ছবি: দীপঙ্কর ভৌমিক
জিনিয়াস মম্স’ গ্রুপটা আজ বরফের মতো ঠান্ডা। টুইটুই করা পাখিটা, যে অনর্গল শিস দিতে দিতে হোয়াটসঅ্যাপ চালাচালি করে এ মোবাইল থেকে ও মোবাইল, আজ নীরব। শেষ মেসেজ এসেছে কাল রাতে। সেখানে গ্রুপের এক সদস্য, শ্রী, হঠাৎ বেখাপ্পা ধরনের এক প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিল, ‘‘হাই ফ্রেন্ডস, এভরিথিং ওকে তো?’’
‘‘হঠাৎ?’’ পাল্টা প্রশ্ন করে নেহার মা।
‘‘জাস্ট এমনি। সবার ওয়েদার রিপোর্ট নিচ্ছিলাম।’’
আইভির মনে সন্দেহটা তখনই গুটলি পাকাতে শুরু করল। তা হলে কি ওদেরও ডাক পড়েছে?
‘হোলি মিশন’ স্কুলের জিনিয়াস মম্স-দের এই গ্রুপের প্রতি অনেকেই ঈর্ষান্বিত। এখানে সবাই নাকি ঘ্যামওয়ালি। নিজেদের প্রোফাইল নিয়ে বড্ড সচেতন।
এ সবে যদিও মাথা ঘামায় না আইভি। হুঁহ! এলেমদার ছাড়া কেউ এখানে এন্ট্রি পায় না, তাই গায়ের জ্বালা! রঞ্জাবতী যেমন নামী কলেজের অধ্যাপিকা। আজ এখানে কাল সেখানে পেপার পড়তে ছুটছে। অঙ্কিতা নামী শিল্পী, ওর হাতের রংতুলি কথা বলে। আর এলিনা! সে তো নামকরা বিজ়নেসওম্যান।
তুলনায় আইভি সামান্য খাটো। জাস্ট গ্র্যাজুয়েট, তবে অসামান্য রূপসি। আর ওর আসল ঐশ্বর্য, কথায়-বার্তায়। মোটামুটি সব বিষয়েই ভরপুর জ্ঞান। চটজলদি যে কোনও সমাধান বলে দিতে পারে।
পাখিটা শিস দিয়ে উঠল হঠাৎ। আইভি ছুটল মোবাইল দেখতে। ধুস! ‘শুভ সকাল’। এলেবেলে কেউ একটা পাঠিয়েছে। বিরক্তিকর!
বারান্দায় এসে দাঁড়ায় ও। সামনেই ‘মর্নিং গ্লোরি’, কিন্ডারগার্টেন স্কুল। এক ঝাঁক কচিকাঁচা লাইন দিয়ে হাঁটছে, সরোবরে সদ্য-ফোটা পদ্ম যেন। ওর ছেলে মিমোর এখন ক্লাস ওয়ান, কিন্তু বেশ বিজ্ঞ-বিজ্ঞ ভাব এর মধ্যেই। চিন্তাটা আবার মাথায় পাক খেল। হঠাৎ মিমোর স্কুল থেকে পেরেন্ট কল এল কেন?
অ্যাই, হুস, হুস। ইস! এক শালিক। শিয়োর কপালে আজ দুর্ভোগ নাচছে। আচ্ছা, পেরেন্ট কল লিস্টে অন্য কারও নাম আছে কি? মোবাইলটা হাতে নিয়ে খানিক চিন্তা করে আইভি। কাকে জিজ্ঞেস করা যায়? দূর! সবগুলোই তো টেঁটিয়া। মন-খুলে-কথা-বলা পাবলিক নয়। তবে অঙ্কিতা, শিল্পী মানুষ, একটু আলাদা ধাঁচের।
সঙ্গে-সঙ্গে তাকেই মেসেজ পাঠায়, ‘‘কী রে, আজ স্কুলে যাবি?’’
দু’মিনিটেই উত্তর হাজির, ‘‘না গিয়ে উপায়? বাবু কী করে এসেছেন, জোড়হাত করে শুনতে হবে তো!’’
‘‘আর কারও কোনও খবর?’’
উত্তরে দু’চোখের কান্না ঝরানো একটি ইমোজি পাঠায় অঙ্কিতা।
মিমোকে স্কুলের পোশাকে দেখলেই অশোকবাবুর যত বায়না। আজও রুটিনমাফিক প্রশ্নোত্তর, ‘‘স্কুল যাচ্ছ, মশাই?’’
‘‘হ্যাঁ, দাদু।’’ মিমো কোমরে বেল্ট পরতে বেজায় ব্যস্ত।
নাতিকে মশাই বলে ডাকেন অশোকবাবু। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, ‘‘কী মজা তোমার মশাই! দেখো আমি বেরতে পাচ্ছি না। কত দিন স্কুল কামাই!’’
‘‘সে কী! কেন?’’ বেল্ট বাঁধতে নাস্তানাবুদ মিমো। তবু কথা চালিয়ে যায়, ‘‘এত অ্যাবসেন্ট করলে তো শাস্তি পাবে!’’
খসখস করে দাড়ি চুলকোলেন মানুষটা। কী যেন ভেবে চলেন। তার পর বলেন, ‘‘ব্যাগটা কবে ছিঁড়ে গিয়েছে, ও ভাবে স্কুলে যাওয়া যায় বলো? বন্ধুরা খেপাবে না!’’
ওহ্! বেল্ট বাঁধা হল এত ক্ষণে। মিমো গাল ভরা হাসি মুখে, বলে, ‘‘নতুন ব্যাগ চাই? কী রঙের বলো, আমি কিনে দেব। লাল না হলুদ?’’
আইভির মাথা আজ ফোরফর্টি ভোল্ট। ছেলেকে তাড়া দিতে এসে কথাগুলো বুঝি কানে গিয়েছে। ব্যস, উগরে দিল রাগ। ‘‘থামবেন আপনি? যান, নিজের ঘরে!’’
তার স্বামীটি যে কখন পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে, খেয়ালই করেনি।
ধীরে ধীরে বাবার হাতদু’টো ধরে বিজন ভিতরের ঘরে চলে আসে। মুখে স্পষ্ট অসন্তোষ। সে দিকে তাকিয়েই জবাবদিহি করে আইভি, ‘‘মাথা ঠিক রাখা যায়? সকাল থেকেই শুরু হয় ওঁর কেত্তন। এর পর বিকেলে আর এক দফা। দুলালের রিকশা দেখলেই বায়না ধরবেন, আমি বেড়াতে যাব।’’
বিজন নিরুত্তর, বাবার পিঠের পিছনে হাত রেখে প্রায় জাপটেই ভিতরে চলে যায়। অশোকবাবু অ্যালঝাইমার্স রোগে আক্রান্ত। ধীরে-ধীরে রোগটা তাঁর সমস্ত স্মৃতিকে গ্রাস করছে। বর্তমানকে ভুলে এখন তিনি ছেলেবেলার অলিগলি ধরেই হাঁটতে বেশি ভালবাসেন। তবে ডাক্তার পইপই করে বুঝিয়েছেন, ‘‘এ সময় পরিজনদের অনেকখানি স্নেহশীল হওয়া প্রয়োজন।’’ তাই বিজন তার বাবার প্রতি যথাসম্ভব যত্নবান।
ওঁকে আলাদা করে সময় দেওয়ার সুযোগ নেই তার, পুলিশের চাকরি, যখন-তখন ডাক। তবে কয়েকটা কাজকে রুটিন বানিয়ে ফেলেছে। যেমন, সকালের কাগজ অশোকবাবুর পাশে বসেই পড়ে। ছোটবেলার টুকরো স্মৃতি ভেসে বেড়ায়, আর একটা ভাল লাগা ফিরে-ফিরে আসে।
‘‘শোনো, তোমার বাবার কাণ্ড!’’ গজগজানি এখনও অব্যাহত আইভির গলায়। হাতে একটা ট্রে, ওখানে দু’টো কাপ সাজানো, একটা লিকার চা আর একটা হেল্থ ড্রিঙ্ক।
নালিশ শোনার আগেই বিজন হেল্থ ড্রিঙ্কের কাপ তুলে নিয়ে চামচে করে বাবার মুখের সামনে ধরল, ‘‘হাঁ করো দেখি।’’
‘‘কাল মিমোর স্কেচ পেনের পুরো সেটটা ওর ব্যাগ থেকে সরিয়ে ফেলেছেন তোমার বাবা!’’ আইভি নাকের পাটা ফুলিয়ে বলে।
অশোকবাবু কোঁত করে হেল্থ ড্রিঙ্কটুকু গিলে ফেলতে গেলেন। কয়েক ফোঁটা ঠোঁট বেয়ে চোয়ালে নামল। কাঁচুমাচু মুখে বৌমাকে দেখছেন। কাঁপা গলায় বলেন, ‘‘কী করব? মাস্টারমশাই দেশের বাড়ির ছবি আঁকতে বলেছিল যে! কিন্তু মশাইয়ের বাক্সে নীল রং নেই, আকাশটা আঁকাই হল না।’’
রুমাল দিয়ে ঠোঁট, চিবুক মুছিয়ে বিজন ফ্যাকাশে হাসল। বিড়বিড় করে বলে, ‘‘তোমার স্বপ্নের আকাশটা এখন দূষণে কালো কুচকুচে, নীল রঙের আর দরকার হবে না বাবা।’’
*****
স্কুলে গিয়ে হতবাক আইভি। এ কী! জিনিয়াস মম্স গ্রুপের অনেকেই হাজির। লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, রীতিমতো নার্ভাস মুখ।
সময় যত গড়াচ্ছে, আইভির পেটে অদ্ভুত এক গুড়গুড়ানি শুরু হল। এক সময় লাইনে অবশিষ্ট আর মাত্র দু’জন। হঠাৎ মিমোকে দূরে সরিয়ে নিয়ে দাঁত চেপে ও জিজ্ঞাসা করে, ‘‘এখনও সত্যি বল, কী করেছিস স্কুলে?’’
বলতে-বলতেই দেখে, রঞ্জাবতী রুমালে ঘাড়-গলা মুছে প্রিন্সিপালের ঘরে ঢুকছে।
মিমো যেন আকাশ থেকে পড়ে, ‘‘সত্যি বলছি, কিচ্ছু করিনি।’’
‘‘তা হলে ডাকল কেন এখানে?’’
মিমো দু’হাত দু’দিকে ছড়ায়, ‘‘তা আমি কী জানি।’’
গা-পিত্তি জ্বলে গেল শুনে। তবে মিমো মোটেই অশান্ত বা অসভ্য নয়, একটু যা অন্যমনস্ক। মাঝে-মাঝে বোর্ডওয়র্ক টুকে আনে না।
রঞ্জাবতী বেরিয়ে এল এ বার। ছেলেকে হিড়হিড় করে টেনে-টেনে চলছে। সাহস করেই এগিয়ে যায় আইভি, ‘‘অ্যাই, কিছু বলে যা প্লিজ়! বড্ড টেনশন হচ্ছে।’’
রঞ্জাবতী সামান্য থমকায়। তার পর ফিসফিস করে, ‘‘এক দিন নাকি ক্লাসে একটা সারপ্রাইজ় টেস্ট নেওয়া হয়েছিল। বড় হয়ে কে কী হতে চাও।’’
‘‘ও মা, তাই! মিমো কিছু বলেনি তো!’’ অবাক হয় আইভি।
‘‘আমার ছেলে লিখেছে...’’ বলতে গিয়ে রঞ্জাবতী রুমাল চেপে ধরল নিজের চোখে। তার পরেই সামলে নেয় খানিক, ‘‘লিখেছে, ভবিষ্যতে ও এক জন ডন হতে চায়। বোঝ! পিস্তল, রাইফেল নিয়ে এক দেশ থেকে আর-এক দেশে ছুটে বেড়াবে। পুলিশ টিকিটিও ছুঁতে পারবে না। আর প্রায় প্রতিদিনই কাগজে-কাগজে ওর ছবি বেরবে, ঠিক যেমন ওর মায়ের বেরয়!’’
মাথাটা চক্কর দিল আইভির। শেষে ডন! মিমোকে ঝাঁকিয়ে আবার কিছু জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিল, কী মনে হতে চেপে গেল শেষ মুহূর্তে।
অঙ্কিতা ভিতরে ঢুকে গিয়েছে, এর পরই আইভির ডাক। কিন্তু এত সময় নিচ্ছে কেন ও? এক বার কি টয়লেটে ছুট্টে গিয়ে... আরে, ওই তো! হাত নেড়ে ডাকে আইভি, ‘‘অ্যাই অঙ্কিতা, দাঁড়া, দাঁড়া... বলে যা, তোর ছেলে কী লিখেছে!’’
অঙ্কিতার নিঃশব্দে একটা সাদা কাগজ উঁচু করে দেখাল। সেখানে শুধু কালো-কালো অসংখ্য রেখা।
‘‘ওগুলো কী?’’
অঙ্কিতা ফ্যাকাশে হাসল, ‘‘আমার ছেলে শিল্পী হতে চায়, এটা তার নিদর্শন। প্রিন্সিপাল হাতে ধরিয়ে দিলেন। ছেলের চোখে এই পৃথিবীটা নাকি শুধু কালো আর ধূসর রঙের স্তূপ। প্রিন্সিপাল তাই ঠেস দিয়ে বললেন, ‘নিজের আঁকাতেই আপনি এত মগ্ন, তাই সব রং বুঝি ওখানেই ঢেলে দিয়েছেন। ছেলের জন্য অবশিষ্ট রইল শুধু কালো!’ ’’ বলতে-বলতে অঙ্কিতা দম নিল, ‘‘ভাব এক বার, ইনডাইরেক্টলি কী রকম ইনসাল্ট!’’
ইতিমধ্যে মিমোর নাম দু’বার ডাকা হয়ে গিয়েছে। তড়িঘড়ি ছেলের হাত ধরে ও ভিতরে ঢুকে যায়। হ্যাঁচ্চো। আ মরণ! এখনই কে যেন হাঁচল। আর সময় পেল না!
ভিতরে ঢুকতেই প্রিন্সিপাল গম্ভীর মুখে মা ছেলেকে জরিপ করলেন। তার পর ওকেও একটা সাদা কাগজ বাড়িয়ে বললেন, ‘‘দেখুন, আপনার ছেলে ভবিষ্যতে কী হতে চায়?’’
জ্বোরো রোগীর মতো কাঁপতে-কাঁপতে পৃষ্ঠাটা নিল আইভি। একটা অক্ষরও পড়তে পারছে না কেন?
‘‘ছাড়ুন। আমিই বলছি। আপনার ছেলে বড় হয়ে এক জন রিকশাকাকু হতে চায়।’’
‘‘রি-রিকশাকাকু মানে?’’ আইভি তুতলে ওঠে।
‘‘রিকশাকাকু। আই থিংক হি মেন্ট আ রিকশ’পুলার।’’
মিমোর কাঁচুমাচু মুখ। এক বার মা-কে, এক বার প্রিন্সিপালকে দেখছে। উনি আবার গলা তুললেন, ‘স্যরি টু সে মিসেস চৌধুরী, ছেলের দিকে আপনারা নজর দিচ্ছেন না। নইলে এ ধরনের অ্যাম্বিশন!’’
আইভি মরিয়া, কিছু বোঝাতে চাইল। হঠাৎ ছোট্ট মিমো তার জড়সড় ভাব কাটিয়ে বলে, ‘‘রোজ বিকেলবেলা তো এক রিকশাকাকু দাঁড়ায় আমাদের বাড়ির সামনে। দাদু হাত নেড়ে ডাকে। রিকশাকাকু হেসে-হেসে বলে, ‘আজ বড্ড তাড়া গো বাবু। কাল তোমায় ঠিক নিয়ে যাব।’ তা এক দিন জিজ্ঞেস করলাম, কোথায় যাবে গো দাদু, তুমি? দাদু বলে, ‘আমার সবুজ হলুদ দেশে।’ ওখানে কী আছে? দাদু বলে, ‘আমার দেশের বাড়ি আছে। একটা কুলবাগান, একটা তালবাগান আছে, অনেক ঘাস আছে, একটা রোগা নদী আছে, প্রজাপতি আর পাখির গান আছে।’ ’’
টানা কথা বলে মিমো হাঁপাচ্ছে। সামান্য দম নিয়ে আবার গাড়ি ছোটাল, ‘‘দাদু আর কত দিন অপেক্ষা করবে বলো তো? রিকশাকাকুর তো রোজই তাড়া! তাই আমিই বড় হয়ে রিকশাকাকু হয়ে দাদুকে পৌঁছে দেব সবুজ হলুদ দেশে।’’
প্রিন্সিপালের মুখটা এখনও পাথর। সে সবে হেলদোল নেই মিমোর। আপন মনে বলেই চলে, ‘‘হলুদ সবুজ দেশটা ভীষণ সুন্দর, দাদু বলেছে, সেই রোগা নদীটায় নাকি অনেক নৌকো ভেসে বেড়ায়।’’
আইভি হতবাক। ছেলেকে কী ভাবে থামাবে বুঝতে পারছে না। হঠাৎ লক্ষ করে, ভোরের আলোর মতো একটা হাসি মিমোর গোলাপি ঠোঁটদু’টোয় ছড়িয়ে পড়ছে ধীরে-ধীরে। চোখদু’টো উজ্জ্বল। সঙ্গে-সঙ্গে মিমোকে থামানোর সিদ্ধান্ত বদল করল ও। মিমো যা বলে বলে যাক। ওকে থামতে দেওয়া যাবে না। অনেক শিশুর মধ্যে একটি শিশু না-ই বা ছুঁল আকাশ! দৌড় প্রতিযোগিতায় একটু না হয় পিছিয়েই থাকল! কী ক্ষতি তাতে এই বিরাট পৃথিবীর? সে বরং ওই মিষ্টি সবুজ হলুদ দেশটার ঠিকানা খুঁজে বার করুক।
কিন্তু কী ভাবে?
এই প্রথম চার দেয়ালে বন্দি বৃদ্ধ বেভুল মানুষটার জন্য গভীর মায়া আর তীব্র কষ্ট মাখামাখি হয়ে কান্নাজল তৈরি করল আইভির চোখে। মৃদুমন্দ হতাশার সঙ্গে গতে বাঁধা কিছু সাবধানতার পরামর্শ দিতে ছাড়লেন না প্রিন্সিপাল। কিন্তু সে সব আর তেমন স্পর্শ করল না আইভিকে। ছেলের হাত ধরে প্রিন্সিপালের ঘর থেকে বেরিয়ে এসে তাড়াতাড়ি হাঁটা লাগাল ও। মনে-মনে ভাবল, আজ এক বাক্স রংপেন্সিল কিনে ঘরে ফিরতে হবে। সঙ্গে একটা ধবধবে সাদা খাতা। ও হ্যাঁ, একটা লাল টুকটুকে স্কুল ব্যাগও। আচ্ছা, ওই ব্যাগ পেয়ে মানুষটা কি ফোকলা দাঁতে হেসে উঠবেন এক চোট? তার পর পিঠে ব্যাগ নিয়ে প্রস্তুত হবেন স্কুলে যাওয়ার জন্য! কুলবাগান পেরিয়ে, তালবাগানের ভিতর দিয়ে, শেষে রোগা নদীটা পার হয়ে...
ছবি: দীপঙ্কর ভৌমিক