পাহাড়ের ধারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে অগ্নিদগ্ধ দেহ। কিছু দূরে রুশ কপ্টার দুমড়ে মুচড়ে পড়ে রয়েছে জঙ্গলের মাঝখানে। আগুনে ঝলসে যাচ্ছে গোটা এলাকা।
কুন্নুরের চা-বাগানের লাগোয়া জঙ্গলে ঠিক এই জায়গাতেই ভেঙে পড়েছে সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়তের সামরিক কপ্টার। ঘটনাস্থলের একের পর এক ছবি সামনে এসেছে তারপর থেকে। প্রত্যেকটিতেই ধরা পড়েছে বীভৎসতা।
ওয়েলিংটনের ডিফেন্স স্টাফ কলেজ পরিদর্শনে যাচ্ছিলেন রাওয়ত। রুশ সামরিক কপ্টার এমআই-১৭ভি৫-এ তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী মধুলিকা।
সুলুর থেকে ওয়েলিংটনে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। সেনা সর্বাধিনায়কের সঙ্গী ছিলেন সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্তারাও। ক্রু সদস্যদের নিয়ে মোট আরোহী ছিলেন ১৪ জন।
দুর্ঘটনাটি ঘটে কুন্নুরের কাছে। কপ্টারটি আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই। ঠিক ১২টা ৪০ মিনিটে ভেঙে পড়ে বিপিনের কপ্টার। রুশ কপ্টারটি তখন যাচ্ছিল নীলগিরির জঙ্গলের উপর দিয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রথমে গাছের মধ্যে পড়ে কপ্টারটি তারপর তাতে আগুন লেগে যায়। পাশেই ছিল চা-বাগান। তার লাগোয়া একটি বাড়িও। একটুর জন্য রক্ষা পায় বাড়িটি। তবে ভেঙে পড়ে বড় কয়েকটি গাছ। আগুন লেগে যায় জঙ্গলের আশপাশের গাছগুলিতেও।
এরপরেই প্রকাশ্যে আসে কপ্টারের ভিতরে পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া একের পর এক মৃতদেহের ছবি। পুড়ে যাওয়া এক মহিলার দেহও উদ্ধার করা হয় ঘটনাস্থল থেকে। তবে সেইসব ছবি মানসিক পীড়ার কারণ হতে পারে। তাই সেই ছবি দেওয়া থেকে সচেতন ভাবেই বিরত থাকল আনন্দবাজার অনলাইন।
বিকেল পর্যন্ত আগুন না নেভায় জলের বালতি হাতে নামেন স্থানীয় বাসিন্দারা। উদ্ধার কাজে নামে পুলিশ। বেশ কয়েকটি দেহ উদ্ধারও করা হয় কপ্টারের ধ্বংসস্তৃপ থেকে। বিকেলেই ১৪ জন সওয়ারির মধ্যে ১৩ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
পরে জানানো হয় ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াতেরও। ওই ১৩ জনের এক জন তিনিও।