স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল যুবকের। মিটমাট করার চেষ্টাও করেন তিনি। কিন্তু বরফ গলেনি। সাংসারিক অশান্তির জন্য ক্ষমাও চাননি তাঁর স্ত্রী। আর এই কারণেই রাগের মাথায় স্ত্রীর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন ওই যুবক।
ঘটনাটি গ্রিসের। ২০২১ সালে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ ওঠে বাবিস আনাগনস্তপৌলাস নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। এই অপরাধের কারণে ৩০ বছরের কারাদণ্ড হয় ওই যুবকের।
২০২১ সালের ঘটনা। জেরা পর্বে স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করেন ওই যুবক। ঠিক কী ঘটেছিল?
ব্রিটিশ তরুণী ক্যারোলিন ক্রাউচের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বাবিসের। বাবিস ছিলেন পেশায় হেলিকপ্টার পাইলট।
একটি ইস্টারের অনুষ্ঠানে ক্যারোলিনকে প্রথম দেখেছিলেন বাবিস। প্রথম দেখাতেই দু’জনের হৃদয় ব্যাকুল হয়েছিল। সেটা ২০১৭ সালের ঘটনা।
প্রথম দেখার সময় ক্যারোলিনের বয়স ছিল মাত্র ১৬। বাবিস তখন ২৯। কয়েক বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর ২০১৯ সালে তাঁদের চার হাত এক হয়।
২০১৯ সালে পর্তুগালে বিয়ে করেন তাঁরা। ক্যারোলিনের পরিবারকে না জানিয়েই আচমকা বিয়ে সারেন তাঁরা।
এর পর গুছিয়ে সংসার করছিলেন ওই যুগল। কিন্তু সুখের সংসারে হঠাৎই ছন্দপতন ঘটে। ক্যারোলিনের গর্ভপাত হয়। তার বছরখানেক পর তাঁদের কন্যাসন্তান লিডিয়ার জন্ম হয়।
এই ঘটনার পর থেকেই নাকি ক্যারোলিনের আচরণ বদলাতে থাকে। বদমেজাজি হন তিনি। আদালতে এমনটাই দাবি করেছেন বাবিস।
কন্যাসন্তানকে নিয়েই দু’জনের মধ্যে ঝামেলা বেধেছিল। যার পরিণতি হয় মারাত্মক।
বাবিস আদালতে জানান যে, ঝগড়ার পর মিটমাট করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর স্ত্রীর রাগ কমেনি। এমনকি, তাঁর স্ত্রী ক্ষমাও চাননি।
ঝগড়ার দিন লিভিং রুমেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বাবিস। ভোর ৪টে নাগাদ স্ত্রীর মান ভাঙাতে বেডরুমে গিয়েছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। বাবিসের কথায়, তখনও রেগে ছিলেন তাঁর স্ত্রী।
এই সময়ই রাগের বশে ক্যারোলিনের মুখে বালিশ চেপে ধরেন বাবিস। তার জেরে মৃত্যু হয় তাঁর।
ঘটনার আকস্মিকতায় ভয় পেয়ে যান বাবিস। ক্যারোলিন চোখ খুলছেন না দেখে ঘাবড়ে যান। স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবিস। তখন অন্য ঘুরে ঘুমোচ্ছিল তাঁদের ১১ মাসের কন্যাসন্তান।
স্ত্রীকে খুনের দায়ে জেল খাটতে হবে— এই ভয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন বাবিস। নিজেকে বাঁচাতে ডাকাতির গল্প ফাঁদেন।
ডাকাতির ঘটনা সাজাতে বাড়ির পোষ্যকেও খুন করেন বাবিস। প্রাথমিক ভাবে পুলিশকে বাবিস জানিয়েছিলেন যে, তাঁদের বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। তারাই তাঁর স্ত্রী এবং পোষ্যকে খুন করেছে।
কিন্তু, সত্য কি আর এত সহজে ধামাচাপা দিয়ে রাখা যায়! তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে যে বাবিসই আসল দোষী। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।