নব্বইয়ের দশকের গোড়া থেকে ছোট পর্দায় কাজ করেন অনুপ সোনি। ‘বালিকা বধূ’ ধারাবাহিকে অভিনয় এবং ‘ক্রাইম পেট্রল’-এর মতো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন অনুপ। পেশাগত কারণে দর্শকের প্রশংসা কুড়োলেও তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের জন্য বক্রোক্তির শিকারও হতে হয়েছে তাঁকে।
অভিনয়ে নামার ন’বছর পর ঋতুর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন অনুপ। বিয়ের পর দুই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন ঋতু। অনুপ অভিনয়জগতের পরিচিত মুখ হলেও তাঁর স্ত্রী ঋতু সফ্টঅয়্যার সংস্থায় চাকরি করতেন।
১৯৯৯ সালে বিয়ে করার পর কয়েক বছর সংসার এবং কেরিয়ার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন অনুপ এবং ঋতু। টেলিপাড়ার সকলেই তাঁদের জুটির প্রশংসা করতেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
২০১০ সালে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন অনুপ এবং ঋতু। তাঁদের এই সিদ্ধান্তে অনেকেই অবাক হয়ে যান। পরে তাঁদের বিচ্ছেদের কারণ প্রকাশ্যে এলে অনুপের দিকেই অনেকে আঙুল তুলতে শুরু করেন। কারণ, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন অনুপ।
ঋতু এক পুরনো সাক্ষাৎকারে তাঁর সঙ্গে অনুপের সম্পর্কের কথা ভাগ করে নিয়েছিলেনন। তাঁর দাবি, বিয়ের পর তাঁদের সম্পর্ক খুব ভাল ছিল। কিন্তু বিয়ের ছ’বছরের মাথায় তাঁদের সম্পর্কে ছেদ পড়ে। ঋতু জানান, অনুপের স্বভাবে পরিবর্তন লক্ষ করতে শুরু করেন তিনি।
ঋতুর সঙ্গে সময় কাটানো ধীরে ধীরে কমিয়ে দিয়েছিলেন অনুপ। ঋতুর দাবি, বাড়িতে থাকলে অধিকাংশ সময় ফোনে গল্প করে সময় কাটাতেন অনুপ। কার সঙ্গে কথা বলছেন জানতে চাইলে এড়িয়ে যেতেন বা মিথ্যা কথা বলতেন অভিনেতা।
এক দিন হঠাৎ অনুপের ফোনের বিল হাতে পেয়ে স্বামীর মিথ্যা ধরে ফেলেন ঋতু। ঋতু লক্ষ করেন, বার বার একই নম্বরে ফোন করে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলেছেন অনুপ। সেই নম্বর ছিল এক বলি তারকার কন্যার।
রাজ বব্বরের কন্যা জুহি বব্বরের সঙ্গে ফোনে বার্তালাপ চালাতেন অনুপ। অনুপের সঙ্গে জুহির কী সম্পর্ক রয়েছে তা সরাসরি জুহিকেই জি়জ্ঞাসা করেন ঋতু। তাঁদের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন জুহি। তারকাকন্যা দাবি করেন, তিনি নাকি এক বারই অনুপের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।
তার পর মাঝেমধ্যেই ছুটির দিনে বাড়ির বাইরে সময় কাটাতে শুরু করেন অনুপ। প্রশ্ন করায় অভিনেতা স্বীকার করেন, তিনি আসলে জুহির সঙ্গে ছুটির দিনে একান্তে সময় কাটান। দ্বিতীয় নারীর উপস্থিতির জন্যই অনুপের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় ঋতুর।
ঋতুর সঙ্গে বিচ্ছেদের কয়েক মাসের মধ্যেই জুহিকে বিয়ে করেন অনুপ। ২০১১ সালে বিয়ে করেন দু’জনে। পরকীয়ার জন্য বিয়ে ভাঙার কারণে কটু কথা শুনতে হয় অনুপকে। তাঁর সঙ্গে জুহির সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্নও ওঠে।
অধিকাংশের দাবি, অনুপ যখন অভিনয় করার জন্য থিয়েটারে যোগ দেন, তখন জুহির সঙ্গে প্রথম আলাপ হয় অনুপের। ক্ষণিকের পরিচয় প্রেমে পরিণত হতে বেশি সময় লাগেনি।
মঞ্চে একে অপরের সঙ্গে সময় কাটানোর পরেও বাড়িতে ফিরে জুহির সঙ্গে ফোনালাপ চালাতেন অনুপ। এক দিকে জুহির প্রেমে মশগুল হয়ে পড়ছিলেন, অন্য দিকে ঋতুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ক্ষয়ে যাচ্ছিল।
শেষ পর্যন্ত ঋতুকে বিচ্ছেদ দিয়ে পরকীয়া সম্পর্ককে স্বীকৃতি দেন অনুপ। জুহির সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন তিনি। বিয়ের পর এক পুত্রসন্তানেরও জন্ম দেন জুহি।
তবে অনুপকে বাড়ির জামাই হিসাবে মেনে নিতে একেবারেই রাজি ছিলেন না রাজ। কপিল শর্মা শোয়ে এসে সেই কথাই জানান জুহি। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম দিকে বাবা কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না। আমার দুই ভাই তখন অনুপের পক্ষ নিয়ে ক্রমাগত বাবার সঙ্গে লড়াই করে গিয়েছে।’’
রাজের দুই পুত্র প্রতীক এবং আর্য বব্বরও সায় দেন জুহির কথায়। তাঁরা বলেন, ‘‘অনুপের জন্য আমরা বাবার সঙ্গে খুব ঝগড়া করেছিলাম। প্রথমে রাজি না হলেও শেষে আমরা বাবাকে রাজি করিয়ে ফেলি।’’ বর্তমানে স্ত্রী, পুত্র এবং কেরিয়ার নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন অনুপ।