একঘেয়ে ডালের স্বাদ একবারে বদলে যেতে পারে তেলে ঠিকঠাক ফোড়ন পড়লে। ছবি- সংগৃহীত
রান্নার সূচনাই হয় ফোড়ন দিয়ে। কোনও কাজের শুরুটা যদি ভাল হয়, তা হলে বাকি কাজও সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়। রান্নার ক্ষেত্রে ফোড়ন তেমনই। একই ডালের স্বাদ-গন্ধ বদলে যায় ফোড়নের গুণে। ফোড়ন দিতে বেশি সময়ও লাগে না। কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার। তাই ফোড়ন দেওয়ার আগে বাকি উপকরণ তৈরি করে রাখা জরুরি। জিরে, ধনে বা মৌরি বেশি ভাজা হয়ে গেলে রান্নার স্বাদ খারাপ হয়ে যায়। ডাল রান্নার ক্ষেত্রে ফোড়ন একটা বড় অংশ। একঘেয়ে ডালের স্বাদ একবারে বদলে যেতে পারে তেলে ঠিকঠাক ফোড়ন পড়লে। তবে শুধু স্বাদ বদলাতে নয়, বিভিন্ন ধরনের ফোড়নের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন স্বাস্থ্যগুণও।
জিরে
২০-২১ গ্রাম জিরেতে ক্যালোরির পরিমাণ ৮। ওজন বশে রাখতে এই মশলা বেশ উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবারও থাকে। যা গ্যাস-অম্বলের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া শরীরের বিপাকহার উন্নত করতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও দারুণ উপকারী জিরে।
মৌরি
পাঁচফোড়নের এক ফোড়ন মৌরি হজমের অব্যর্থ ওষুধ। আয়রন, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, জিঙ্ক সমৃদ্ধ মৌরি স্নায়ুর রোগ সারাতে, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম।
হিং
হিং বিপাকক্রিয়া উন্নত করতে দারুণ সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের মহৌষধি হিং। শরীরের পাশাপাশি ত্বকের যত্নেও সমান উপকারী হিং। হিং ত্বক উজ্জ্বল করে তোলে। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে তা-ও নিয়ন্ত্রণে রাখে হিং।
কালো জিরে
স্বাস্থ্য থেকে ত্বক— যত্নে রাখে কালো জিরে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা সমাধানে এই মশলার জবাব নেই। কালোজিরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। রক্তচাপ বজায় রাখতে এবং রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে এই মশলা।
ফোড়ন তৈরি হতে বেশি সময়ও লাগে না। ছবি- সংগৃহীত
ডালের স্বাদে সকলের মন ভোলাতে জেনে নিন কোন ডালে কী ফোড়ন দেবেন—
মুসুর ডাল
ঘন মুসুর ডালের সঙ্গে, ঝুরি আলু ভাজা একেবারে যোগ্য সঙ্গত। তার জন্য ডালের স্বাদ ভাল হওয়া চাই। মুসুর ডাল স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় হয়ে উঠতে পারে রাঁধুনি আর কালো জিরে ফোড়ন দিলে।
মটর ডাল
গরমে মটর ডাল খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। তবে ফোড়নে যদি বৈচিত্র আনা যায়, বর্ষাতেও রাঁধলে মটর ডাল খেতে মন্দ লাগবে না। আদা বাটা, জিরে, কাজু, কিশমিশ ফোড়ন দিয়ে মটর ডাল রাঁধলে বেশ লাগবে। তবে ডালে যদি লাউ দিতে চান, সে ক্ষেত্রে সর্ষে ফোড়নও দিতে পারেন।
মুগের ডাল
অনেকেই সব্জি দিয়ে মুগ ডাল রান্না করেন। ভাজা মুগের ডাল রান্না করলে ফোড়ন হিসাবে দিন শুকনো লঙ্কা ও সাদা জিরে। দিতে পারেন আদা বাটাও। স্বাদ ভাল হবে।
অড়হড় ডাল
এই ডালে ফোড়ন হিসাবে দিতে পারেন সাদা জিরে। হিং, ধনে গুঁড়োও দিতে পারেন। ডাল হয়ে গেলে উপর থেকে একটু ধনেপাতা আর ঘি ছড়িয়ে দিলে জমে যাবে ভূরিভোজ।
বিউলির ডাল
আলু পোস্ত আর বিউলির ডাল— অনেক বাঙালিরই প্রিয় খাবার। বিউলির ডালের স্বাদ মুখে লেগে থাকবে তখনই, যখন ডাল রান্নার আগে আদা আর মৌরি ফোড়ন দেবেন।