racism

দড়ি ধরে মারো টান

মূর্তি হবে খানখান। ইংল্যান্ডে দাস ব্যবসায়ী এডওয়ার্ড কোলস্টন বা বেলজিয়ামে রাজা দ্বিতীয় লিয়োপোল্ড, সকলেই ভাঙনের মুখে। ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ডালরিম্পলও রবার্ট ক্লাইভের মূর্তি সরানোর ডাক দিয়েছেন। দুনিয়া ফের জানাচ্ছে, শুধু শ্বেতাঙ্গ নয়, কালো, বাদামি সব জীবনই মূল্যবান। মূর্তি হবে খানখান। ইংল্যান্ডে দাস ব্যবসায়ী এডওয়ার্ড কোলস্টন বা বেলজিয়ামে রাজা দ্বিতীয় লিয়োপোল্ড, সকলেই ভাঙনের মুখে। ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ডালরিম্পলও রবার্ট ক্লাইভের মূর্তি সরানোর ডাক দিয়েছেন। দুনিয়া ফের জানাচ্ছে, শুধু শ্বেতাঙ্গ নয়, কালো, বাদামি সব জীবনই মূল্যবান। শিশির রায়

Advertisement

শিশির রায়

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২০ ০০:০২
Share:

জলাঞ্জলি: ব্রিস্টলে জলে ফেলে দেওয়া হচ্ছে সতেরো শতকের দাস ব্যবসায়ী এডওয়ার্ড কোলস্টনের মূর্তি। ছবি: এপি

লন্ডনে ‘ফরেন অফিস’-এর বাইরে, ডাউনিং স্ট্রিটের পিছন দিকে দাঁড়িয়ে আছে রবার্ট ক্লাইভের যে মূর্তিটা, তাকে নিয়েও এখন বিস্তর গন্ডগোল। আমেরিকা তো বটেই, ইউরোপের নানা দেশ এমনকি আফ্রিকার বিভিন্ন প্রান্তেও যখন ছড়িয়ে পড়েছে ‘বর্ণবিদ্বেষীদের উৎখাত করো’ (ইংরেজিতে ‘টপ্‌ল দ্য রেসিস্টস’) প্রচার অভিযানের ঢেউ, তা থেকে কি পলাশির যুদ্ধের নায়ক রক্ষা পাবেন? ভারতে অবশ্য কোনও হেলদোল নেই, খোদ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে ক্লাইভের একটা মূর্তি আছে, তা-ই বা ক’জন কলকাতাবাসী জানেন! তা ছাড়া, মিউজ়িয়ামে তো ও সব মূর্তি-টূর্তি থাকেই। আর কবেকার ইতিহাস বইয়ে পড়া এক ইংরেজ সাহেবের মূর্তি গেল কি রইল, তাতে কী যায় আসে। বিদ্যাসাগর-বিবেকানন্দ-রবীন্দ্রনাথ-নেতাজি হলে অন্য কথা!

Advertisement

এইখানেতেই গলদ, বলছেন উইলিয়াম ডালরিম্পল। নিজেদের গোড়া, বা অতীতকে ভুলে যাওয়া। বিলেতের কাগজে তিনি লিখছেন, ইংল্যান্ডের স্কুলে ইতিহাসের সিলেবাসে কী করে দেশটার ঔপনিবেশিক অতীতকে স্রেফ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। যেন ব্রিটিশ ‘রাজ’ বা সাম্রাজ্য বলে কিছু ছিল না, ভারত-সহ ব্রিটেনের উপনিবেশগুলোয় কিচ্ছু হয়নি, আল ইজ় ওয়েল। জার্মান বা নাৎসি ইতিহাসটা কিন্তু রগড়ে রগড়ে পড়ানো হয়। অথচ— ডালরিম্পল দেখাচ্ছেন— খোদ ক্লাইভের জীবনের শেষ অঙ্কে তিনি নিজের দেশেই চরম ঘৃণিত ছিলেন। একটা পলাশির যুদ্ধ জিতে, পরের দশ বছরে বাংলাকে এমন ভাবে লুট করে দলে পিষে নিংড়ে ছেড়েছিলেন, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পর্যন্ত ছিছিক্কার পড়ে গিয়েছিল। জানা যাচ্ছে, বাংলাকে ছিবড়ে করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যা পেয়েছিল তার অর্থমূল্য তেইশ কোটি কুড়ি লক্ষ পাউন্ড, ক্লাইভের নিজের ‘হক’ ছিল দু’কোটি কুড়ি লক্ষ পাউন্ড! আজ জানা যাচ্ছে, লোকটা ছিল সোশিয়োপ্যাথ, আর রেসিস্টও। এক দিকে প্রবল অ-সামাজিক, কারও সঙ্গে মিশতে বা কথা কইতে পারে না, এ দিকে বাইরে সব কিছু দুরমুশ করে দেওয়ার স্টিমরোলার চালাচ্ছে। ‘ওথেলো’ নাটকে শেক্সপিয়র এক কৃষ্ণাঙ্গ ‘মুর’ যুবককে নায়ক করেছিলেন, আর এ লোকটার কাছে ভারতীয় মাত্রেই কদাকার বর্বর। চিঠিতে লিখছেন, ‘কেলেকুচ্ছিতগুলো যে কী অলস, আরামপ্রিয়, মূর্খ, কাপুরুষ তা বলার নয়।’

পলাশির যুদ্ধের দশ বছরের মধ্যে দেশে ফেরা, তার বছর পাঁচেক পর পার্লামেন্টে উদ্যত ট্রায়ালের সামনে দাঁড়ানো, ১৭৭৪-এ আত্মহত্যা। চার বছর আগে বাংলায় দুর্ভিক্ষ হয়ে গেছে, দশ লাখ মানুষ না খেতে পেয়ে মরেছে, সেও এই লোকটা আর তার কোম্পানির শোষণেরই পরিণাম— সে তখন বিলেতে বসে থাকলেই বা। বিলিতি পত্রিকা ব্যঙ্গ করে লর্ড ক্লাইভকে বলেছিল ‘লর্ড ভালচার’। শকুন— ভারতীয়দের মৃতদেহ ঠুকরে খাচ্ছে। মৃত্যুর পর ক্লাইভের সমাধিটা ছিল পরিচয়হীন, ফলক বা লেখাজোখা কিচ্ছুটি ছিল না তাতে। আঠারোশো শতকের ইংল্যান্ড কল্পনাও করতে পারত না, দেশের মাটিতে এই বদ লোকটার মূর্তি বসছে। তা হলে মূর্তি এল কবে? বিশ শতকের গোড়ায়। উইলিয়াম ফারউড নামে এক ইংরেজ বণিক ও রাজনীতিক ক্যাম্পেন শুরু করলেন, ‘ক্লাইভ অব ইন্ডিয়া’-র নামে সৌধ, স্মারক গড়ি চলো। মূর্তি বসল। লর্ড কার্জন, বঙ্গভঙ্গের ‘কারিগর’, ক্লাইভের শতমুখ প্রশংসায় উদ্বেল হলেন। বাংলায় তাঁর উত্তরসূরি লর্ড মিন্টো কিন্তু প্রমাদ গুনে বলেছিলেন, ক্লাইভের মূর্তি বসানো আর কার্জনের প্রশংসা সাধারণ মানুষকে রাগিয়ে দেবে। সেই রাগই কি এই ২০২০ সালে ‘ক্লাইভের মূর্তি হঠাও’ স্বরে আছড়ে পড়ছে?

Advertisement

কালো মানুষ, বা ভারতীয়রা— ছোটলোক, ওদের ক্রীতদাস করে রাখো, পায়ের তলায় ঠেলো। এই যে দগদগে বর্ণবাদ বা জাতিবিদ্বেষ, সমসময় খুব সম্ভবত একে ‘রেসিজ়ম’ বলে চিনত না, বলছেন ইতিহাসবিদরা। মানে আমার গায়ের রং সাদা বলে যে আমি সর্বগুণান্বিত বিশ্বত্রাতা আর ওরা সব নোংরা কাদা, এই নির্বোধ বোধের সমর্থনে তত্ত্বের প্রয়োজন হত না। ওটা এমনি এমনিই হত। আফ্রিকান? তা হলে তো ক্রীতদাস। ভারতীয়? তার মানে তো ছোটলোক। এই ছিল সমাজের বিশ্বাস। যেমন এখন দাঁড়িয়েছে— মুসলমান? তা হলে তো জঙ্গি। তা সত্ত্বেও, ক্লাইভের ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক লোভ এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছিল যে ব্রিটিশরাও শিউরে উঠেছিল।

কিন্তু সবাই কি মুখে আর মনে এক ছিলেন? সব মানুষের সমানাধিকারবাদী ছিলেন? ক্লাইভ পার্লামেন্টের কাঠগড়ায় ওঠার কুড়ি বছর না যেতেই বাংলার প্রথম গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংসের ‘ইমপিচমেন্ট’ শুরু হয় ওই ব্রিটিশ পার্লামেন্টেই। ইমপিচমেন্ট কেন? কলকাতায় থাকাকালীন ভদ্রলোক ভয়ঙ্কর অব্যবস্থা আর ব্যক্তিগত দুর্নীতি শুরু করেছিলেন, সে জন্য। সেই এক গল্প— ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্রমাগত জাল ছড়ানো, আর একটা লোকের ক্রমশ বেড়ে চলা লোভ। বিচারে হেস্টিংসের প্রতিপক্ষ ছিলেন এডমন্ড বার্ক। সেই বিখ্যাত অ্যাংলো-আইরিশ বাগ্মী, রাজনীতিক ও দার্শনিক, ভারতে কোম্পানির শাসনে দুরমুশ হওয়া ভারতীয়দের প্রতি যাঁর সহানুভূতি অন্তহীন, আমেরিকায় ব্রিটিশ উপনিবেশগুলির উপর অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে যিনি সরব। শুনে মনে হবে, বাঃ, এত দরদি ব্রিটিশও ছিলেন তা হলে! ১৭৮৮-৯৫, সাত বছর ধরে চলা বিচারপর্বের শেষে হেস্টিংস বেকসুর খালাস পেয়েছিলেন সে অন্য কথা, কিন্তু আরও আশ্চর্য করে যে তথ্য— পাশের দেশে সেই সময়ে ঘটে যাওয়া ঐতিহাসিক ফরাসি বিপ্লবের প্রতি বার্কের সমর্থন ছিল না! পার্লামেন্টে ভাষণে তিনি এই জনজাগরণের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন! মনে হতে পারে, এ কি দ্বিচারিতা নয়? বার্ক আঠারো শতকের ভারতে ব্রিটিশের কাণ্ডকারখানার বিরোধী, কারণ তা ভারতের সনাতন সামাজিক কাঠামো ওলটপালট করে দিচ্ছে। আবার তিনি আমেরিকায় ব্রিটিশ কলোনিতে ভাল রকম পরিবর্তন চান, অন্য দিকে ফ্রান্সের বিপ্লব একেবারেই মানতে পারছেন না। অমর্ত্য সেন তাঁর ‘জাস্টিস’ গ্রন্থে দেখিয়েছেন, স্রেফ রক্ষণশীলতা আর প্রগতিশীলতার বাইনারিতে এডমন্ড বার্ককে বাঁধা যাবে না। ভারত, আমেরিকা বা ফ্রান্স, নানা জায়গায় ঘটে চলা নানা ঘটনার প্রতি তাঁর নানা মনোভাব। প্রশ্ন জাগে, ফরাসিরা কি তা হলে এখন বার্কের মূর্তির মুন্ডু চাইবেন? ভারতীয় বা আমেরিকানরা সেই মূর্তি ভাঙার বিরোধিতা করবেন? বা, আর একটু এগিয়ে— কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিনরা কী করবেন?

জোসেফ কনরাড-এর ‘হার্ট অব ডার্কনেস’ মনে পড়ে? টেমস নদীতে নোঙর করা এক নৌকোয় বসে স্মৃতিচারণ করছে কাহিনির নায়ক মার্লো। কঙ্গো নদী বেয়ে আফ্রিকার ওই একই নামের দেশে গিয়েছিল সে, কুর্টজ় নামের এক শ্বেতাঙ্গ ব্যবসায়ীর খোঁজে। সে এক রহস্যময় লোক— সাদা চামড়ার, কিন্তু কালোদের সঙ্গেই থাকে, ওদেরই এক জন হয়ে গিয়েছে। সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদের নিকষ কালো দিকটা দেখিয়ে একটা ফিরতি প্রত্যাঘাতের গল্প শুনিয়েছিলেন আদতে পোলিশ কনরাড। কল্পনা নয়, ঘোর বাস্তব ছেঁচে লেখা।

বেলজিয়ান এক সংস্থার জাহাজে কাজ নিয়ে সত্যিই কনরাড নিজে কঙ্গো নদী বেয়ে গিয়েছিলেন তখনকার ‘বেলজিয়ান কঙ্গো’য়! সেটা ১৮৯০ সাল, বেলজিয়ামে তখন রাজা দ্বিতীয় লিয়োপোল্ডের শাসন। ক্লাইভ বা হেস্টিংস তো অকুস্থলে থেকে অত্যাচার চালিয়েছেন, দ্বিতীয় লিয়োপোল্ড কোনও দিন কঙ্গোতে যানইনি! তাতে কী। ১৮৮৫-১৯০৮ সালের রাজত্বকালে এই রাজা কঙ্গোকে শেষ করে দিয়েছিলেন বললে অত্যুক্তি হয় না মোটেই। এক কোটি কঙ্গোবাসী মারা গিয়েছিল— রোগে, অনাহারে বা স্রেফ হত্যার শিকার হয়ে। হাত কেটে ফেলা, চাবকে মেরে ফেলা কোনও ব্যাপারই ছিল না সাদা বেলজিয়ানদের কাছে। কঙ্গোর রবার চাষের টাকায় গড়ে উঠেছিল বিশ শতকের সন্ধিক্ষণের বেলজিয়াম। রাজপ্রাসাদ, বিজয়তোরণ, রয়্যাল গ্রিনহাউস, দেশের উন্নয়নকাজ— সব ওই পয়সায়। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা লিয়োপোল্ড পেয়েছিলেন ‘বিল্ডার কিং’, রূপকার রাজার সম্মান। তাই ব্রাসেলস-সহ সারা দেশের পার্ক স্কোয়্যার আর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে যে তাঁর মূর্তি ও স্মারক ছড়িয়ে থাকবে, আশ্চর্য কী! ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের ঢেউয়ে এখন সেই সব কিছুর পঞ্চত্ব প্রাপ্তির জোগাড়। ৩০ জুন কঙ্গোর স্বাধীনতার ষাট বছর। আন্দোলনকারীরা আবেদন করেছেন, ওই তারিখের মধ্যে লিয়োপোল্ডের মূর্তি সরিয়ে ফেলুক প্রশাসন। বেলজিয়ামের কালো মানুষরা বলছেন, আমাদের পূর্বপুরুষদের মেরে ফেলেছিল যে, তাকে চোখের সামনে দেখতে চাই না।

রাজা রামমোহন রায়ের সূত্রে বাঙালি ইংল্যান্ডের একটা শহরের নাম জানে, ব্রিস্টল। সেই ব্রিস্টল, দু’সপ্তাহ আগে যে শহরে এডওয়ার্ড কোলস্টনের বিরাট ব্রোঞ্জমূর্তি উপড়ে জলে ফেলে দিয়েছেন প্রতিবাদী আন্দোলনকারীরা। সেই ব্রিস্টল, প্রায় দেড়শো বছরের দাসব্যবসার টাকায় যে শহরের সমৃদ্ধি ফুলেফেঁপে উঠেছিল। কোলস্টন সতেরো শতকের মানুষ, দাপুটে বণিক, পার্লামেন্টের সদস্যও ছিলেন। কিন্তু ইতিহাস অ্যাদ্দিন তাঁকে জানত ব্রিস্টলের ঘরের ছেলে হিসেবে, যে কিনা নিজের শহরকে নিজের টাকায় সুন্দর সাজিয়েগুছিয়ে দিয়েছে। নিজের টাকা মানে, ‘রয়্যাল আফ্রিকান কোম্পানি’-র ব্যবসার লাভের টাকা। কোলস্টনের কোম্পানির জাহাজ যেত আমেরিকায়, পথে আফ্রিকা থেকে তুলে নিত হাজার হাজার কালো মানুষকে। খোঁয়াড়ের মধ্যে যেমন থাকে গরুছাগল, তার থেকেও দুরবস্থায়, জাহাজের অন্ধকার অপরিসর খোলের মধ্যে তাদের পাড়ি দিতে হত সমুদ্র। ভয়ে, রোগ-অসুখে, না খেতে পেয়ে বা মারের চোটে মরে যেত কিছু, বাকিরা আমেরিকায় আখের খেতে, রাম তৈরির কারখানায় বিনিপয়সার শ্রমিক হিসেবে গতর খাটাত। সপ্তদশ শতকের শেষভাগ থেকে শুরু করে প্রায় দেড়শো বছর ধরে চলা দাস ব্যবসার লাভের গুড় খেয়েছে ব্রিস্টল। দাসপ্রথার অবসানে আইন হয় ১৮৩৩ সালে, যে বছর ব্রিস্টলে রামমোহনের মৃত্যু। বর্ণবাদের কিন্তু মৃত্যু হয়নি। এডওয়ার্ড কোলস্টনের মূর্তি বিদেয় হয়েছে শহর থেকে, তাঁর নামাঙ্কিত ব্রিস্টলের প্রাচীন মিউজ়িক হল-এর নাম বদলও হল বলে।

ক্লাইভ, কোলস্টন, লিয়োপোল্ড— মূর্তি উপড়ে ফেললেই কি ইতিহাস পাল্টে যাবে? ‘টপ্‌ল দ্য রেসিস্টস’ ওয়েবসাইট খুললে গুগল ম্যাপের মতো একটা মানচিত্র খুলছে, বর্ণবাদ আর ঔপনিবেশিক হিংসার বদগন্ধওলা মূর্তি বা সৌধের অবস্থান চিহ্নিত করা তাতে। কয়েকটা লাল হয়ে আছে, মানে অপারেশন সাকসেসফুল। লেখা আছে এই অভিযানের উদ্দেশ্যও— মূর্তি ভেঙে ফেলা নয়, বিতর্ক উস্কে দেওয়া। যা ছিল এত দিন ঔপনিবেশিক আইকন, সেগুলোর উপর অন্য আলো ফেলা। যে ইতিহাস গোপন রাখা হয়েছে, বা আধখামচা দেখানো হয়েছে, তাকে প্রকাশ্যে আনা। ডালরিম্পলের মতো অনেকে বলছেন, শহরের কেন্দ্র থেকে মূর্তি উঠিয়ে বরং মিউজ়িয়ামে রাখা হোক। এত দিন যে ফলকে কেবল একবগ্গা গৌরবগাথা লেখা ছিল, সেখানে লেখা হোক আসল সত্যিটাও— ওই লোকগুলোর অন্যায়, কুকীর্তির কথাও। পরের প্রজন্ম দেখুক, জানুক সে কথা। তা না হলে, মূর্তিগুলো স্রেফ ‘নেই’ হয়ে গেলে তো ইতিহাসও নেই হয়ে যাবে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement