Houthis in Israel-Hamas War

ইজ়রায়েল বা আমেরিকা নয়, লক্ষ্য অন্য ‘শত্রু’! কাকে বিপদে ফেলতে যুদ্ধে যোগ দিল ইয়েমেন?

পশ্চিম এশিয়ায় ইজ়রায়েল এবং হামাসের দ্বন্দ্বে সম্প্রতি জড়িয়ে গিয়েছে ইয়েমেনের নাম। ইজ়রায়েল থেকে প্রায় ২০০০ কিলোমিটার দূরের দেশটি থেকে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে হুথি গোষ্ঠি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৫৭
Share:
০১ ২২
Who are the Houthis and why they entered Israel-Hamas war

এশিয়ার পশ্চিম প্রান্তের একেবারে দক্ষিণে ছোটখাটো দেশ ইয়েমেন। তার দক্ষিণে আরব সাগর, পশ্চিমে লোহিত সাগর এবং উত্তর সীমান্ত জুড়ে রয়েছে সৌদি আরব। পশ্চিম এশিয়ায় ইজ়রায়েল এবং হামাসের দ্বন্দ্বে সম্প্রতি জড়িয়ে গিয়েছে এই দেশটির নামও।

০২ ২২
Who are the Houthis and why they entered Israel-Hamas war

গত ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েল ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালায় প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। তারা ইজ়রায়েলি নাগরিকদের পণবন্দি হিসাবে গাজ়ায় নিয়ে যায়। এর পরেই হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইজ়রায়েল।

Advertisement
০৩ ২২
Who are the Houthis and why they entered Israel-Hamas war

ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হামাসকে সমূলে বিনষ্ট করার হুঁশিয়ারি দেন। জানান, পণবন্দিদের মুক্ত করে হামাসকে গাজ়া থেকে না সরানো পর্যন্ত যুদ্ধ থামাবেন না তাঁরা।

০৪ ২২

তার পর থেকে পশ্চিম এশিয়া মৃত্যুমিছিল দেখছে। ক্রমে তা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। গাজ়ায় ঢুকে ইজরায়েলি বাহিনী ক্রমাগত হামলা চালাচ্ছে হামাসের উপর।

০৫ ২২

যুদ্ধে প্রথম থেকেই আমেরিকাকে পাশে পেয়েছে ইজ়রায়েল। আমেরিকা হামাসের হামলার নিন্দা করে নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছে। একাধিক পশ্চিমি দেশের সমর্থনও পেয়েছে ইজ়রায়েল।

০৬ ২২

তবে আরব দেশগুলির এই যুদ্ধে ইজ়রায়েলের পক্ষে নয়। তারা গাজ়ায় যুদ্ধের তাণ্ডব ভাল চোখে দেখছে না। একাধিক বার যুদ্ধবিরতির ডাক এসেছে আরবের তরফে। আমেরিকাও ত্রাণকার্যের জন্য ইজ়রায়েলকে যুদ্ধ সাময়িক ভাবে থামাতে বলেছিল। তবে সে কথা মানেননি নেতানিয়াহু।

০৭ ২২

এই পরিস্থিতিতে হামাসকে সাহায্য করছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজ়বুল্লা। তারা ইরান সমর্থিত। ইজ়রায়েলি ফৌজের ঘাঁটি লক্ষ্য করে একাধিক হামলা চালিয়েছে হিজ়বুল্লা। তারা কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, বন্দুকের নলে তারা আঙুল চাপিয়েই রেখেছে। অবিলম্বে গাজ়ায় আক্রমণ না থামালে আরও বড় সংঘর্ষের মুখে পড়তে হবে ইজ়রায়েলকে।

০৮ ২২

যুদ্ধ নিয়ে ইজ়রায়েলের অটল সিদ্ধান্তে পশ্চিম এশিয়ার সঙ্কট আরও তীব্র হচ্ছে। একাধিক দেশের অংশগ্রহণে যুদ্ধ আগামী দিনে আঞ্চলিক যুদ্ধের আকার নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। আরও বৃদ্ধি পাবে যুদ্ধের পরিধি।

০৯ ২২

হিজ়বুল্লার মতো ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথিও হামাসের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে। ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে তারা। শুরু হয়ে গিয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ।

১০ ২২

কিন্তু কেন? ইজ়রায়েল-হামাসের দ্বন্দ্বে হুথির ভূমিকা কী? কেনই বা তারা ইজ়রায়েলের বিপক্ষে গিয়ে যুদ্ধে নাক গলাতে চায়? বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, হুথির লক্ষ্য ইজ়রায়েল হলেও ‘টার্গেট’ আসলে অন্য।

১১ ২২

আসলে, হুথি সৌদি আরবের বিরোধিতা করতে চায়। ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে পড়শি দেশকে বিব্রত করাই তার মূল লক্ষ্য বলে মনে করছেন অনেকে। এ ভাবে ইয়েমেন আসলে রাজনৈতিক যুদ্ধ শুরু করেছে।

১২ ২২

ইয়েমেন থেকে ইজ়রায়েলের দূরত্ব ২০০০ কিলোমিটারেরও বেশি। তাদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে ইজ়রায়েলের বড় কোনও ক্ষতির আশঙ্কা নেই। লোহিত সাগর পেরিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র ইজ়রায়েল পর্যন্ত পৌঁছনোই কঠিন।

১৩ ২২

লোহিত সাগরে দু’টি প্রতিবন্ধক রয়েছে হুথির জন্য। আমেরিকার নৌবাহিনী হুথির একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ইতিমধ্যেই ধ্বংস করে দিয়েছে। যদিও তাতে আক্রমণ থামেনি। আমেরিকার বাধা কাটিয়ে উঠতে পারলে ইজ়রায়েলের নৌবাহিনী দাঁড়িয়ে আছে লোহিত সাগরের সীমান্তে।

১৪ ২২

আক্রমণের ধার বৃদ্ধি করতে না পারলেও হুথিরা ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। তার অন্যতম কারণ সৌদিকে অস্বস্তিতে ফেলা। সৌদির সঙ্গে তাদের বিরোধ বেশ পুরনো।

১৫ ২২

ইয়েমেন অন্তর্দ্বন্দ্বে জর্জরিত একটি দরিদ্র দেশ। সেখানে প্রায়ই গৃহযুদ্ধ লেগে থাকে। আর ইয়েমেনের এই ‘ঘরের’ যুদ্ধে বাইরে থেকে মদত দেয় একাধিক শক্তি। সৌদির বিরুদ্ধেও এই অভিযোগ দীর্ঘ দিনের।

১৬ ২২

সৌদি আরব আমেরিকা সমর্থিত একটি দেশ। আমেরিকার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভাল। অভিযোগ, সৌদি তাদের ভূখণ্ড থেকে আমেরিকার অঙ্গুলিহেলনে এক সময় ১০ লক্ষের বেশি ইয়েমেনি শ্রমিককে কর্মচ্যুত করেছে।

১৭ ২২

দরিদ্র দেশটির উপর এর অভিঘাত ছিল মারাত্মক। বেকারত্ব দেশকে গ্রাস করে। দেখা দেয় প্রাণঘাতী দুর্ভিক্ষ। ইয়েমেনের সমর্থনে আসরে নামে ইরান। সৌদি এবং ইরানের মধ্যে ইয়েমেনকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব ক্রমে বড় আকার নেয়।

১৮ ২২

২০১৪ সালে ইয়েমেনে পুরোদস্তুর গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। যার এক দিকে ছিল সৌদি সমর্থিত গোষ্ঠী এবং অন্য দিকে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী (হুথি)। সেই যুদ্ধে এক লক্ষের বেশি শিশু অভুক্ত অবস্থায় মারা গিয়েছিল।

১৯ ২২

ইয়েমেনের সেই গৃহযুদ্ধ থেমেছে বটে, তবে এখনও তার পুরোপুরি সমাধান হয়নি। এখনও ইয়েমেনে দু’টি ‘সরকার’ চলে। যার মধ্যে অন্যতম ইরান সমর্থিত গভর্নমেন্ট অফ ন্যাশনাল স্যালভেশন।

২০ ২২

সম্প্রতি জানা গিয়েছিল, আমেরিকার অঙ্গুলিহেলনে ইজ়রায়েলের সঙ্গে তিক্ততা কাটিয়ে সুসম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী সৌদি আরব। সে বিষয়ে কথাবার্তাও শুরু হয়েছিল। তার মাঝেই শুরু হয় হামাসের সঙ্গে ইজ়রায়েলের যুদ্ধ।

২১ ২২

সৌদি এই যুদ্ধকে ভাল চোখে দেখেনি মোটেই। তাদের অস্বস্তি আরও বৃদ্ধি করতেই ইয়েমেন থেকে হুথি ইজ়রায়েল আক্রমণ শুরু করেছে। অনেকের মতে, এর নেপথ্যে রয়েছে ইরানের মদত।

২২ ২২

পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধে লেবানন, ইরান, সিরিয়া, মিশর আগেই জড়িয়ে গিয়েছে। জর্ডনও সম্প্রতি গাজ়ায় যুদ্ধবিরতির ডাক দিয়েছে। এর মাঝে ইয়েমেন থেকে হুথির কার্যকলাপ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আরও জটিল করে তুলল বলেই মত পর্যবেক্ষকদের।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement