শহরবাসীর বদলে যাওয়া স্বাদের কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু রেস্তরাঁ ও ক্যাফে তাদের মেনুতে ‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’ রেখেছে। ছবি: সংগৃহীত।
কয়েক বছর আগেও ভোজনবিলাসী বাঙালির কাছে রবিবার মানেই ছিল ময়দার লুচি আর সাদা আলুর চচ্চড়ি! এখন অবশ্য বাঙালি আর লুচি-তরকারিতে আটকে নেই। কখনও কচুরি-জিলিপি, কখনও দক্ষিণী খাবার খায়, কখনও আবার চাইনিজ় ব্রেকফাস্ট করতে চলে যায় টেরিটি বাজারে! ছুটির দিনের শুরুটায় যদি ভালমন্দ খানাপিনা পাওয়া যায়, তা হলে সারা দিনের মেজাজটাই যেন চাঙ্গা হয়ে ওঠে! এরই মাঝে এমনও একটি দল আছে, যাদের ‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’ বড়ই পছন্দের। আর ‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’ মানেই বাঙালির চেনা গন্তব্য পার্ক স্ট্রিটের ফ্লুরিজ়! শীতের আমেজ পড়তে শুরু করেছে, সামনেই বড়দিন আর ইংরেজি নববর্ষ। পার্ক স্ট্রিট এলাকায় ভিড়ও বেড়েছে। শহরবাসীর বদলে যাওয়া স্বাদের কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু রেস্তরাঁ ও ক্যাফে তাদের মেনুতে ‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’ রেখেছে। পার্ক স্ট্রিটে না যেতে চাইলে স্বাদবদল করতে ঢুঁ মারতেই পারেন সেই সব ঠিকানাতেও।
শহরে কোথায় কোথায় ইংলিশ জলখাবারের স্বাদ নিতে পারবেন, রইল তার হদিস।
সল্টলেকের কাছেপিঠে থাকলে ‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’-এর এই ঠেকে এক বার ঢুঁ দিতেই পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
ক্যালকাটা ৬৪: সল্টলেক সেক্টর ওয়ানের এই ক্যাফেতে শনিবার ও রবিবার সকালে ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত মেলে ‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’-এর ঢালাও মেনু। সালামি, সসেজ, ফ্রায়েড এগ, হ্যাশ ব্রাউন, গ্রিলড টম্যাটো, বেক্ড বিন্স, টোস্ট আর পছন্দের পানীয় নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি গোটা প্ল্যাটার। দাম ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যেই। মন চাইলে ক্যাপুচিনো, পিনাকোলাডা মকটেল, ফার্স্ট ফ্লাশ দার্জিলিং চা-ও খেতে পারেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের স্যান্ডউইচ, অমলেট, টোস্ট তো আছেই। সল্টলেকের কাছেপিঠে থাকলে ‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’-এর এই ঠেকে এক বার ঢুঁ দিতেই পারেন।
খাঁটি ব্রিটিশ ব্রেকফাস্টের স্বাদ পাবেন এই ঠিকানায়। ছবি: সংগৃহীত।
দ্য আইরিশ ব্রিউয়ারি: খাস কলকাতায় বিলিতি খাবার চেখে দেখতে চান? তা হলে ঘুরে আসতে পারেন লেক মার্কেট অঞ্চলের ‘দ্য আইরিশ ব্রিউয়ারি’ থেকে। খাঁটি ব্রিটিশ ব্রেকফাস্টের স্বাদ পাবেন এই ঠিকানায়। টোস্ট, মরসুমি ফল, হ্যাশ ব্রাউন, বেক্ড বিন্স আর স্টাফড মাশরুম, চিকেন সসে়জ় আর চা, কফি, জুস পেয়ে যাবেন ৫০০ টাকার মধ্যেই। বাজেট যদি কম থাকে, তা হলেও পেয়ে যাবেন এগ বেনেডিক্ট অন ইংলিশ মাফিন, আইরিশ স্পেশ্যাল বকক্সি, যাতে পেয়ে যাবেন পোট্যাটো প্যানকেকের সঙ্গে পোচড এগ আর বেকন। চেখে দেখতে পারেন সেগুলিও। এক জনের জন্য খরচ পড়বে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা।
মন চাইলে দ্য বাইকার্স ক্যাফের ‘আমেরিকান ব্রেকফাস্ট’ প্ল্যাটারও চেখে দেখতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
দ্য বাইকার্স ক্যাফে: ভবানীপুর চত্বরের এই ক্যাফেতে সারা দিনই পাওয়া যায় ব্রেকফাস্ট মেনু। বিকেলেও ‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’-এর স্বাদ নিতে চাইলে যেতেই পারেন এই ঠিকানায়। সকাল ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা এবং বিকেল সাড়ে ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই ক্যাফেতে প্রাতরাশ পরিবেশন করা হয়। সানি সাইড আপ, বেক্ড বিন্স, প্যান টসড হার্ব মাশরুম, গ্রিলড টম্যাটো, সসেজ, বেকন আর টোস্ট পেয়ে যাবেন এই ক্যাফের ‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’ প্ল্যাটারে। খরচ পড়বে ৫০০ টাকা মতো। মন চাইলে এই কাফের ‘আমেরিকান ব্রেকফাস্ট’ প্ল্যাটারও চেখে দেখতে পারেন।
দক্ষিণ কলকাতার কলেজপড়ুয়া থেকে ষাটোর্ধ্ব অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ, সকলেই প্রাতরাশের আড্ডা জমাতে ভিড় করেন না-রু-মেগ ক্যাফেতে। ছবি: সংগৃহীত।
না-রু-মেগ: ফিউশন খাবারের জন্য বেশ পরিচিত লেক মার্কেট একালার ‘না-রু-মেগ’ ক্যাফে। তবে এই ক্যাফের প্রাতরাশের মেনুও বেশ ভাল। দক্ষিণ কলকাতার কলেজপড়ুয়া থেকে ষাটোর্ধ্ব অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ, সকলেই প্রাতরাশের আড্ডা জমাতে ভিড় করেন এই ক্যাফেতে। সারা বছর শনি ও রবিবার প্রাতরাশ পরিবেশন করা হলেও ডিসেম্বর মাস জুড়ে সপ্তাহের সাত দিনেই মিলবে ব্রেকফাস্ট মেনু। এদের ‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’ প্ল্যাটারে মিলবে এগ, গ্রিলড সসেজ, বেকন, হ্যাম, হ্যাশ ব্রাউন, বেক্ড বিন্স আর ফ্রেঞ্চ টোস্ট! একই ঠিকানায় কন্টিনেনটাল ও আমেরিকান প্রাতরাশও চেখে দেখার সুযোগ পাবেন।
দ্য গ্লেনবার্ন ক্যাফেতে ৪০০ টাকার মধ্যেই ‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’ পাওয়া যাবে। ছবি: সংগৃহীত।
দ্য গ্লেনবার্ন ক্যাফে: চৌরঙ্গির এই ক্যাফেতেও দিনের যে কোনও সময় গেলেই পাবেন প্রাতরাশের মেনু। ৪০০ টাকার মধ্যেই এখানে ‘ইংলিশ ব্রেকফাস্ট’ পাওয়া যাবে। মাশরুম, বেকন, সসেজের সঙ্গে টোস্ট, বেক্ড বিন্স, সবই থাকবে প্ল্যাটারে। সঙ্গে চা কিংবা কফি নিয়ে নিলেই সম্পূর্ণ হবে প্রাতরাশ।