Bengali Story

আসলে তুই-ই আমার বড় ছেলে

শ্রীমা সারদা দেবীকে বলতেন তাঁর গর্ভধারিণী শ্যামাসুন্দরী দেবী। ছেলেদের বলতেন, ‘তোদের বড়দি আমাদের লক্ষ্মী।’ শ্রীমা-র চরিত্র ও ব্যক্তিত্বে তাঁর মায়ের প্রভাব ছিল গভীর।

Advertisement

অরুণাভ দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:৪২
Share:

জননী: শ্যামাসুন্দরী দেবী এবং ডান দিকে, শ্রীমা সারদা দেবী।

মা গো, তুই যে আমার কে মা! আমি কি তোকে চিনতে পারছি মা?” জীবনসায়াহ্নে উপস্থিত এক অতুলনীয়া মা তাঁর মহীয়সী মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলেন।

Advertisement

মেয়ে উত্তরে খুব সহজ ভাবে বললেন, “আমি আবার কে? আমি আবার কী? আমার কি চারটে হাত হয়েছে? আর তা-ই যদি হবে, তবে তোমার কাছে আসা কেন?”

মায়ের কাছে এ ভাবেই নিজের অসাধারণত্ব গোপন রাখতেন কন্যা সারদামণি। আর সকলের কাছে তিনি পবিত্রতার স্বরূপ ‘মা’। পরমাপ্রকৃতি। রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের সঙ্ঘমাতা। শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর সম্বন্ধে বলেছিলেন, “ও আমার শক্তি!” তাঁকে উদ্দেশ্য করে নিবেদিতা লিখেছিলেন, “সত্যিই তুমি ঈশ্বরের অপূর্বতম সৃষ্টি, শ্রীরামকৃষ্ণের বিশ্বপ্রেম ধারণের নিজস্ব পাত্র।” ঈশ্বরের সেই ‘অপূর্বতম সৃষ্টি’কে নিজ গর্ভে ধারণ করে ‘জগজ্জননীর জননী’ রূপেযিনি আজও সমাদৃত, তিনি শ্যামাসুন্দরী দেবী।

Advertisement

জয়রামবাটীর কাছে শিহড় গ্রামে হরিপ্রসাদ মজুমদার ও রাইমণি দেবীর সংসারে শ্যামাসুন্দরী ভূমিষ্ঠ হন তাঁদের প্রথম সন্তান রূপে। শ্যামাসুন্দরী ছাড়াও হরিপ্রসাদের পাঁচ পুত্র ও একটি কন্যা ছিল। হরিপ্রসাদের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদেরই কেউ এক জন বর্ধমান মহারাজার সুনজরে পড়ে তাঁর কাছ থেকে ‘মজুমদার’ উপাধি পেয়েছিলেন। শ্যামবর্ণা শ্যামাসুন্দরী ছিলেন অসাধারণ সুন্দরী। অল্প বয়সে জয়রামবাটীর রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে শ্যামাসুন্দরীর বিয়ে হয়। রামচন্দ্র দরিদ্র হলেও ছিলেন নিষ্ঠাবান এবং উদারচেতা মানুষ। পিতামাতার প্রকৃতি সম্পর্কে কন্যা সারদার অভিমত— “বাবা পরম রামভক্ত ছিলেন, পরোপকারী; মায়ের কত দয়া ছিল! তাই এ ঘরে জন্মেছি।”

শ্রীমায়ের জন্মের ইতিহাস ভারী অদ্ভুত! এক রাতে শিহড় থেকে জয়রামবাটী ফেরার পথে শ্যামাসুন্দরী অসুস্থ বোধ করায় একটি বেলগাছের নীচে বসে পড়েন। সেই সময় দেখেন, দেবী লক্ষ্মীসদৃশ এক শিশুকন্যা বেলগাছ থেকে নেমে এসে তাঁর গলা জড়িয়ে ধরেছে। অন্য দিকে রামচন্দ্রও স্বপ্নে দেখেন এক অপরূপা সালঙ্কারা বালিকা তাঁকে বলছে, “তোমার কাছে এলাম।” তাঁদের এই অলৌকিক অভিজ্ঞতার পর ১২৬০ বঙ্গাব্দের ৮ পৌষ (১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার কৃষ্ণাসপ্তমী তিথির সন্ধ্যায় রামচন্দ্রের গৃহে ভূমিষ্ঠ হলেন তাঁদের প্রথম সন্তান। শিশুকন্যার নাম প্রথমে ‘ক্ষেমঙ্করী’ রাখা হলেও পরে শ্যামাসুন্দরীর এক বোনের অকালমৃতা কন্যার স্মৃতিতে কন্যার নাম রাখা হয় ‘সারদা’।

নিজের গর্ভধারিণী সম্বন্ধে শ্রীমা বলতেন, “মায়ের কত দয়া ছিল। লোকদের কত খাওয়াতেন, যত্ন করতেন, কত সরল! আমার মা সাক্ষাৎ লক্ষ্মী ছিলেন। তিনি বলতেন, ‘আমার ভক্ত-ভগবানের সংসার।’ সংসার তাঁর প্রাণ ছিল। সংসার সামলাতে তিনি কত কষ্টই না করেছেন!” শ্যামাসুন্দরীর জীবনের পরতে পরতে ছিল ক্লেশ ও সংগ্রাম। বৈধব্য, সন্তানশোকের দুর্বিষহ যন্ত্রণা নিয়েই সংসার সচল রাখতে প্রাণপাত পরিশ্রম করেছেন। তাঁর দেহ-মনে ছিল প্রচণ্ড শক্তি। তিনি ছিলেন দুই মেয়ে এবং পাঁচ ছেলের জননী। কিন্তু তাঁর সন্তানদের মধ্যে সারদামণি এবং তিন ছেলে প্রসন্নকুমার, কালীকুমার এবং বরদাপ্রসাদই দীর্ঘকাল জীবিত ছিলেন। তাঁর দ্বিতীয় কন্যা কাদম্বিনী এবং দ্বিতীয় পুত্র উমেশের অল্প বয়সেই মৃত্যু হয়। কনিষ্ঠ পুত্র অভয়চরণ ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। কলকাতার ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুলে ডাক্তারি পড়তেন। ছাত্রাবস্থাতেই কলেরায় মৃত্যু হয় তাঁর।

১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের পর শ্যামাসুন্দরী পড়েন অথৈ জলে। সংসারে প্রচণ্ড অভাব। ছেলেরা সকলেই নাবালক। শ্রীমা তখন দক্ষিণেশ্বরে। সেই সময় নিঃসম্বল শ্যামাসুন্দরী অন্নসংস্থানের জন্য এক সঙ্গতিপন্ন প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে ধান এনে ঢেঁকিতে কুটতেন; মজুরি হিসেবে পেতেন এক-চতুর্থাংশ চাল। তখনকার বর্ণনা শ্যামাসুন্দরী নিজেই তাঁর পুত্রবধূদের দিয়েছেন, “ঘরে ভাত বসিয়ে দিয়ে শিহড়ে গিয়ে তরকারি নিয়ে এসেছি। ষোলো পাকা (সারি সারি ষোলোটা) উনুন জ্বলছে, তাতে রান্না করেছি— এক হাঁড়ি ভাত আর এক ধুচুনি চালের জন্য।” দুর্দিনে পাশে পেয়েছেন কন্যাকে। শ্রীমা জয়রামবাটীতে এলে সংসারের সমস্ত কাজ সামলানোর পাশাপাশি ভাইদের দেখাশোনা করতেন, উপার্জনের জন্য ক্ষেত থেকে তুলো তুলে তা পাকিয়ে পৈতে তৈরি করতেন। শ্যামাসুন্দরী তাই মেয়েকে বলেছিলেন, “প্রকৃতপক্ষে তুই-ই আমার বড় ছেলে।” ছেলেদের উদ্দেশেও বলেন, “তোদের বড়দি আমাদের লক্ষ্মী। আমাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য সে কী না করে।” অন্তিম সময়ে আদরিণী কন্যার কাছে শ্যামাসুন্দরীর আবদার ছিল, “সারদা, জন্মান্তরে তোকেই যেন আবার আমি পাই, মা!”

পাঁচ বছরের কন্যা সারদাকে চব্বিশ বছরের গদাধরের হাতে তুলে দেন রামচন্দ্র। কিন্তু জামাই আর পাঁচটা মানুষের মতো নন। তিনি ঈশ্বরপ্রেমে ব্যাকুল হয়ে কাঁদেন, হাসেন, নৃত্য করেন। শ্বশুরবাড়ির কারও চোখে পড়ে বাড়ির জামাই কীর্তন শুনে অচৈতন্য ও উলঙ্গ অবস্থায় ঘরের এক কোণে পড়ে আছেন। তাঁর ভাব না বুঝে গ্রামসুদ্ধ লোক তাঁকে ‘মুখুজ্জেদের খেপা জামাই’ বলে উপহাস করে। স্বামীর নিন্দা শুনে লুকিয়ে কাঁদেন সারদা। তা দেখে শ্যামাসুন্দরীর বুক ফাটে আর আক্ষেপ করে বলেন, “এমন পাগল জামাইয়ের সঙ্গে আমার সারদার বে দিলুম! আহা! ঘরসংসারও করলে না, ছেলেপিলেও হল না ‘মা’ বলাও শুনলে না।” সে কথা শুনে শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁকে আশ্বাস দেন, “শাশুড়ি ঠাকরুন, সে জন্য আপনি দুঃখ করবেন না; আপনার মেয়ের এত ছেলেমেয়ে হবে, শেষে দেখবেন, ‘মা’ ডাকের জ্বালায় আবার অস্থির হয়ে উঠবে।” শ্রীরামকৃষ্ণের দেহত্যাগের কিছু কাল পরেই সেই ভবিষ্যদ্বাণী বর্ণে বর্ণে সত্যি হয়ে ওঠে। জগদ্বরেণ্য জামাইকে শ্যামাসুন্দরী ভালবাসতেনও খুব। শেষের দিকে তাঁদের সম্পর্কটি ছিল ঠিক যেন ভক্ত-ভগবানের। শ্যামাসুন্দরী যখন বৃদ্ধা, তখন তাঁর মনের অবস্থা বর্ণনা করে শ্রীমা বলেছিলেন, “এক সময় জামাইয়ের সমালোচনা করলেও শেষমেষ মা এখন তাঁকে পুজো করছেন।”

মহাসমাধির আগে শ্রীরামকৃষ্ণ শ্রীমাকে আদেশ দিয়েছিলেন, “তুমি কামারপুকুরে থাকবে, শাক-ভাত খাবে আর হরিনাম করবে। দেখো, কারো কাছে একটি পয়সার জন্য চিতহাত করো না।” শ্রীরামকৃষ্ণের দেহরক্ষার পর তাঁর সেই আদেশ পালন করতে গিয়ে শ্রীমাকে প্রচণ্ড কষ্টের মধ্যে দিন কাটাতে হয়েছে। তখন শ্রীমা শতচ্ছিন্ন কাপড় গিঁট দিয়ে দিয়ে পরতেন, নিজের মাটি কুপিয়ে শাক বুনতেন, সব দিন নুনটুকুও জুটত না। আবার শ্রীরামকৃষ্ণের ভাইপো রামলাল চট্টোপাধ্যায় ষড়যন্ত্র করে দক্ষিণেশ্বর থেকে আসা শ্রীমায়ের সামান্য মাসোহারাটুকুও বন্ধ করে দেন। আদরের মেয়ের দৈন্যদশার কথা শুনে শ্যামাসুন্দরী স্থির থাকতে পারলেন না। শ্রীমাকে যখন জয়রামবাটীতে নিয়ে আসা হল, তখন তাঁর অনাহারক্লিষ্ট চেহারা দেখে শ্যামাসুন্দরী শিউরে ওঠেন। পরে অবশ্য শ্রীরামকৃষ্ণের ভক্তেরা শ্রীমায়ের অবস্থা জেনে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে রাখার সুবন্দোবস্ত করেন।

জয়রামবাটীতে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন শ্যামাসুন্দরীর হাত ধরে। ১৮৭৫ সালে জয়রামবাটীতে প্রথম পুজো শুরু হয়। সে বার গ্রামের কালীপুজোর উদ্যোক্তারা কোনও কারণে শ্যামাসুন্দরীর নিবেদিত পুজোর চাল নিলেন না। শ্যামাসুন্দরীর মনে বড় দুঃখ। সারা রাত জেগে কাঁদেন আর ভাবেন, ‘কালীর জন্য চাল করলাম, নিল না। এ চাল খাবে কে?’ সেই রাতে শ্যামাসুন্দরী স্বপ্নে দেখেন এক রক্তবর্ণা, চতুর্ভুজা, ত্রিনয়নী দেবী তাঁকে জাগিয়ে বলছেন, “কাঁদছ কেন? কালীর চাল আমিই খাব।” শ্যামাসুন্দরী দেবীর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বললেন, “আমি জগদম্বা, জগদ্ধাত্রীরূপে তোমার পূজা নেব।” সে বছর শ্যামাসুন্দরীর গৃহে যে পুজো শুরু হয় তা এখনও মহাসমারোহে পালিত হয়ে চলেছে।

জননীকে খুব ভালবাসতেন শ্রীমা। মেয়ের আগ্রহেই শ্যামাসুন্দরী পুরী, কাশী, বৃন্দাবন দর্শন করেন। জীবনের শেষ পর্বে শ্যামাসুন্দরীকে দেখা যায় অন্য ভূমিকায়। তখন তিনি বিশ্ববন্দিত কন্যার লক্ষাধিক ভক্ত-সন্তানের আদরের ‘দিদিমা’। তাঁর সংসার ‘ভক্ত-ভগবানের’। বর্তমান জয়রামবাটীর ‘মায়ের পুরনো বাড়ি’ ছিল তাঁর আবাস। তাঁর ঘরটি শ্রীমার ঘরের বাঁ দিকে। সেখানে তিনি বছরভর ব্যস্ত থাকতেন তাঁর নাতি-নাতনিদের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখতে। যিনিই জয়রামবাটী যেতেন, তিনি শ্যামাসুন্দরীর স্নেহ-যত্নে মুগ্ধ হতেন। অল্পবয়সি ছেলেদের শ্রীমা সন্ন্যাস দিলে তিনি নাতিদের ভাবী কষ্টসাধ্য জীবনের কথা ভেবে খুব ব্যথিত হতেন। নাতি-নাতনিদের সঙ্গে গল্প করতে গিয়েই শ্রীরামকৃষ্ণ ও শ্রীমার জীবনীর বহু মূল্যবান উপাদান পরিবেশন করেছেন। সকলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল মধুর। শ্রীমায়ের জীবনীকার আশুতোষ মিত্র এক দিন শ্যামাসুন্দরীকে বাগবাজারের নবীন ময়রার রসগোল্লা খাইয়ে জিজ্ঞাসা করেন, “কেমন লাগল দিদিমা?” শ্যামাসুন্দরী উত্তর দেন, “ভাই, ওতে কি মিষ্টি আছে ছাই? একটুকু কাঁচা গুড় দিতে তো খেয়ে বাঁচতুম।”

জগজ্জননী সারদা প্রকৃত অর্থেই ছিলেন তাঁর গর্ভধারিণীর ছায়া। শ্যামাসুন্দরীর শেষ বয়সের আলোকচিত্রটি মাতা-কন্যার চেহারার সাদৃশ্যের প্রত্যক্ষ প্রমাণ। শ্রীমার স্বচ্ছ বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি, কষ্টসহিষ্ণু মনোভাব এবং সরল, করুণাময়ী প্রকৃতির দিকে তাকালে বোঝা যায় গর্ভধারিণীর সমস্ত গুণই কন্যার মধ্যে বর্তমান ছিল। শ্রীমায়ের জনৈক জীবনীকার শ্যামাসুন্দরী সম্বন্ধে লিখেছেন, “দিদিমা বড়ই সরল ও অনলস— দিবারাত্র তাঁহার কাজের বিরাম ছিল না। গুরুসেবা, মজুরদের খাওয়ানো, ধানভানা প্রভৃতি কার্য একটার পর একটা চলিয়াছে; অথচ মুখে সর্বদা হাসি লাগিয়াই আছে— বিরক্তি বা ক্রোধের লেশমাত্র নাই।”

কর্মক্ষম ছিলেন জীবনের অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারির শেষের এক সকাল। শিরোমণিপুরের হাট থেকে তরিতরকারি বেচতে আসা একটি স্ত্রীলোকের কাছ থেকে শ্যামাসুন্দরী কিছু জিনিসপত্র কিনলেন। গ্রামের শিশুদের সঙ্গে অনেক ক্ষণ খেলাধুলো করে ঢেঁকিশালে গিয়ে ধান কুটলেন। তার পর শরীরে অস্বস্তি বোধ হওয়ায় মেজছেলে কালীকুমারের ঘরের দাওয়ায় শুলেন এবং শ্রীমায়ের এক সেবককে ডেকে বললেন, “ভাই, আর বাঁচব না— মাথা কী রকম করছে।” খবর পেয়ে শ্রীমা এসে তাঁকে শৌচে নিয়ে গেলেন। ফিরে এসে তিনি মেয়েকে বললেন, “কুমড়োর ঘ্যাঁট খেতে ইচ্ছে হচ্ছে।”

শ্রীমা বললেন, “কুমড়ো তো ভারী জিনিস। সেরে ওঠো, খাবে।”

“আর খেতে হবে না” বলে শ্যামাসুন্দরী একটু জল চাইলেন। শ্রীমা তাঁর মুখে তিন বার গঙ্গাজল দিলেন। তাঁর মাথায় ও বুকে জপ করে দিলেন। প্রাণাধিক প্রিয় কন্যাকে পাশে রেখে পুণ্যবতী শ্যামাসুন্দরী অমৃতলোকে চলে গেলেন। সকলে দেখলেন, জগজ্জননী সারদা মাতৃহারা হয়ে শিশুর মতো আকুল ভাবে কাঁদছেন। শ্যামাসুন্দরীর সুখ-দুঃখের আমৃত্যু সঙ্গী শ্রীমা গর্ভধারিণীর শেষ ইচ্ছেও অপূর্ণ রাখেননি। শ্যামাসুন্দরীর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের দিন সকলের জন্য ভূরিভোজের ব্যবস্থা করা হয়, খাদ্যতালিকায় অন্যতম পদ ছিল কুমড়োর ঘ্যাঁট।

তথ্যসূত্র: শ্রীশ্রীসারদাদেবী– ব্রহ্মচারী অক্ষয়চৈতন্য; শ্রীমা সারদা দেবী– স্বামী গম্ভীরানন্দ; সারদা-জননী শ্যামাসুন্দরী দেবী– প্রব্রাজিকা প্রবুদ্ধপ্রাণা; শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ সংস্পর্শে– নির্মলকুমার রায়

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement