শনিবার ভোটের দিনঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। সাত দফায় হবে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচন। দিনঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই জারি হয়ে গেল নির্বাচনী আচরণ বিধি (এমসিসি)। কী এই নির্বাচনী বিধি? কেন মানতে হয়?
নির্বাচনী বিধি হল কিছু নির্দেশিকা, যা জারি করে নির্বাচন কমিশন। স্বচ্ছ এবং অবাধ নির্বাচনের কারণেই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়।
নির্দেশিকা জারির পর থেকে প্রার্থী, রাজনৈতিক দলগুলিকে মানতে হবে কিছু বিধি। ফলঘোষণা পর্যন্ত এই বিধি জারি থাকবে। প্রার্থী এবং রাজনৈতিক দলগুলি এই বিধি না মানলে পদক্ষেপ করতে পারবে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনী আচরণ বিধি জারি হলে কী হয়? নির্বাচনের দিনঘোষণা হলে প্রার্থীরা কোনও আর্থিক অনুদান দিতে পারেন না।
এই নির্বাচনী আচরণ বিধি জারির পর থেকে সরকারও কোনও জনমোহিনী প্রকল্প ঘোষণা করতে পারে না। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারে না।
প্রশাসন পরিকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত কোনও প্রতিশ্রুতি দিতে পারে না। যেমন সড়ক নির্মাণ, পানীয় জলের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিতে পারে না ভোটঘোষণার পর।
নির্বাচনী আচরণ বিধি জারি হলে সরকারি ক্ষেত্রে সাময়িক নিয়োগ বন্ধ করা হয়। মনে করা হয়, এর ফলে প্রভাবিত হতে পারেন ভোটারেরা।
কোনও মন্ত্রী বা প্রার্থী তহবিল থেকে অনুদান মঞ্জুর করতে পারবেন না। খরচও করতে পারবেন না।
প্রচারের জন্য সরকারি পরিবহণ, যন্ত্র, নিরাপত্তারক্ষী ব্যবহার করা যাবে না।
পুরসভাকে সকল প্রার্থী, রাজনীতিকদের জনসভার জন্য বিনামূল্যে সরকারি জায়গা ব্যবহার করতে দিতে হবে। সকল প্রার্থী বা রাজনীতিকের ক্ষেত্রে একই শর্ত রাখতে হবে। পক্ষপাতিত্ব করা চলবে না।
ভোটের কাজে কোনও সরকারি ডাকবাংলো, বিশ্রামাগার বা অন্য সরকারি সুবিধা ব্যবহার করা যাবে না। কোনও দল বা প্রার্থী তা পারবে না।
সরকারি সংবাদমাধ্যম শাসকদলের হয়ে কোনও প্রচার বা পক্ষপাতদুষ্ট খবর পরিবেশন করতে পারবে না।
ভোটারদের প্রভাবিত করতে কোনও জাতি বা ধর্মের মানুষের আবেগকে ব্যবহার করা যাবে না। কারও আবেগে আঘাত করা যাবে না। ভোটারকে প্রভাবিত করা বা ঘুষ দেওয়া, গুজব ছড়ানো যাবে না।
১৯৬০ সালে কেরলে বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম বার এই নির্বাচনী আচরণ বিধি জারি করা হয়েছিল। ওই ভোটে সাফল্যের পর ১৯৬২ সালে লোকসভা নির্বাচনে গোটা দেশে এই বিধি জারি করে নির্বাচন কমিশন।
১৯৯১ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়, গোটা দেশে আরও কড়া ভাবে জারি করা হবে আচরণ বিধি। তার আগে বার বার এই আচরণ বিধি লঙ্ঘন এবং দুর্নীতির কারণেই ওই সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।