সৃজনমগ্ন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। গান রচনা এবং তার গ্রহণযোগ্যতা প্রসঙ্গে তিনি ছেলেবেলা থেকেই দৃঢ়প্রত্যয়ী।
আজ বাঙালির তেরো পার্বণের অন্যতম হল বইমেলা। বইমেলায় লক্ষ লক্ষ পাঠকের সামনে শয়ে শয়ে নতুন বই প্রকাশিত হয়। নামী-অনামী লেখক এবং প্রকাশক, সকলেরই অধীর আগ্রহ থাকে এই পার্বণে বই প্রকাশের। এক সময়ে নববর্ষে বাংলা বই প্রকাশের অলিখিত রেওয়াজকে এখন বইমেলা ম্লান করে দিয়েছে। বইমেলায় প্রকাশিত নানা বইয়ের মধ্যে আজও একটা বড় অংশ জুড়ে আছেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। নিজেই এক প্রবন্ধে দাবি করেছিলেন, “জগৎকে আমরা মন দিয়া ছুঁই না বই দিয়া ছুঁই।”
বাঙালি সংস্কৃতির মননে রবীন্দ্রপ্রসঙ্গ চিরন্তন। তাই রবীন্দ্রচর্চা অনিবার্য কারণেই ফল্গুধারার মতো বছরের পর বছর বয়ে চলেছে। এই বইমেলা পার্বণীতে বই লেখা, বই মুদ্রণ, বই প্রকাশ এবং বই বিজ্ঞাপনের বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের নিজস্ব ভাবনা কেমন ছিল, ছোট্ট পরিসরে তা জেনে নেওয়া যেতে পারে। সরাসরি গ্রন্থ-প্রকাশের আগেই রবীন্দ্রনাথের হাতেখড়ি হয়েছিল বিভিন্ন সাময়িকীতে। তাঁর তেরো-চোদ্দো বছরের ‘রচনা-প্রকাশ’ প্রসঙ্গে ‘জীবনস্মৃতি’তে কবির স্মৃতিচারণ ছিল এ রকম, “এ-পর্যন্ত যাহাকিছু লিখিতেছিলাম তাহার প্রচার আপনা-আপনির মধ্যেই বদ্ধ ছিল। এমনসময় ‘জ্ঞানাঙ্কুর’ নামে এক কাগজ বাহির হইল। কাগজের নামের উপযুক্ত একটি অঙ্কুরোদ্গত কবিও কাগজের কর্তৃপক্ষেরা সংগ্রহ করিলেন। আমার সমস্ত পদ্যপ্রলাপ নির্বিচারে তাঁহারা বাহির করিতে শুরু করিয়াছিলেন।”
পিতৃদেব মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের সঙ্গে হিমালয় ভ্রমণ শেষে ঘরে ফিরে ১৮৭৩ সালের মে মাস থেকে বালক রবি ‘বনফুল’ নামে যে কবিতা লিখতে শুরু করেছিলেন, তার আটটি সর্গ প্রকাশিত হয়েছিল ‘জ্ঞানাঙ্কুর’ পত্রিকায়। পরে দাদা সোমেন্দ্রনাথের উৎসাহে ‘বনফুল’ গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৮০ সালের ৮ মে। এ দিকে ‘বনফুল’ পুস্তকাকারে প্রকাশের আগেই তাঁর ‘কবি-কাহিনী’ প্রকাশিত হয়েছিল। এটি রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ, প্রকাশকাল ১৮৭৮ সালের ৫ নভেম্বর। এই কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলিও তার আগের বছর ‘ভারতী’তে ধারাবহিক ভাবে ছাপা হয়। ‘কবি-কাহিনী’ গ্রন্থ প্রকাশে বন্ধু প্রবোধচন্দ্র ঘোষের আগ্রহ ও চেষ্টাকে কবি স্বীকার করে লিখেছিলেন— “কবিকাহিনী কাব্যই আমার রচনাবলীর মধ্যে প্রথম গ্রন্থ-আকারে বাহির হয়। আমি যখন মেজদাদার নিকট আমেদাবাদে ছিলাম তখন আমার কোনো উৎসাহী বন্ধু এই বইখানা ছাপাইয়া আমার নিকট পাঠাইয়া দিয়া আমাকে বিস্মিত করিয়া দেন।” প্রবোধচন্দ্র সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে এন্ট্রাস ক্লাসে কবির দাদা সোমেন্দ্রনাথ ও ভাগ্নে সত্যপ্রসাদের সহপাঠী ছিলেন। এর পর গ্রন্থজগতে কবির লেখা ‘বাল্মীকি-প্রতিভা’, ‘ভগ্নহৃদয়’, ‘য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র’, ‘সন্ধ্যা সংগীত’ ইত্যাদি গ্রন্থ একে একে প্রকাশিত হয়।
প্রশ্ন হতে পারে, রবীন্দ্ররচিত গ্রন্থসমূহ কি আজকের মতো সে দিনও পাঠকের সমাদর পেয়েছিল! এই প্রসঙ্গে স্বয়ং কবির মন্তব্য দেখে নেওয়া যাক। ৫৬ পৃষ্ঠার ডিমাই সাইজের ৫০০ কপি ‘কবি-কাহিনী’ গ্রন্থপ্রকাশের পর প্রকাশক সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের উক্তি ছিল, “তিনি যে কাজটা ভালো করিয়াছিলেন তাহা আমি মনে করি না, কিন্তু তখন আমার মনে যে ভাবোদয় হইয়াছিল, শাস্তি দিবার প্রবল ইচ্ছা তাহাকে কোনোমতেই বলা যায় না। দণ্ড তিনি পাইয়াছিলেন, কিন্তু সে বইলেখকের কাছে নহে।” তা হলে কার কাছে? ‘বই কিনিবার মালিক যাহারা তাহাদের কাছ হইতে’ দণ্ড মিলেছিল, কারণ শোনা যায় সেই বই ‘সুদীর্ঘকাল দোকানের শেলফ এবং তাহার চিত্তকে ভারাতুর করিয়া অক্ষয় হইয়া বিরাজ করিতেছিল।’ তথ্য বলছে, প্রথম দিকে কবির প্রকাশিত বইগুলোর বাজারদর তেমন ছিল না। একাধিক সংস্করণের মুখ দেখেছিল হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র বই।
এ দিকে সেই বাল্যবয়সেই কবি গান রচনায় মন দিয়েছিলেন, যা কিনা তাঁর দীর্ঘ জীবনে যাত্রাপথের আনন্দগান হয়ে দাঁড়ায়। এই গানের প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথকে দৃঢ়প্রত্যয়ী হতে দেখা গিয়েছে, যখন এই গান বাঙালি জাতিকে নিতেই হবে বলে তিনি দাবি করেন। ১৮৮৫ সালের ২ জুন চব্বিশ বছর বয়সি কবির ১৯০ পৃষ্ঠার গানের প্রথম বই ‘রবিচ্ছায়া’ এক হাজার কপি ছাপা হয়েছিল। প্রকাশক ছিলেন সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের অধ্যক্ষসভার সভ্য ও সিটি কলেজের অধ্যাপক যোগেন্দ্রনারায়ণ মিত্র। মাত্র বারো আনা মূল্যের এই বইটিকে পাঠক সে ভাবে গ্রহণ করেনি। তাই এর কিছু দিন পর এক অভিনব কাণ্ড ঘটে। বইটির কথা সেই সময়ের সাপ্তাহিক পত্র ‘সঞ্জীবনী’র পর পর আটটি সংখ্যায় প্রকাশকের পক্ষ থেকে শশিভূষণ বিশ্বাসের দেওয়া বিজ্ঞাপনে প্রকাশ পায়। বিজ্ঞাপনে লেখা হয়, “মূল্য কমিল রবিচ্ছায়া মূল্য কমিল।... ‘সঞ্জীবনী’ এবং ‘ভারত শ্রমজীবী’র গ্রাহকগণ আমার নিকট মূল্য পাঠাইলে ছয় আনা মূল্যে পাইবেন।” সত্যিই আজ একুশ শতকের বিশের দশকে এসে এই চিত্রটি অকল্পনীয় মনে হয়, কারণ রবীন্দ্রনাথের গানের বই ‘গীতবিতান’ আজ দীর্ঘকাল যাবৎ বাংলা বইয়ের বেস্টসেলারের তালিকায়। অথচ তাঁর গানের প্রথম বইয়ের বিক্রির জন্য একেবারে পঞ্চাশ শতাংশ ছাড় কবুল করতে হয়েছিল প্রকাশককে!
পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কবির বই প্রকাশের সময়ে বিজ্ঞাপন দেওয়ারও চল ছিল। ১৮৮৩ সালে কবির ৩১০ পৃষ্ঠার প্রথম উপন্যাস ‘বউ-ঠাকুরাণীর হাট’ হাজার কপি ছাপা হয়। এক টাকা চার আনা মূল্যের বইটি পরবর্তী সতেরো বছরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সংস্করণের মুখ দেখে। বড়দিদি সৌদামিনী দেবীকে উৎসর্গীকৃত এই উপন্যাসের মুদ্রণব্যয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর। ‘সোমপ্রকাশ’ ও ‘সাধারণী’তে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল এমন— “শ্রীযুক্ত বাবু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রণীত নিম্নলিখিত নবপ্রকাশিত পুস্তকগুলি ক্যানিং লাইব্রেরী সংস্কৃত ডিপজিটরি প্রভৃতি প্রধান প্রধান পুস্তকালয়ে প্রাপ্তব্য।” এ ছাড়া সে সময়ে এই ধরনের বিজ্ঞাপনে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মাইকেল মধুসূদন, দীনবন্ধু মিত্র প্রমুখ বিখ্যাত সাহিত্যিকদের সঙ্গে তরুণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরও নাম স্থান পেতে থাকে।
বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি কবির গ্রন্থের সমালোচনাও প্রকাশ পেতে থাকে তৎকালীন পত্রপত্রিকায়। ‘সাধারণী’র ১২৯০ -র বৈশাখ সংখ্যায় প্রকাশিত এমন একটি সমালোচনায় মুদ্রিত হল, “শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রণীত, বৌঠাকুরাণীর হাট। য়ুরোপ যাত্রীর পত্রগুলি, কেবল চিঠি লেখা বলিয়া ধরিলে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই খানি প্রথম গদ্যগ্রন্থ বলিয়াই বোধ হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পদ্যে যে ছায়াময় আবেশের ভাবটি আছে, তাঁহার গীতিতে যে ভাঙ্গাভাঙ্গা স্বরটি আছে, তাঁহার গদ্যে তাহার কিছুই নাই।... এই গ্রন্থের মর্ম্ম গ্রন্থি আমরা খুঁজিয়া পাই নাই।... সুতরাং সমস্ত গ্রন্থের সৌন্দর্য সমালোচনা করিতে আমরা পারিলাম না।”
অল্প বয়স থেকে বাংলার সাহিত্যজগতে রবীন্দ্রনাথের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল বটে, কিন্তু বই বিক্রির ব্যাপারে তার প্রতিফলন পাওয়া যায়নি। খুবই হতাশার কথা, এক সময়ে কবি নিজের ‘বই কেনবার মহাজন পাওয়া দুর্লভ এবং নিজেকে বিক্রয় করতে গেলেও খরিদ্দার পাওয়া যেত কিনা সন্দেহ’ এমনতর মন্তব্য প্রকাশ করেছিলেন প্রিয় সুহৃদ প্রিয়নাথ সেনের কাছে, শিলাইদহ থেকে ১৯০০ সালের ৮ অগস্টে লেখা এক চিঠিতে। এমনকি সেই চিঠিতেই জানা যায়, বাজারে অবিক্রীত বই সিকি মূল্যে বেচে দিতেও তিনি চেয়েছিলেন। আর এর ঠিক একচল্লিশ বছর পর ১৯৪১ সালে কবির প্রয়াণের বছরে প্রায় এক লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল।
লেখক রবীন্দ্রনাথকে পরবর্তী কালে মুদ্রণ ও প্রকাশনার দায়িত্ব নিতে দেখা গিয়েছে। হয়তো ভবিতব্য এমনই ছিল, তা না হলে ‘জীবনস্মৃতি’র পাতায় কেনই বা একেবারে ছেলেবেলার একটি লেখার স্মৃতিচারণে এমনটা লিখবেন, “নিজেই তখন লেখক, মুদ্রাকর, প্রকাশক, এই তিনে-এক একে-তিন হইয়া ছিলাম।” প্রথম জীবনে গ্রন্থ প্রকাশের নানাবিধ সঙ্কট, সমস্যা ও তার সমাধানের পথ খুঁজতে খুঁজতে পরে তাঁকে এই ‘তিনে-এক একে-তিন’ হয়ে উঠতে হয়েছিল। নোবেল প্রাপ্তির পর রবীন্দ্রনাথের বইয়ের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। ১৯১০ সালে ইন্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস থেকে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের দীর্ঘ চোদ্দো বছর পর এর অষ্টম সংস্করণ মুদ্রিত হয়। ১৯২১ সালে বিশ্বভারতীর সংবিধান তৈরি করে রবীন্দ্রনাথ সর্বসাধারণের হাতে তুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনুভব করেছিলেন এই বিদ্যা প্রতিষ্ঠানের জন্য আরও অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু উপায় কী! পরের বছর ১৯২২ সালে ঠিক করলেন নিজের গ্রন্থগুলি বিক্রি করে বিশ্বভারতীর আয় বাড়ানোর।
১৯২৩ সালের ২০ জানুয়ারি তারিখে প্রকাশিত ‘গীতাঞ্জলি’র অষ্টম সংস্করণের প্রকাশক এলাহাবাদের ইন্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড। যদিও এর আগে ১৯২২-এর ১৮ সেপ্টেম্বর এলাহাবাদ ইন্ডিয়ান প্রেসের কর্ণধার চিন্তামণি ঘোষকে লেখা রবীন্দ্রনাথের চিঠিটি বেশ কৌতূহলোদ্দীপক: “শান্তিনিকেতন বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠানটিকে যথাবিহিত সর্ব্বসাধারণের হস্তে সমর্পণ করিয়াছি। আমার সমস্ত বাংলা বইগুলির স্বত্ব লেখাপড়া করিয়া বিশ্বভারতীর হাতে দিয়া আমি সম্পূর্ণ নিষ্কৃতি লইয়াছি। এক্ষণে এই অধিকারের হস্তান্তর উপলক্ষ্যে আমার গ্রন্থ প্রকাশের কোনো একটি সন্তোষজনক ব্যবস্থা হইতে পারিলে আমি অত্যন্ত নিশ্চিন্ত হইতে পারিব।” এই চিঠির মাধ্যমেই জানা যায়, কবির প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বভারতী থেকে নেপালচন্দ্র রায়, সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ এলাহাবাদে চিন্তামণি ঘোষের কাছে গিয়েছিলেন প্রকাশনার বিষয়ে আলোচনা করতে। ১৯২৩ -এর জুলাইয়ে বিশ্বভারতী গ্রন্থবিভাগ চালু হয়। ১৯২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ‘গীতাঞ্জলি’র নবম সংস্করণ বিশ্বভারতী থেকে প্রকাশিত হল।
মজুমদার লাইব্রেরি শুরু করে ইন্ডিয়ান প্রেস বা পাবলিশিং হাউস হয়ে বিশ্বভারতী প্রকাশনা বিভাগ, সর্বত্রই রবীন্দ্রনাথ বই প্রকাশের ব্যাপারে যথেষ্ট মনোযোগী ছিলেন। এক বার ১৯২৬ সালের ২৬ মার্চ প্রুফ দেখার বিষয়ে প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশকে চিঠিতে জানিয়েছিলেন, প্রুফ দেখার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে ভাল লোক ঠিক করার জন্য। নীহাররঞ্জন রায়ের মতো পণ্ডিত ও প্রাজ্ঞজনকে দিয়ে প্রুফ রিডিং করানোর কথাও ভাবতে বলেছিলেন। সুকুমার রায় ও সুরেন্দ্রনাথ করের মুদ্রণ দক্ষতা ও বিদ্যাকে কাজে লাগিয়েছেন। এমনকি কন্যা মীরা দেবীর পুত্র নীতীন্দ্রনাথকে জার্মানিতে প্রিন্টিং টেকনোলজি পড়তে পাঠিয়েছিলেন। তাঁর অকালপ্রয়াণে কবির স্বপ্নপূরণ হয়নি। বইয়ের ‘কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে কাগজের কারাগারে বাঁধা’ না পড়ার দিকেও সজাগ থেকেছেন। বইয়ের হরফ, ফাঁক, মার্জিন, ইনডেন্টের বিন্যাস-সহ আকার, সম্পাদনা, মুদ্রণ পারিপাট্য, সাজসজ্জা-সহ প্রচ্ছদ পরিকল্পনা— সবেতেই সৃজনশীল ছাপ রাখার নিরন্তর অনুশীলন করে গেছেন। এখনও বিশ্বভারতী প্রকাশনার প্রথম যুগের বইয়ের পৃষ্ঠা ওল্টালে প্রাণের আরাম মেলে। শিক্ষিত বাঙালির গ্রন্থ সংক্রান্ত যাবতীয় রুচিবোধে রবীন্দ্রনাথের সামগ্রিক অবদান অনস্বীকার্য, কারণ জগৎকে তিনি বই দিয়ে ছুঁতে চেয়েছিলেন।