জিভে জল আনবেই মাটন ডাকবাংলো। নিজস্ব চিত্র।
“চাওকিদার” গমগমে গলায় হাঁকডাক শুনে থতমত খেয়ে বাইরে এলেন ডাকবাংলোর পাহারাদার ওরফে রাঁধুনি ওরফে একমাত্র দেখভালের মানুষটি। শক্তি চট্টোপাধ্যায় কিংবা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখায় এরকম চৌকিদারের সঙ্গে বাঙালি বেশ পরিচিত।
কোভিড-এর ভয়ে চৌকিদারের ডাকবাংলো এখন অধরা তবে একটু চেষ্টা করলে বাড়িতেই বানিয়ে ফেলতে পারেন বোহেমিয়ান তরুণ দলের মনপসন্দ খানা মাটন ডাকবাংলো। তবে একটা প্রশ্ন আপনার মনেও বারংবার উঁকি দেয় নিশ্চয়ই। মাটনের সঙ্গে ডাকবাংলোর সম্পর্ক কীভাবে?
১৮৪০ সালে ব্রিটিশরা ভারতের নানা সুন্দর সুন্দর জায়গায় কিছু ডাকবাংলো তৈরি শুরু করেন। ভ্রমণ প্রিয় সাহেবরা সপরিবারে সেখানে গিয়ে প্রকৃতিকে উপভোগ করতেন আর জমিয়ে খানসামা কিংবা তাঁর স্ত্রীয়ের হাতের দেশি রান্না খেতেন কবজি ডুবিয়ে। মনে করা হয়, সেই থেকেই নাম। এই রান্নার সেই ট্র্যাডিশন চলেছে এখনও। করোনার ভয়ে ডাকবাংলোয় বেড়াতে যেতে না পারলেও খেতে তো মানা নেই।
লালচে ঘন ঝোলের মধ্যে ইয়াব্বড় টুকরো, পাশে সেদ্ধ হাঁসের ডিমের হাতছানি, ‘‘গুলি মারো কোলেস্টেরল বলে খেয়েই ফেলুন।’’
লালচে ঘন ঝোলের মধ্যে ইয়াব্বড় মাটনের টুকরো, পাশে হাঁসের ডিমের হাতছানি। নিজস্ব চিত্র।
মুখে দিলে মরিচ আর লঙ্কার ঝালের সঙ্গে এক অভাবনীয় আস্বাদ। মাটন ডাকবাংলো বাড়িতেও বানিয়ে নিতে পারেন । সব উপকরণ তো থাকবেই সঙ্গে মিশিয়ে দিন একটু ভালোবাসা। বর্ষণমুখর দিনে জমে যাবে।
উপকরণ
হাড় সহ মাটনের বড় টুকরো – ৮ টি,
টকদই – ২ বড় চামচ,
সাদা গোলমরিচ – ২ চামচ,
ছোট এলাচ, দারুচিনি ও লবঙ্গ – ৭ /৮ টি করে
স্টার অ্যানিস – ২ টি,
সাদা পেঁয়াজ – ৪টি,
আদা রসুন বাটা – ৪ বড় চামচ,
জিরে বাটা – ২ চামচ,
কাশ্মীরি লঙ্কা ও হলুদ বাটা – ৪ চামচ,
নুন, সামান্য চিনি,
টম্যাটো – ২টি,
সর্ষে তেল
হাঁসের ডিম সেদ্ধ – ৪ টি,
চারটে – গোটা শুকনো লঙ্কা
প্রণালী: মাংস ধুয়ে জল ঝরিয়ে দই, সাদা মরিচ ও নুন মাখিয়ে রাখুন। কড়াইয়ে তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি লালচে করে ভেজে নিয়ে সব মশলা দিয়ে কষে নিন। সামান্য চিনি দিলে লালচে রঙ আসবে। কষা হয়ে গেলে মাংস দিয়ে আরও খানিক্ষণ কষে নিয়ে গরম জল ঢালুন। ঢিমে আঁচে সেদ্ধ করতে দিন। ডিম সেদ্ধ সাজিয়ে গরম ভাত বা রুটি সহযোগে পরিবেশন করুন। প্রেসার কুকারে রান্না করতে পারেন, তবে কড়াইতে রাঁধলে স্বাদ ভাল হবে। শুকনো লঙ্কা তেলে ভেজে তুলে রাখুন। পরিবেশনের সময় ডিম ও ভাজা লঙ্কা সাজিয়ে দিন।