবা ভেলি গুড় দিয়ে দিন। গুড় পেট ঠান্ডা করে আর তেঁতুল কিন্তু হজমে সাহায্য করে। গুড়ের সঙ্গে সামান্য চিনি দিতে হবে। চাটনি মাখোমাখো হয়ে গেলেই আঁচ বন্ধ করে দিন।

ভাত, ডাল, মাংস আর চাটনির সঙ্গে দোলের ভূরিভোজ বেশ জমবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement