হাইড্রোজেন চালিত ট্রেন পরিষেবা শুরু করেছে চিন। চিনের ‘সিআরআরসি কর্পোরেশন লিমিটেড’ সম্প্রতি ‘হাইড্রোজেন আরবান ট্রেন’ চালু করেছে। যা এশিয়ার প্রথম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় এই ধরনের ট্রেন।
কয়েক মাস আগে জার্মানিতে প্রথম হাইড্রোজেন চালিত ‘সবুজ ট্রেন’ চালু করা হয়েছিল। তার পরে এই ট্রেন চিনে চালু করা হয়। খুব শীঘ্র ভারতেও সবুজ ট্রেন চলবে বলে রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর।
চিনের হাইড্রোজেন ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি প্রতি ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার। জ্বালানি শেষ হয়ে গেলেও ছুটে যেতে পারে ৬০০ কিমি।
অন্য দিকে, জার্মানির ট্রেন নির্মাণকারী সংস্থা ‘অ্যালস্টম’-এর দাবি, সেই দেশের সবুজ ট্রেন ‘করাডিয়া ইলিন্ট’ জ্বালানি ছাড়াই ছুটে যেতে পারে ১১৭৫ কিলোমিটার।
ভারতীয় রেলও ‘বিশ্বের সবুজতম ট্রেন’ চালু করার দিকে এগোচ্ছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ভারতে প্রথম হাইড্রোজেন চালিত ট্রেন চালু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
মন্ত্রী অশ্বিনীর মতে, ‘বন্দে ভারত’ এক্সপ্রেসের মতো ভারতীয় রেল নতুন পরিবেশবান্ধব এবং গতিযুক্ত রেলের উপর কাজ করছে। ইঞ্জিনিয়াররাও রেলের নতুন নতুন নকশা তৈরি করছেন।
অশ্বিনী উল্লেখ করেছেন, ‘‘ভারতে তৈরি ‘বিশ্বের সবুজতম ট্রেন’-এর নকশা তৈরির প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই চলছে। আমরা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে প্রথম হাইড্রোজেন ট্রেন চালু করতে পারব বলে আশা করছি।’’
চিনের হাইড্রোজেন ট্রেনটি ‘ফাক্সিং হাই-স্পিড প্ল্যাটফর্ম’ প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়েছে। ‘সিআরআরসি কর্পোরেশন লিমিটেড’ ২০২১ সালে প্রথম এই ধরনের ট্রেন পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করেছিল।
তারও আগে ২০১০-এর মাঝামাঝি কয়েকটি হাইড্রোজেন চালিত ট্রাম তৈরি করা হয়েছিল।
চিনের এই ট্রেনে থাকবে অত্যাধুনিক সেন্সর প্রযুক্তি। প্রতিটি কামরায় ৫জি ইন্টারনেট পরিষেবা থাকবে।
মনে করা হচ্ছে এই ট্রেনের ব্যবহারে প্রতি বছর কার্বন নির্গমনের পরিমাণ ১০ টন অবধি কমবে।
বিশ্বের প্রথম হাইড্রোজেন ট্রেন চালু হয় জার্মানিতে। জার্মান সরকার জানিয়েছে, ১৫টি ডিজেল ট্রেন সরিয়ে ১৫টি নতুন হাইড্রোজেন ট্রেন চালু হয়েছে সে দেশে।
হাইড্রোজেনকে পরিবহণ শিল্পে জীবাশ্ম জ্বালানির একটি শক্তিশালী প্রতিস্থাপন হিসাবে দেখা হচ্ছে। গাড়িতে ব্যবহারের জন্য ছোট আকারের জ্বালানি কোষও তৈরি করা হচ্ছে।
নয়া এই হাইড্রোজেন প্রযুক্তি পণ্য হিসাবে বিক্রি করা নিয়ে চিন্তাভাবনা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এই প্রযুক্তিকে পাকাপাকি ভাবে বাজারে আনতে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার বলেও বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।
এই হাইড্রোজেন চালিত ট্রেনগুলিতে দূষণের মাত্রা অত্যন্ত কম হওয়ার কারণেই ট্রেনগুলিকে ‘গ্রিন ট্রেন’ বা ‘সবুজ ট্রেন’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তবে এর মধ্যে সব থেকে কম দূষণযুক্ত ট্রেনগুলি ভারতেই তৈরি হতে চলেছে বলে রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর।