Amazon River

মানুষখেকো মাছ, বিষাক্ত ব্যাঙ! সব আছে, শুধু একটি জিনিসেই ‘অরুচি’ আমাজ়নের

বিশ্বের বৃহত্তম নদী আমাজ়ন। দৈর্ঘ্যের বিচারে দ্বিতীয়। যাত্রাপথে মোট ছ’টি দেশকে ছুঁয়ে গিয়েছে এই নদী। অতিক্রম করেছে ৬,৪০০ কিলোমিটার পথ। কিন্তু এই নদীতে একটি জিনিস নেই।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:২২
Share:
০১ ২০
There is no bridge on the Amazon river.

আমাজ়ন। বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী। জলবহনের বিচারে তাকে সবচেয়ে বড় নদীর তকমা দেওয়া হয়। মোট ছ’টি দেশের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে এই নদী। প্রবল জলরাশির মাঝে অনেক রহস্য লুকিয়ে রেখেছে আমাজ়ন।

০২ ২০
There is no bridge on the Amazon river.

আমাজ়ন নদীর দৈর্ঘ্য ৬,৪০০ কিলোমিটার। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ৪০ শতাংশ জুড়ে রয়েছে এই নদী। যাত্রাপথে ছুঁয়ে গিয়েছে ব্রাজিল, পেরু, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, ভেনেজ়ুয়েলা এবং কলম্বিয়া।

Advertisement
০৩ ২০
There is no bridge on the Amazon river.

দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর-পশ্চিম দিকে পেরুতে অবস্থিত আন্দিজ় পর্বত থেকে আমাজ়নের উৎপত্তি। পশ্চিম থেকে ক্রমশ পূর্ব দিকে ঢাল বরাবর বয়ে গিয়েছে নদীটি। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে পূর্বে অতলান্তিক মহাসাগরে মিশেছে।

০৪ ২০

সুদীর্ঘ যাত্রাপথে পরতে পরতে রহস্য, রোমাঞ্চের জন্ম দেয় আমাজ়ন। নদী সংলগ্ন এলাকা জঙ্গলে ঘেরা। আমাজ়ন নদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে বিশ্বের বৃহত্তম, গভীরতম রেনফরেস্ট।

০৫ ২০

এই নদী এবং জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় এমন কিছু প্রাণী এবং উদ্ভিদ রয়েছে, পৃথিবীর আর কোথাও যাদের দেখা মেলে না। মানুষখেকো পিরান্‌হা মাছ, বিষাক্ত ব্যাঙ, অ্যানাকোন্ডার মতো ভয়ঙ্কর প্রাণীর ঠিকানা এই আমাজ়ন।

০৬ ২০

এত দীর্ঘ নদীতে রহস্যের অভাব না থাকলেও একটা খামতি থেকেই গিয়েছে। আমাজ়নের উপরে কোথাও কোনও সেতু নেই। আজ পর্যন্ত কেউ কোনও সেতু এই নদীর উপরে নির্মাণের চেষ্টাও করেননি।

০৭ ২০

কিন্তু কেন? সেতুতে কেন ‘অরুচি’ আমাজ়নের? যে কোনও বড় গুরুত্বপূর্ণ নদীর উপরেই সেতু তৈরি করে এক দিক থেকে অন্য দিকে যাওয়ার বন্দোবস্ত করে নেয় মানুষ। আমাজ়ন কেন ব্যাতিক্রম?

০৮ ২০

অনেক ছোট নদীর উপরেও সেতু তৈরি করে যাতায়াত সুগম করা হয়। আমাজ়নের মতো দীর্ঘ নদীতে সেই ঝুঁকি নেননি কেউ। এর অন্যতম বড় কারণ, আমাজ়নের অস্থির আচরণ।

০৯ ২০

সাধারণ ভাবে আমাজ়ন নদীর প্রস্থ যতটুকু, বর্ষায় তা হয়ে যায় ১০ গুণ। বৃষ্টির জল পড়লে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি প্রশস্ত হয়ে ওঠে এই নদী। তখন তার সম্পূর্ণ অন্য রূপ প্রকাশ্যে আসে।

১০ ২০

জানুয়ারি মাসে আমাজ়নের প্রস্থ থাকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। বর্ষায় তা-ই ৫০ কিলোমিটারের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে। দু’কূল ভাসিয়ে অনেক চওড়া হয়ে ওঠে নদী। জল অনেক বেড়ে যায়। তাই আমাজ়নের উপত্যকা সেতু তৈরির উপযুক্ত নয়।

১১ ২০

বর্ষায় আমাজ়নের জল বেড়ে গিয়ে নদী বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে বইতে শুরু করে। সেই সময় তার উপরে তৈরি সেতু জলে ভেসে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সেতু তৈরি হলে বর্ষায় তা কাজে লাগানোও সম্ভব নয়।

১২ ২০

আমাজ়নের উপত্যকায় খুব বড় কোনও শহর গড়ে ওঠেনি। শহরাঞ্চলে যাতায়াত ব্যবস্থার প্রয়োজনেই মূলত সেতু দরকার হয়। এই নদীর চারপাশে রয়েছে ঘন জঙ্গল। সেতু ব্যবহার করার মানুষ নেই।

১৩ ২০

মানুষের সুবিধার্থেই সেতু তৈরি করার প্রয়োজন হয়। আর আমাজ়ন উপত্যকার অধিকাংশই জনবিরল। জঙ্গলে তো নয়ই, সংলগ্ন শহরেও ঘন জনবসতি গড়ে ওঠেনি।

১৪ ২০

চাহিদার অভাবই আমাজ়নে সেতু না তৈরি হওয়ার অন্যতম কারণ। দীর্ঘ নদীর যাত্রাপথে কোথাও সেতুর প্রয়োজন হয় না। শহরের উপর দিয়ে নদীর যেটুকু অংশ গিয়েছে, সেখানে প্রয়োজন মতো নদী পারাপারের ফেরি পরিষেবা চালু আছে।

১৫ ২০

আমাজ়ন নদীর গভীরতা অনেক বেশি। এর চারপাশের জমিও অত্যন্ত নরম। তাই এই নদীর উপরে সেতু তৈরি করতে গেলে অনেক গভীর এবং পোক্ত ভিত্তি স্থাপন করতে হবে। যা ব্যয়সাপেক্ষ।

১৬ ২০

নরম মাটির কারণে আমাজ়ন উপত্যকা ভঙ্গুর। সহজেই সেখানে ধস নামে। বার বার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জন্ম নেয় ছোট ছোট ভাসমান দ্বীপ। সেতু তৈরি করলেও তা প্রতি বছর ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।

১৭ ২০

সেতু দু’টি রাস্তাকে যুক্ত করে। কিন্তু আমাজ়নের পাশে যুক্ত করার মতো তেমন রাস্তাও নেই। এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত নয়। জঙ্গল কেটে রাস্তা তৈরি করতে গেলে আমাজ়ন তথা সমগ্র বিশ্বের পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

১৮ ২০

আমাজ়ন সংলগ্ন দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলিতে দারিদ্র অন্যতম বড় সমস্যা। আমাজ়নে সেতু তৈরি করার মতো অর্থনৈতিক সামর্থ্য সরকারের নেই। সেতু সেখানে বিলাসিতার চেয়ে বেশি কিছু নয়।

১৯ ২০

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী এবং তাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অরণ্যে এমন কিছু প্রজাতির প্রাণী এবং উদ্ভিদ রয়েছে, যা পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না।

২০ ২০

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, আমাজ়নকে তাই তার মতো করেই থাকতে দেওয়া ভাল। জল ঘেঁটে সেতু তৈরি করে নদীর স্বাভাবিক গতিতে বিঘ্ন সৃষ্টি করার পক্ষপাতী নন অনেকেই।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement