বীরত্বসৌধ: বেঙ্গালুরু আর্কিয়োলজিক্যাল মিউজ়িয়মে সংরক্ষিত বীরশিলা
তামিলনাড়ুর ছোট্ট এক গ্রাম। নাম পুলিমানকোম্বই। এখানে ২০০৬ সালে একটি শিলালেখর সন্ধান মেলে। বিষয়বস্তু বলার মতো কিছু নয়, গাভী লুণ্ঠনের জন্য হানাদারি আর তাতে বাধা দিতে গিয়ে এক জনের মৃত্যু। সেই শহিদের স্মৃতিতে এই শিলালেখ। পুলিমানকোম্বই-এর এই শিলালিপিটির চেয়ে পুরনো অন্য কোনও শিলালেখতে এতটা সাধারণ গ্রাম্য বিষয় তেমন ভাবে স্থান পায়নি। সাধারণ মানুষের ইতিহাস খোঁজাটা আধুনিক ইতিহাসচর্চার একটা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। দেশের প্রাচীনতম শিলালেখর নিদর্শন হল অশোকের শিলালিপিসমূহ। তার পর এল কলিঙ্গ, সাতবাহন-সহ বিভিন্ন রাজাদের অভিলেখ যেখানে রাজপ্রশস্তি, প্রশাসনিক ও ধর্মীয় বিষয়েরই প্রাধান্য। কিন্তু বড় বড় মানুষ আর দেবতার মাঝে কি সাধারণ মানুষের কাহিনি কিছু নেই? তামিলনাড়ুর পুলিমানকোম্বইয়ের এই শিলালেখে পাওয়া যায় সাধারণ বিষয়, যেমন গ্রামের লেঠেলের কথা, সেনাবাহিনীতে কর্মরত সৈনিকের কাহিনি, গ্রাম্য লুণ্ঠন কিংবা হানাদারির গল্প। এগুলি রাজাদের লেখানো আত্মপ্রচারের বীরগাথা নয়, রাজাকে তুষ্ট করতে সামন্তরাজার বা অন্য কোনও অধস্তনের লেখানোও নয়— সেই কারণে এগুলি অন্য অনেক অভিলেখর চেয়ে অনেকটাই আলাদা। এই ধরনের শহিদ-স্মারককে ইংরেজিতে নাম দেওয়া হয়েছে ‘হিরো স্টোন’। তামিল ভাষায় ‘নটুকল’ আর কন্নড় ভাষায় ‘বীরকল্লু’। ‘নটু’ শব্দের অর্থ স্থাপিত, আর ‘কল’ বা ‘কল্লু’ মানে পাথর। বাংলায় বলা যেতে পারে, বীরশিলা।
পুলিমানকোম্বইয়ের শিলালেখটি তামিল-ব্রাহ্মী লিপিতে লেখা, অতএব এটা তামিল সঙ্গম সাহিত্যের যুগের, যার থেকে অনুমান করা যায় এটি চতুর্থ শতাব্দীর আগে লেখা। তামিল-ব্রাহ্মী লিপিতে লিখিত এ রকম স্মৃতিস্মারক মাত্র খানপাঁচেকই পাওয়া গেছে, আর এটি তাদের মধ্যে প্রাচীনতম বলে মনে করেছেন গবেষকরা। এই স্মারকশিলাগুলি ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে। এগুলি শুধু তামিল লিপির আদিতম রূপের সাক্ষ্যই বহন করে না, সেই যুগের গ্রামীণ তামিলনাড়ুর সাক্ষরতারও ইঙ্গিত দেয়। একাধিক শিলায় গরুর জন্য হানাদারি এবং এগুলির ফলে শহিদ হওয়ার উল্লেখ ইঙ্গিত দেয় তৎকালীন তামিলনাড়ুর গ্রামীণ অর্থনীতিতে গবাদি পশু কতখানি গুরুত্ব বহন করত।
এই ধরনের স্মারকশিলা কতটা জনপ্রিয় ছিল তা বোঝা যায় একটা পরিসংখ্যান থেকে। শুধু কর্নাটকেই ষষ্ঠ থেকে সপ্তদশ শতকে প্রতিষ্ঠিত প্রায় আড়াই হাজার বীরশিলা পাওয়া গেছে। গত দেড়শো বছর ধরে এদের পুনরাবিষ্কার হয়ে চলেছে। তামিলনাড়ুতেও পাওয়া গিয়েছে কয়েকশো, আর পুলিমানকোম্বই এদের মধ্যে প্রাচীনতম। সহস্রাধিক বছরের সমাজের বিবর্তন, সামরিক তথ্যাবলি, সমকালীন অর্থনীতি এবং শিল্পের ক্রমবিকাশের গুরুত্বপূর্ণ নথি এই শিলাগুলি।
পুলিমানকোম্বইয়ের ওই আদিযুগের বীরশিলায় যা লেখা ছিল তার অনুবাদ হল: “এটি পেডু গ্রামের তিয়ান অন্তবনের স্মৃতিতে স্থাপিত, যিনি কুডালুরে একটি গো-লুণ্ঠন অভিযানে নিহত হয়েছিলেন।” এখানে কোনও পরলোক বা দেবদেবীর উল্লেখ নেই। ধীরে ধীরে বীরশিলায় দেবদেবীর প্রবেশ ঘটেছে এবং সেই সঙ্গে এসেছে এক নতুন আদর্শবাদ। চালুক্য যুগের কর্নাটকে একটা নতুন ধারা চোখে পড়ে। তার আগে মনে রাখতে হবে, যে কোনও শিল্পবস্তুতে মানুষ বিনিয়োগ করে একটা উদ্দেশ্য নিয়ে। মানুষের স্মৃতিতে সমাধিসৌধ নির্মাণ হয়ে এসেছে হাজার হাজার বছর ধরে— পারিবারিক স্মৃতি নির্মাণের জন্য, পারিবারিক বৈভব প্রদর্শনের জন্য, কিংবা গোষ্ঠীস্মৃতি বা ‘কালেক্টিভ মেমরি’ নির্মাণের জন্য। বীরশিলায় এ ছাড়াও অন্য একটা উদ্দেশ্য চোখে পড়ে, তা হল মানুষকে আত্মবলিদানে উদ্বুদ্ধ করা। ৭০০ সাল নাগাদ বাদামি-তে কপ্পে অরভট্টন নামক এক যোদ্ধার উদ্দেশে লিখিত একটি শিলালেখর একটি কবিতায় সেই উদ্দেশ্য স্পষ্ট দেখা যায়। কন্নড় ও সংস্কৃতের মিশ্রণে লেখা এই কবিতার বিষয় হল ওই যোদ্ধার আত্মত্যাগের গরিমা বর্ণন। সংস্কৃতে লিখিত পঙ্ক্তিগুলি হল:
“বরণ তেজস্বিনো মৃত্যুর্ন তু মানাবখণ্ডনম্/ মৃত্যুর্তাৎক্ষণিকো দুঃখম্ মানভঙ্গম্ দিনে দিনে॥”— এর অর্থ হল, অবমাননার থেকে বীরের মতো মৃত্যু ভাল। মৃত্যু তাৎক্ষণিক, মানভঙ্গের দুঃখ প্রতি দিন ভোগ করতে হয়।
কবিতার কন্নড় অংশগুলিতে এই প্রয়াত সৈনিকের নানাবিধ প্রশংসা করা হয়েছে এবং কলিযুগের প্রেক্ষাপটে সে যে এক ব্যতিক্রম, সেটা বলা হয়েছে। কবিতাটি মাধবকে সমর্পিত। যে পরলোকে মাধব বাস করেন সেখানে যোদ্ধাকে উত্তীর্ণ করার আর্জি এই কবিতা।
এই আত্মবলিদানে উদ্বুদ্ধ করা এবং আত্মবলিকে একটা আধ্যাত্মিক বিষয়ে পরিণত করাটা এক ধাপ বিবর্তন। তার পরের ধাপটা একটু অন্য রকম। কর্নাটকে প্রাপ্ত একাদশ-দ্বাদশ শতকের হোয়সল যুগের একটি বীরশিলায় উৎকীর্ণ কবিতার উদ্বুদ্ধ করার ভাষাটা একটু আলাদা। কোগোডু গ্রামে প্রাপ্ত এই শিলায় মান-অপমানের কথা নেই, সংস্কৃতে লেখা আছে: “জিতেন লভ্যতে লক্ষ্মী, মৃতেনপি সুরাঙ্গনা।/ ক্ষণ বিশ্বংসিনী কায়ে, ক চিন্তা মরণে রণে॥” অর্থাৎ, জিতলে লক্ষ্মীলাভ, মরলে সুরাঙ্গনা। কায়া ক্ষণস্থায়ী, তা হলে রণক্ষেত্রে মরণে চিন্তা কিসের?
একাধিক বীরশিলায় এই কবিতাটি ফিরে ফিরে এসেছে।
চালুক্য যুগেই বীরশিলা আরও আড়ম্বরপূর্ণ হতে শুরু করেছিল। হোয়সল যুগে কর্নাটকে আড়ম্বরের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পায়, শিল্পসুষমা ও সূক্ষ্মতাও বাড়ে। সেখানে প্রয়াত বীর অপ্সরা-পরিবৃত হয়ে স্বর্গারোহণ করছেন, এমন বিশদ দৃশ্যায়নও দেখা যায়। এও মানুষকে যুদ্ধে লড়ার অনুপ্রেরণা দেওয়ার কৌশল। গোধন দখল বা রক্ষার লড়াই দিয়ে শুরু হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তী কালে এল রাজরাজড়াদের যুদ্ধ। সাধারণ প্রশস্তি দিয়ে শুরু হয়েছিল, তার পর দেখা গেল অনুপ্রেরণা, আর শেষে স্বর্গ ও সুরাঙ্গনার প্রলোভন। পরের দিকটাতে নারীদের অনেকটাই ভোগ্যবস্তু হিসেবে দেখার চল শুরু হয়। স্বর্গে গিয়ে একাধিক নারী সম্ভোগকে যুদ্ধক্ষেত্রে শহিদ হওয়ার টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং এই অপ্সরাপ্রাপ্তির ব্যাপারটা কবিতা ও ভাস্কর্য দু’ভাবেই দেখানো হয়েছে।
বীরশিলায় পুরুষ-যোদ্ধাদের একাধিপত্য থাকলেও কর্নাটকের সিদ্দেনহাল্লি এবং কেম্বলুতে যথাক্রমে এক স্ত্রী-যোদ্ধা এবং এক রানির বীরশিলাও পাওয়া গিয়েছে। কর্নাটকের হোসাকোটেতে এবং তামিলনাড়ুর কৃষ্ণগিরিতেও স্ত্রী-যোদ্ধাদের বীরশিলা আছে। দ্বিতীয়টিতে অশ্বারোহিণীদের দেখা যায়। তবে এগুলি সংখ্যায় কম। আর পুরুষ যোদ্ধা স্বর্গে গিয়ে বা যাওয়ার পথে অপ্সরা-পরিবৃত হয়ে যে সুখ ভোগ করে, নারী যোদ্ধাদের ক্ষেত্রে সেটা দেখা যায়নি।
শৈল্পিক উৎকর্ষের বিচারে দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর কর্নাটকের বীরশিলাগুলি সেরা। এগুলি সাধারণত তিনটে প্যানেলে বিভক্ত হত। একেবারে নীচে যুদ্ধের দৃশ্য, তার ঠিক উপরে অপ্সরারা পালকিতে করে বা দুই কাঁধ ধরে স্বর্গে নিয়ে যাচ্ছে, আর একেবারে উপরের প্যানেলে শিবলিঙ্গ অথবা অন্যান্য দেবতার সংসর্গে প্রয়াত যোদ্ধা, যার অর্থ স্বর্গলাভ। অর্থাৎ বীরগতিপ্রাপ্তর ধাপে ধাপে স্বর্গারোহণ।
এই বীরশিলাগুলিকে উপাসনা করা হত, তবে মন্দিরের বাইরে রেখে। কর্নাটকের হঙ্গলের তারকেশ্বর মন্দিরে প্রাপ্ত দ্বাদশ শতকের বীরশিলাগুলিও শৈল্পিক দিক থেকে বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ভাস্কর্যায়িত শিলালেখর আর একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, এগুলি থেকে তখনকার সাজপোশাক, অলঙ্কার, যুদ্ধাস্ত্র, রথের গঠন— এ সবেরও একটা ধারণা পাওয়া যায়।
মৃগয়াসঙ্গী কুকুরের নামে বীরশিলা নির্মাণেরও নিদর্শন আছে গঙ্গ রাজাদের ক্ষেত্রে। কর্নাটকের আতাকুরের চল্লেশ্বর মন্দিরের সামনে শিলাটি স্থাপিত তাতে দেখা যায়, রীতিমতো ভয় দেখানো হয়েছে মন্দিরের পুরোহিতকে— যদি সে শিলাটির পুজো ঠিক মতো না করে তা হলে সে পাপের ভাগী হবে। কুকুরকে সে যুগের ধর্মে অশুচি প্রাণী হিসাবে গণ্য করা হত। মন্দিরে সিংহ, হাতি, ঘোড়া, বৃষের মতো কুকুরদের মূর্তি নির্মিত হত না, তাই কুকুরের বীরশিলার পুজো পুরোহিতরা করবে না সেই আন্দাজ রাজার ছিল। সেই কারণেই রাজকীয় ক্ষমতা প্রদর্শনের প্রয়োজন হয়েছে।
শিলালেখ যুগে যুগে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভান্ডারের কাজ করে। স্থানীয় নায়ক বা সামন্তরাজাদের নাম, গ্রামের নাম, ছোটখাটো যুদ্ধের তথ্যের বহু খুঁটিনাটি স্থানীয় তথ্য নিহিত থাকে এদের মধ্যে। কোন সময়ে কোন রাজার কত দূর অবধি রাজ্যসীমা ছিল তার আভাস পাওয়া যায়, কোন শহরের অতীতে কী নাম ছিল তা জানা যায়। বেঙ্গালুরু শহরের নাম যে ৮৯০ সালেও বেঙ্গালুরু ছিল, তা জানা যায় শহরের উপকণ্ঠে বেগুর থেকে পাওয়া একটি বীরশিলা থেকে। ‘বেগুর ইনস্ক্রিপশন’ নামে পরিচিত এই শিলালেখে বেঙ্গালুরু যুদ্ধের কথা আছে, আছে শৈব ধর্মাবলম্বী নোলম্ব রাজাদের হাতে জৈন গঙ্গ রাজাদের পরাজয়ের কথা। কর্নাটকের সুবিশাল জৈন সংস্কৃতির ক্রমবিলোপের একটি অধ্যায় আমরা এখানে দেখতে পাই। এই বীরশিলায় এই যুদ্ধের দৃশ্যও সযত্নে খোদিত আছে।
বীরশিলায় প্রয়াত যোদ্ধার ভাস্কর্যে কোথাও উপবীত দেখা যায়, কোথাও দেখা যায় না। অনুমেয় যে, এই স্মারক শুধুই উচ্চবর্ণে, বিশেষত যজ্ঞোপবীতধারী বর্ণে সীমিত ছিল না। এটাও খেয়াল রাখা প্রয়োজন যে, ক্ষত্রিয়দের অনেকের উপবীত থাকত, অনেকের থাকত না। বীরশিলার প্রতিকৃতি, লেখ অথবা লেখার অনুপস্থিতি, বিনিয়োগের পরিমাণ বিশ্লেষণ করে তখনকার বর্ণভিত্তিক ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা করা সম্ভব। সাক্ষরতা উচ্চবর্ণে বেশি ছিল, তাই লেখার পরিমাণ এবং উপস্থিতির সঙ্গে বর্ণের যোগ থাকা সম্ভব। তা ছাড়া মনে করা হয়, বেশি কারুকার্যমণ্ডিত ও ব্যয়বহুল বীরশিলাগুলি উচ্চবর্ণের হত। তবে নিঃসন্দেহে এই বীরশিলায় বিভিন্ন বর্ণের যোদ্ধার ইতিহাস নিহিত আছে। অনেক মানুষ যজ্ঞোপবীতধারী বর্ণের বাইরে হয়েও পূজার বেদিতে স্থান পেয়েছে।
বীরশিলার সংগ্রহ দেখা যায় বেঙ্গালুরু শহরের আর্কিয়োলজিক্যাল মিউজ়িয়ম প্রাঙ্গণে। দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন মিউজ়িয়মে, মন্দির প্রাঙ্গণে এরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে, অথবা মাঠে-ঘাটে অযত্নে পড়ে আছে, কোথাও বা তাদের সিঁদুর-হলুদ লেপে পুজোও করা হচ্ছে। বীরশিলাগুলিতে যে হেতু মানুষের বা দেবদেবীদের প্রতিকৃতি থাকত, গ্রামের মানুষেরা এদের অনেক সময় উপাস্য বস্তু হিসেবেও ব্যবহার করে এসেছে। এর মাধ্যমে সব সময় প্রয়াত যোদ্ধার উপাসনা করা হচ্ছে এমন নয়, বরং একটা সময়ের পর এগুলি সম্পূর্ণ নূতন দৈববস্তু হয়ে উঠেছে মানুষের কাছে। এটা শিল্পকৃতির পুনর্ব্যবহারের ভাল উদাহরণ। এর মাধ্যমে এক দিকে যেমন এদের সংরক্ষণও হয়েছে, আবার কোথাও এই পুজোআচ্চার অতিযত্নটা সংরক্ষণের পক্ষে অন্তরায়ও হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তথ্যসূত্র: ‘আ হিস্ট্রি অব এনশিয়েন্ট অ্যান্ড আর্লি মিডিভাল ইন্ডিয়া: ফ্রম দ্য স্টোন এজ টু দ্য টুয়েলফ্থ সেঞ্চুরি’ (২০০৯) — উপিন্দর সিংহ, ‘মেগালিথিক টাইপস অব সাউথ ইন্ডিয়া’ (১৯৪৯)— ভি ডি কৃষ্ণস্বামী, অ্যানুয়াল রিপোর্ট অব দ্য মাইসোর আর্কিয়োলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট ফর দ্য ইয়ার নাইন্টিন টোয়েন্টিফোর