আশির দশক থেকেই বলিপাড়ার জনপ্রিয় নায়ক হয়ে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলেন সঞ্জয় দত্ত। কিন্তু বিতর্ক কখনওই তাঁর পিছু ছাড়েনি। কখনও মাদককাণ্ডে নিজের নাম জড়িয়েছেন, কখনও বেআইনি ভাবে অস্ত্র রাখার অপরাধে জেলে কাটিয়েছেন বহু বছর।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, কেরিয়ারের শুরুতে ঋষি কপূরের প্রতি ক্ষুব্ধ হন সঞ্জয়। এমনকি, ঋষিকে মারবেন বলে তাঁর বাড়িতেও চলে গিয়েছিলেন অভিনেতা। তবে এই ঘটনার নেপথ্যে ছিল এক নারীচরিত্র।
শিল্পপতি অনিল অম্বানীর স্ত্রী টিনা মুনিম অম্বানী আশির দশকের জনপ্রিয় নায়িকা ছিলেন। বলিপাড়া সূত্রে খবর, অভিনেত্রী টিনা মুনিমের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন সঞ্জয়। ছোটবেলা থেকেই একে অপরকে চিনতেন দুই তারকা। সঞ্জয়ের কেরিয়ারের প্রথম ছবি ‘রকি’তে পর্দায় জুটি বেঁধেছিলেন এই জুটি।
এক সাক্ষাৎকারে টিনা প্রসঙ্গে সঞ্জয় বলেন, ‘‘মা মারা যাওয়ার পর আমার জীবনে সেই জায়গা নিয়েছিল টিনা। ও কখনও আমাকে পরিবারের থেকে দূরে সরাতে চায়নি। বাবা বা ভাইয়ের সঙ্গে আমার ঝগড়া হলে টিনা বার বার আমাকে সেই ঝামেলা মিটিয়ে নিতে বলত।’’
টিনার সঙ্গে সঞ্জয়ের সম্পর্ক বলিপাড়ায় গোপন থাকেনি। তবে দুই তারকার সম্পর্কে চিড় ধরে। সঞ্জয়ের সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টানেন টিনা। বলিপাড়ার একাংশের অনুমান, সঞ্জয় বেশির ভাগ সময় মত্ত অবস্থায় থাকতেন। এমনকি, অভিনেতা বদমেজাজি ছিলেন বলেও কানাঘুষো শোনা যায়। এই সব কারণেই নাকি সঞ্জয়কে ছেড়ে চলে যান টিনা।
সঞ্জয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর টিনা হঠাৎ ঋষির সঙ্গে একের পর এক ছবিতে অভিনয় করতে শুরু করেন। ‘কর্জ’, ‘ইয়ে ওয়াদা রহা’, ‘বড়ে দিলওয়ালা’র মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে জুটি বাঁধেন ঋষি এবং টিনা।
আশির দশকে বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যেত, ঋষির সঙ্গে যে অভিনেত্রী কাজ করতেন, অভিনেতা নাকি তাঁর সঙ্গেই পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়তেন। এই কথা সঞ্জয়ের কানে পৌঁছতেও দেরি হয়নি।
টিনা এবং ঋষির পরকীয়া সম্পর্কের কথাও জানতে পারেন সঞ্জয়। শোনামাত্রই ঋষিকে মারতে তাঁর বাড়িতে যান অভিনেতা।
সঞ্জয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গুলশন গ্রোভার এক সাক্ষাৎকারে দুই তারকার ঝামেলা নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি জানান, টিনার সঙ্গে ঋষির সম্পর্ক রয়েছে শুনে তাঁর বাড়িতেই চলে যান সঞ্জয়। ঋষিকে মারতেও চেয়েছিলেন তিনি।
গুলশন বলেন, ‘‘সঞ্জয় আমাকে নিয়েই ঋষির বাড়িতে গিয়েছিল। ওখানে গিয়ে ঋষির উপর চড়াও হয় ও। ঋষির গায়ে হাত তোলার উপক্রম হওয়ায় পরিস্থিতি সামলাতে আসেন নীতু। নীতুই জানান যে, টিনার সঙ্গে ঋষির কোনও সম্পর্ক নেই। সত্যি শোনার পর শান্ত হয়েছিল সঞ্জয়।’’
পরে অবশ্য ঋষি এবং সঞ্জয়ের মধ্যে সম্পর্ক ভাল হয়ে যায়। দু’জনকে একসঙ্গে একাধিক ছবিতে কাজও করতে দেখা গিয়েছে। এমনকি, ঋষি-পুত্র রণবীরকে বড় পর্দায় ‘সঞ্জু’ ছবিতে সঞ্জয় দত্তের চরিত্রে অভিনয় করতেও দেখা গিয়েছে।
ঋষির মৃত্যুর খবর পেয়ে ভেঙে পড়েন সঞ্জয়। ইনস্টাগ্রামে ঋষির মৃত্যুর ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমি আমার পরিবারের সদস্য, আমার বড় ভাইকে হারালাম। তুমি যে এই পৃথিবীতে নেই, তা কিছুতেই মানতে পারছি না। তোমার কাছ থেকে শিখেছি, জীবনে যে পরিস্থিতিই আসুক না কেন, হাসিমুখে তার সম্মুখীন হতে হয়।’’
তবে টিনার সঙ্গে সঞ্জয়ের ভাঙা সম্পর্ক আর জোড়া লাগেনি। কানাঘুষো শোনা যায়, সঞ্জয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর রাজেশ খন্নার সঙ্গে নাকি সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন টিনা। পরে অনিলকে বিয়ে করে অম্বানী পরিবারের পুত্রবধূ হন টিনা।