পঞ্চম প্রজন্মে পা রাখল দেশের মোবাইল প্রযুক্তি। শনিবার দিল্লিতে ফাইভ জি প্রযুক্তির উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ফাইভ জি প্রযুক্তির হাত ধরে দেশের টেলিকম ব্যবস্থা আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, চেন্নাইয়ের মতো কয়েকটি শহরে ফাইভ জি চালু হবে।
দীপাবলির পর থেকে শহরগুলিতে ফাইভ জি পরিষেবা মিলবে বলে জানানো হয়েছে।
ফাইভ জি স্পেকট্রামের সবচেয়ে বেশি বরাত পেয়েছে মুকেশ অম্বানীর সংস্থা রিলায়্যান্স জিয়ো। তারা ফিফথ জেনারেশন বা ফাইভ জি স্পেকট্রামের ৮৮ হাজার ৭৮ কোটি টাকার বরাত পেয়েছে। দীপাবলির মধ্যে জিয়ো দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, চেন্নাইয়ে এই পরিষেবা চালু করবে বলে জানিয়েছে।
ফাইভ জি স্পেকট্রামের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাত পেয়েছে ভারতী এয়ারটেল। তারা জানিয়েছে, ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের শহরাঞ্চলগুলিতে ফাইভ জি পরিষেবা চালু করে দেওয়া হবে। ২০২৪-এর মার্চের মধ্যে ফাইভ জি পরিষেবা পৌঁছে যাবে প্রত্যন্ত এলাকাতেও।
ফাইভ জি পরিষেবায় ইন্টারনেটের গতি অনেকটাই বেড়ে যাবে। দাবি করা হচ্ছে, ফাইভ জি-র গতি হবে প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ২০ গিগাবাইট। ফোর জি-তে ইন্টারনেটের গতি সর্বোচ্চ ১০০ মেগাবাইট প্রতি সেকেন্ড। অর্থাৎ ফোর জি পরিষেবার তুলনায় ফাইভ জির সর্বোচ্চ গতি হবে ১০০ গুণেরও বেশি।
ফাইভ জি পরিষেবায় ইন্টারনেটের বিলম্ব (ল্যাটেন্সি) এক মিলি সেকেন্ডেরও কম। ফোর জি-র ক্ষেত্রে তা ১০ থেকে ১০০ মিলিসেকেন্ড।
যে কোনও বড় ফাইল, সিনেমা কিংবা গান ফাইভ জি-তে ডাউনলোড হবে কয়েক মুহূর্তেই। ই-হেলথ, মেটাভার্সের দিক থেকেও অনেকটা এগিয়ে থাকবেন ফাইভ জি ব্যবহারকারীরা।
টেলিকম বিভাগ (ডিওটি) আগেই জানিয়েছিল, প্রথম ধাপে ভারতের ১৩টি শহরে মিলবে হাই স্পিড ফাইভ-জি ইন্টারনেট পরিষেবা।
পরিষেবা চালু হবে কলকাতা, আমদাবাদ, বেঙ্গালুরু, চণ্ডীগড়, চেন্নাই, দিল্লি, গান্ধীনগর, গুরুগ্রাম, হায়দরাবাদ, জামনগর, লখনউ, মুম্বই এবং পুণেতে।
মোট ১০টি ব্যান্ডের ৭২ হাজার ৯৮ মেগাহার্ৎজের ফাইভ জি স্পেকট্রাম নিলামে তুলেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তার মধ্যে ৭১ শতাংশ বিক্রি হয়েছে প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকায়।
এয়ারটেল, জিয়ো ছাড়াও আদানি ডেটা নেটওয়ার্ক, ভোডাফোন-আইডিয়া ফাইভ-জি স্পেকট্রামের বরাত পেয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন দেশ ফাইভ জি পরিষেবা ৪০ থেকে ৫০ শতাংশে নিয়ে যেতে বেশি সময় নিয়েছে। ভারত তুলনায় অনেকটাই কম সময়ের মধ্যে ৮০ শতাংশ পরিষেবার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভারতের এক তৃতীয়াংশের বেশি মোবাইলে ২০৩০ সালের মধ্যে ফাইভ জি পরিষেবা চালু হয়ে যাবে। টু জি এবং থ্রি জি পরিষেবার ব্যবহার নেমে আসবে ১০ শতাংশের নীচে।
ফাইভ জি প্রযুক্তি ভারতের পক্ষে যথেষ্ট লাভজনক হিসাবে প্রমাণিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২৩ থেকে ২০৪০-এর মধ্যে ভারতের অর্থনীতিতে শুধুমাত্র ফাইভ জি প্রযুক্তি বাবদ প্রায় ৫০ কোটি ডলার অতিরিক্ত আসতে পারে, আশাবাদী টেলিকম বিশেষজ্ঞরা।