২৪ ডিসেম্বর। বড়দিনের আগের দিন ‘নিকা’ করলেন পাকিস্তানের পেসার হ্যারিস রউফ। তাঁর বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল খেলোয়াড়খচিত।
শাহিন শাহ আফ্রিদি, শাহিদ আফ্রিদি, সামিন রানা, আতিফ রানা, আকিব জাভেদ-সহ পাকিস্তানের নামকরা ক্রিকেটাররা উপস্থিত ছিলেন হ্যারিসের বিয়ের অনুষ্ঠানে। সকলে সমাজমাধ্যমে পেসার এবং তাঁর স্ত্রী মুজ়না মাসুদ মালিককে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
হ্যারিসের বিয়ের ছবি প্রকাশ্যে আসতেই তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে অনুরাগীদের মধ্যে কৌতূহল জেগেছে। ইতিমধ্যেই মুজ়নাকে সমাজমাধ্যমে খুঁজে ফেলেছেন অনেকে। তার কারণও রয়েছে।
বিয়ের দিন হাতের মেহন্দির মাঝে মুজ়না লিখেছেন তাঁর স্বামীর নামের প্রথম দু’টি অক্ষর। কিন্তু তাতে আর নতুন কী! এ তো সচরাচর দেখাই যায়। মুজ়না নজর কাড়লেন অন্য ভাবে।
হ্যারিসের নামের পাশে তাঁর বলের গতিও লিখে রেখেছেন মুজ়না। হ্যারিস নিয়মিত ১৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে বল করতে পারেন। তাই হ্যারিসের নাম এবং পদবির আদ্যক্ষরের পর ১৫০ জুড়ে দিয়ে লিখেছেন ‘এইচআর১৫০’। এর পরেই আরও চর্চা হচ্ছে মুজ়নাকে নিয়ে।
হ্যারিসের সহপাঠী ছিলেন মুজ়না। দু’জনের বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। শেষ পর্যন্ত গত ২৪ ডিসেম্বর গাঁটছড়া বাঁধেন দু’জনে।
১৯৯৭ সালে ইসলামাবাদে জন্ম মুজ়নার। পড়াশোনার সূত্রে পাকিস্তানেই থেকেছেন তিনি। ইসলামাবাদের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণমাধ্যম নিয়ে পড়াশোনা করছেন।
পড়াশোনার পাশাপাশি মডেলিংয়ের দিকেও ঝোঁক রয়েছে মুজ়নার। নামী পোশাক তৈরির সংস্থার সঙ্গে যুক্ত তিনি।
অধিকাংশের দাবি, চাইনিজ অ্যাপ টিকটকে মুজ়নাকে প্রায়শই দেখা যায়। তাঁর অনুরাগীর সংখ্যাও কম নয়।
অনেকে বলেন, প্রভাবী বা ‘সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার’ হয়েও কাজ করেন মুজ়না। তবে বিয়ের পরের দিন হ্যারিস একটি টুইট করে নেটব্যবহারকারীদের নজর কাড়েন।
হ্যারিস টুইট করে জানান যে, তাঁর স্ত্রী মুজ়না কোনও সমাজমাধ্যম ব্যবহার করেন না। কোনও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট নেই তাঁর। মুজ়নার নামে যদি অন্য কোনও অ্যাকাউন্ট খোলা হয়, তবে তা নকল— সে কথাও জানিয়ে দিয়েছেন হ্যারিস। বিয়ে উপলক্ষে যাঁরা শুভেচ্ছা এবং ভালবাসা জানিয়েছেন তাঁদের ধন্যবাদ জানাতেও ভুললেন না হ্যারিস।
শুধু বিয়ের ছবি বা ভিডিয়োতেই নয়, হ্যারিসের ছবি জনপ্রিয় হয়েছে ক্রিকেটের মাঠেও। চলতি বছরে এশিয়া কাপের ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচের দৃশ্য। বাউন্ডারির ধারে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন বিরাট কোহলি এবং হ্যারিস।
তখনই হ্যারিসকে নিজের একটি জার্সি উপহার দেন কোহলি। তাতে সইও করে দেন। পুরো ঘটনাটির ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিল বিসিসিআই। সঙ্গে সঙ্গে সমাজমাধ্যমে তা ছড়িয়েও পড়েছিল।
কোহলির অনুরাগীদের মনে তখন অবশ্য অন্য একটি দৃশ্য ঘুরপাক খাচ্ছিল। টি২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জেতার জন্য ভারতের ৮ বলে ২৮ রান দরকার ছিল। ঠিক তখনই হ্যারিসকে পর পর দুটো ছক্কা মেরেছিলেন কোহলি। ওই দুই ছক্কা মেরে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন কোহলি।
কিন্তু কোহলির কাছে ছক্কা খেয়েও কষ্ট পাননি হ্যারিস। কেন? সে কথা জানিয়েছিলেন পাকিস্তানের পেসার। পাকিস্তানের এক সংবাদমাধ্যমে কোহলির সেই জোড়া ছক্কা নিয়ে হ্যারিস বলেছিলেন, ‘‘কোহলি যে ভাবে বিশ্বকাপে খেলেছে তাতে ও নিজের জাত চিনিয়েছে। আমরা সবাই জানি ও কী রকম শট খেলতে পারে। কোহলি ছাড়া আমার বলে ওই শট কেউ মারতে পারত না।’’
তবে কোহলির বদলে অন্য কেউ তাঁকে ছক্কা মারলে তিনি মেনে নিতে পারতেন না বলে জানিয়েছিলেন হ্যারিস। পাক পেসার বলেছিলেন, ‘‘কোহলির বদলে যদি হার্দিক পাণ্ড্য বা দীনেশ কার্তিক আমাকে ছক্কা মারত তা হলে খারাপ লাগত। কষ্ট পেতাম। কোহলি অন্য জাতের ক্রিকেটার বলে অতটা কষ্ট পাইনি।’’
সম্প্রতি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ফিল্ডিং করার সময় বলের উপর পড়ে যান হ্যারিস। ডান পায়ের ঊরুতে চোট লাগে তাঁর। পরে তাঁর এমআরআই করা হয়। তখন দেখা যায় ঊরুর পেশিতে গ্রেড ২ পর্যায়ের চোট লেগেছে।
এই অবস্থায় তাঁকে নিয়ে আর ঝুঁকি নিতে চায়নি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। চোটের কারণে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ় থেকে ছিটকে গিয়েছেন তিনি।