লম্বায় ১৬ ফুট। ওজন ৭০০ কিলোগ্রাম। সারা বিশ্বে যত কুমির রয়েছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক সে। নাম তার হেনরি। এক শিকারির নামে নামকরণ করা হয়েছে তার।
১৯০০ সালের ১৬ ডিসেম্বর জন্ম হেনরির। ইউনেস্কোর তালিকায় বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে নাম লিখিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার বোৎস্ওয়ানার ওকাভাঙ্গো বদ্বীপ। সেখানেই জন্ম হয় হেনরির।
প্রধানত নীল নদে এই প্রজাতির কুমির দেখতে পাওয়া যায়। আফ্রিকার ২৬টি দেশ জুড়ে এই কুমির দেখতে পাওয়া যায়। প্রাণীবিদদের মতে, নীল নদের কুমির অত্যন্ত হিংস্র স্বভাবের হয়।
প্রাণীবিদদের অধিকাংশের দাবি, সাধারণত নীল নদের কুমিরেরা জ়েব্রা এবং সজারুর মতো প্রাণীদের খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে। শুধু তাই নয়, আশপাশে কোনও বসতি থাকলে সেখানেও আক্রমণ করে কুমিরেরা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, নীল নদের কুমিরের আক্রমণে প্রতি বছর অন্তত ১০০ জন প্রাণ হারান। জন্মের পর হেনরিও জনবসতিতে ঢুকে আক্রমণ করতে শুরু করেছিল।
হেনরির যেখানে জন্ম হয়েছিল, তার কাছাকাছি এলাকায় এক আদিবাসী জাতির বাস ছিল। কানাঘুষো শোনা যায়, সেই এলাকায় গিয়ে অনেক শিশুকে খেয়ে ফেলেছিল হেনরি। ভয় পেয়ে এক শিকারিকে খবর পাঠিয়েছিলেন আদিবাসীরা।
হেনরি নিউম্যান নামে সেই শিকারিকে ডেকে বোৎস্ওয়ানার আদিবাসীরা কুমিরটিকে মেরে ফেলার অনুরোধ করেন। ১৯৯৩ সালে বোৎস্ওয়ানায় যান হেনরি। কিন্তু কুমিরটিকে মারেন না তিনি।
হেনরি কুমিরটিকে না মারার সিদ্ধান্ত নেন। তার পরিবর্তে কুমিরটিকে সারা জীবন বন্দি রাখার কথা ভাবেন তিনি। শিকারির নামানুসারে কুমিরের নাম রাখা হয় হেনরি।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্কটবার্গ এলাকায় একটি চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাওয়া হয় হেনরিকে। তিন দশক ধরে সেই চিড়িয়াখানায় রয়েছে সে।
চিড়িয়াখানায় হেনরিকে দেখতে ভিড় জমে দর্শকের। শোনা যায়, সেখানে সঙ্গিনীর অভাব হয়নি হেনরির।
হেনরির মোট ছ’টি সঙ্গিনী রয়েছে। সকলেই হেনরির সঙ্গে ওই চিড়িয়াখানায় থাকে।
ছয় সঙ্গিনীর সঙ্গে বহু সন্তানও রয়েছে হেনরির। শোনা যায়, হেনরির সন্তানের সংখ্যা ১০ হাজার।
১২৩ বছর বয়সি হেনরি এখনও পর্যন্ত বিশ্বের কুমিরের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক।