অগস্ট মাসে মুক্তি পেয়েছে দক্ষিণী সুপারস্টার রজনীকান্তের ছবি ‘জেলর’। মুক্তির ১০ দিনের মাথায় ছবিটি বক্স অফিস থেকে ৫০০ কোটি টাকার ব্যবসাও করে ফেলেছে। কিন্তু রজনীকান্ত সাফল্যের স্বাদ পেলেন কি? তিনি যে মুক্তির স্বাদ পেতে পাড়ি দিয়েছেন হিমালয়ের কোলে।
সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে রজনীকান্তের হিমালয়যাত্রার ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। অভিনেতার দাবি, চার বছর পর হিমালয়ে গিয়েছেন তিনি।
হিমালয়ে ঘোরার জন্য নয়, বরং রজনীকান্তের হিমালয়যাত্রাকে আধ্যাত্মিক যাত্রা বলা যেতে পারে। অভিনেতা মন্দির দর্শন করতে গিয়েছেন। এমনকি কয়েকটি আধ্যাত্মিক বৈঠকও করতে দেখা গিয়েছে রজনীকান্তকে।
২০১৮ সালে ‘কালা’ ছবিটি মুক্তির আগেও হিমালয়ে গিয়েছিলেন রজনীকান্ত। অভিনেতার ঘনিষ্ঠ মহলের খবর, নিজের ছবিমুক্তির আগে হিমালয় যেতে পছন্দ করেন অভিনেতা।
কিন্তু কেরিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কেন নিজেকে আলোর রোশনাই থেকে দূরে সরিয়ে নেন রজনীকান্ত? হিমালয়ের সঙ্গেই বা কিসের যোগসূত্র অভিনেতার?
মহাবতার বাবাজির একনিষ্ঠ ভক্ত হিসাবে নিজের পরিচয় দেন রজনীকান্ত। সেই টানেই বার বার নিজের ছবি মুক্তির সময় হিমালয়ে যান তিনি। অভিনেতার দাবি, মহাবতার বাবাজির জীবন দর্শন মেনে চলার ফলে তাঁর জীবনেও ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।
পরমহংস যোগানন্দের লেখা ‘অটোবায়োগ্রাফি অফ আ যোগী’ বইটি পরে মহাবতার বাবাজি প্রসঙ্গে জানতে পারেন রজনীকান্ত। ১৯৯৯ সালে রজনীকান্ত প্রথম এই বইটি পড়েছিলেন।
রজনীকান্ত বলেন, ‘‘বইটিতে মহাবতার বাবাজির একটি ছবি রয়েছে। বইটি পড়ার সময় সেই ছবি আমার চোখে পড়ে। দেখলাম ছবি থেকে উজ্জ্বল জ্যোতি ঠিকরে বার হচ্ছে।’’
রজনীকান্তের দাবি, জ্যোতি থেকে নাকি এক কণ্ঠস্বরও ভেসে আসে। সেই কণ্ঠ রজনীকান্তকে মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসার নির্দেশ দেয়। নির্দেশ মেনে বসার পর সেই জ্যোতি নাকি অভিনেতার শরীরের ভিতর প্রবেশ করে বলে জানান রজনীকান্ত।
কানাঘুষো শোনা যায়, পরমহংস যোগানন্দের গুরু ছিলেন মহাবতার বাবাজি। দ্বিতীয় শতকে তামিলনাড়ুতে জন্ম মহাবতার বাবাজির। তার পর তিনি হৃষীকেশে চলে যান বলে শোনা যায়।
কুমায়ুনের আলমোরা জেলার দুনাগিরি এলাকা থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে একটি পাহাড়ি গুহায় আস্তানা গড়ে তোলেন। সেই গুহাতেই মহাবতার বাবাজির একটি মন্দির তৈরি করা হয়। এই মন্দির দর্শনেই যান রজনীকান্ত।
কানাঘুষো শোনা যায়, মহাবতার বাবাজিকে ১৮৬১ সাল থেকে ১৮৬৫ সালের অন্তর্বর্তী সময়ে হিমালয়ে শেষ বারের মতো দেখা গিয়েছিল।
মহাবতার বাবাজিকে ‘অমর’ বলে পরিচয় দেন তাঁর ভক্তেরা। এমনকি রজনীকান্তও তাই দাবি করেন। ২০০২ সালে তিনি ‘বাবা’ নামে একটি ছবিতে অভিনয় করেন। সেই ছবির প্রযোজনার দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।
ভক্তির কারণেই প্রায় প্রতিটি ছবির মুক্তির আগে হিমালয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন রজনীকান্ত। সেখানে কিছুটা সময় কাটিয়ে আবার বিনোদনের জগতে ফিরে যান তিনি।