বাবা-মা নিজেদের সন্তানদের জন্য কতই না আত্মত্যাগ করেন। কিছু কিছু বাবা ছেলেমেয়েদের জন্য নিজেদের সর্বস্ব বিসর্জন দিয়ে দেন। কিন্তু সন্তানরা কি সবসময় সেই ত্যাগকে যথাযথ সম্মান দিতে পারে?
সেই রকমই এক ঘটনা যা মেয়ের জন্য এক জন বাবার চরম আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। কিন্তু মেয়ে সেই মূল্য চোকাতে পারেনি। প্রেম এবং আত্মত্যাগের এই হৃদয়বিদারক কাহিনি পড়লে চোখে জল আসতে বাধ্য।
টুইটারে এই ঘটনা প্রথম প্রকাশ্যে আনেন আমান্ডা চিন্ডা নামক নাইজেরিয়ার এক মহিলা। তিনিই এই গল্প বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেন।
আমান্ডার দাবি, এক জন মেয়ের বাবার স্বপ্ন ছিল মেয়েকে প্রকৃত অর্থে শিক্ষিত করে তোলা। অভাবের সংসার হলেও মেয়ের পড়াশোনায় কখনও কোনও বাধা আসতে দেননি তিনি।
মেয়ে বড় হওয়ার সঙ্গে তার পড়াশোনার খরচও বাড়ে। এক সময়ে মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হচ্ছিল বাবাকে।
বাবাও নাছোড়বান্দা। ঠিক করেন মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যেতে যা করতে হয় তিনি তাই করবেন।
অনেক ভেবে ঠিক করেন, মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাতে নিজের কিডনি বিক্রি করে দেবেন তিনি। কিডনি বিক্রি করে তিনি যা টাকা পাবেন, তা তিনি রেখে দেবেন। এই টাকায় তাঁর মেয়ের সারা জীবনের পড়াশোনার খরচ চলে যাবে।
কিন্তু তিনি জানতেন না তাঁর পড়াশোনায় ভাল মেয়ের মনে সেই মুহূর্তে এক জন প্রেমিক জায়গা করে নিয়েছে। প্রেমিকের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই চুটিয়ে প্রেম করছিলেন তিনি।
ইতিমধ্যে কিডনি বিক্রি করে মেয়ের কলেজের বেতন জমা দেন বাবা। বেতন জমা দেওয়ার পর বাড়ি ফিরে আসেন খুশি মনে।
এর কিছু দিনের মধ্যেই মেয়ে এবং তার প্রেমিকের সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। মেয়েটিকে ছেড়ে চলে যায় তার প্রেমিক।
প্রেমিকার ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি মেয়ে। মনের দুঃখে সে আত্মহত্যা করে।
বাবার আত্মত্যাগের বিষয়ে না ভেবেই আত্মহত্যা করে মেয়ে। ভেঙে চুরমার হয়ে যায় মেয়েকে শিক্ষিত করে তোলার জন্য বাবার বোনা স্বপ্ন।
মেয়ের আত্মহত্যা করার পর তার বাবা ভেঙে পড়েন। রাগ-অভিমানও হয় মেয়ের উপর।
যদি তিনি জানতেন যে মেয়ে আত্মহত্যা করবে তা হলে তিনি নিজের কিডনি বিক্রি করতেন না বলেও তিনি কাঁদতে কাঁদতে জানিয়েছিলেন।