চটপট রান্নাঘরের কাজ সারবেন কী করে ছবি: সংগৃহীত
রান্না করতে যতই কেউ ভালবাসুন না কেন, এই গরমে সারা দিন রান্নাঘরে কাটিয়ে দিতে কেউ-ই চান না। যত তাড়াতাড়ি রান্নার কাজ শেষ করা যায়, তত তাড়াতাড়ি ভ্যাপসা গরম থেকে মুক্তি। তাই এমন কিছু কৌশল যদি জানা থাকে, যাতে হাতের কাজ তাড়াতাড়ি মিটিয়ে ফেলা যায়, তা হলে মন্দ হয় না। আর পাশাপাশি যদি খরচও কিছু বাঁচানো যায়, তা হলে তো কথাই নেই! তাই চটপট জেনে নিন তেমনই কিছু ফন্দি।
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
১। বাজার করার সময়ে এমন পাঁচটা সব্জি কিনুন, যা আপনার ফ্রিজে থাকলে যে কোনও সময় খুব তাড়াতা়ড়ি যে কোনও ধরনের খাবার বানিয়ে ফেলা যায়। গাজর, বিনস, ক্যাপসিকাল, টমেটো, পেঁয়াজ এবং ব্রকলি বা ফুলকপি। আপনি আপনার পছন্দের সব্জিও বেছে নিতে পারেন। কিন্তু এমন সব্জি বাছতে হবে যা দিয়ে অনেক রকম খাবার চটজলদি বানাতে পারেন। ভেজিটেবিল পোলাও, চিড়ের পোলাও, উপমা, চিলা, যে কোনও ধরনের তরকারি বা স্ন্যাকসের জন্য বড়া কিংবা পকোড়া— সবই বানিয়ে ফেলতে পারবেন এই সব্জি দিয়ে। যদি দোসা বা উত্তাপম খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তা হলেও এই সব্জি থাকলে আরও স্বাস্থ্যকর করে তুলতে পারেন। যখন আমাদের মনে হয় বাইরে থেকে অর্ডার করে ফেলি, ঠিক সেই সময়ে হাতের কাছে এই সব্জিগুলি কাটা থাকলে অনেক রকম খাবার বানিয়ে ফেলা যায়।
২। কিছু সব্জি সপ্তাহান্তে কেটে একটি বায়ুবন্ধ শিশি বা কৌটে পুরে ফ্রিজে রেখে দিন। রান্নার সময়ে খুব তাড়াতাড়ি বার করে রান্না চাপিয়ে দিতে পারবেন।
৩। ফলের মধ্যে কলা বা শসা সব সময়ে কিনে রাখুন। টুকটাক খিদের মুখে সবচেয়ে বেশি উল্টোপাল্টা অর্ডার করে আমরা বেশি টাকা খরচ করে ফেলি। তার বদলে যদি শসা থাকে বাড়িতে তা হলে অনেকটাই মুশকিল আসান হয়ে যাবে। এমনি খেতে পারেন, স্যান্ডউইচ, স্যালাড, মুড়িমাখা— সবেতেই চলবে শসা। কলা বাড়িতে থাকলে খিদে পেলেই খেতে পারেন। অনেক ক্ষণ পেট ভর্তি থাকে এবং ক্লান্তির মুখে স্ফূর্তি পায় শরীর। পিনাট বাটার দিয়ে খেতে পারেন এমনি ভাল না লাগলে। ব্লেন্ড করে ফ্রিজে জমিয়ে রেখে দিলে পরে বার করে কিছু চকো চিপসের সঙ্গে খান। আপনার স্বাস্থ্যকর সুগার-ফ্রি আইসক্রিম নিমেষে তৈরি।
৪। রান্না করার সময়ে রান্নাঘরের বাকি জিনিস গুছিয়ে ফেলুন। রান্না চাপানোর পর কিছুটা সময় পাওয়া যায়। সে সময়ে এক বার হয়তো ওয়াশিং মেশিনে কাপড় দিয়ে দিলেন, তার পর এসে আবার রান্নাটা একটু নাড়লেন। এ ভাবে যদি প্রত্যেক ফাঁকে এক বার বাসন মেজে নেন, এক বার রান্নাঘরের তাক পরিষ্কার করে নেন, এক বার ধোয়া বাসন মুছে তাকে তুলে রাখেন, তা হলে কাজ অনেক তাড়াতাড়ি শেষ হবে।
৫। বাচ্চাদের খাওয়ার খুব ঝামেলা। বেশির ভাগ সময়ে তারা রঙিন প্যাকেটে মোড়া খাবার খেতে বেশি পছন্দ করে। এক-দু’বার দেওয়াও যায়। কিন্তু প্রত্যেকবার দেওয়া মানে তাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করা। তার চেয়ে বরং তাদের পছন্দের কিছু খাবার বানিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। যখন খাই-খাই করবে, তখন সেগুলি সাজিয়ে দিন।
৬। সপ্তাহান্তে যেমন কিছু সব্জি কেটে রাখবেন, তেমনই আরও কিছু রান্নার প্রস্তুতি এগিয়ে রাখতে পারেন। যেমন ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, পাতিলেবুর রস, নুন, লঙ্কা দিয়ে মিক্সারে মিশিয়ে নিয়ে চাটনি বানিয়ে রাখলেন। পরে দোসা, পরোটা, স্যান্ডউইচের সঙ্গে খেতে পারেন। এ ছাড়া আদা-রসুন বেটে রাখতে পারেন। টমেটো, পেঁয়াজ, হলুদ, লাল লঙ্কাগুঁড়ো, জিরেগুঁড়ো তেলে গরম করে নেঁড়েচেড়ে পেস্ট বানিয়ে তুলে নিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে ছোট ছোট জায়গায় ভরে ফ্রিজারে রেখে দিন। যে কোনও তরকারি রান্না করার সময়ে এই পেস্টটা ফ্রিজ থেকে বার করে ঢেলে রান্না করুন। তরকারি রান্নার সময় পুরো অর্ধেক হয়ে যাবে।