১৯ বছর বয়সে দৌড় শুরু করেছিলেন, ৩৫ বছরে এসে বিশ্বকাপ ছুঁয়েছেন লিয়োনেল মেসি। ফুটবল জীবনের একমাত্র না-পাওয়াকে অবশেষে করেছেন আলিঙ্গন। নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন, কাতারে তিনি জীবনের শেষ বিশ্বকাপ খেলে ফেলেছেন।
মেসির বিশ্বকাপ দৌড় শেষ হয়েছে। আর কখনও বিশ্বকাপের মঞ্চে দেখা যাবে না আর্জেন্টিনা তারকাকে। এরই মধ্যে অনেকে বলছেন ফুটবলবিশ্ব পেয়ে গিয়েছে আর এক মেসিকে। ১০ নম্বর জার্সি গায়ে তিনিও ক্ষণে ক্ষণে ম্যাজিক দেখান। তিনি কিলিয়ান এমবাপে। মেসি না এমবাপে, কে এগিয়ে? কী বলছে পরিসংখ্যান?
মেসির চেয়ে ১২ বছরের ছোট এমবাপে। পিএসজি ক্লাবে তাঁরা একে অপরের সতীর্থ। কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিলেন এলএম১০ এবং কেএম১০।
সোনার বুটের লড়াইয়ে মেসিকে টেক্কা দিয়েছেন ফরাসি তারকা। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোল তাঁর নামেই। কিন্তু শেষ হাসি হাসতে পারেননি। এমবাপেদের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে এ বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে আর্জেন্টিনা।
৩৫ বছরের মেসিকে পরবর্তী বিশ্বকাপে আর দেখা যাবে না। তবে বিশ্বকাপ জিতে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, দেশের জার্সিতে আরও কিছু দিন খেলতে চান। আরও কিছু জয়ের স্বাদ উপভোগ করতে চান। এখনই বিদায় নয়।
অন্য দিকে, এমবাপে সবে ২৩ পেরিয়ে পা দিয়েছেন ২৪ বছরে। তাঁর সামনে অনেকটা সময় পড়ে। এখনও অনেকগুলি বিশ্বকাপে তিনি ফ্রান্সের জার্সি গায়ে আগুন ঝরাতে পারবেন। বিশ্বকাপ জেতার আরও অনেক সুযোগ পাবেন এমবাপে।
২৩ বছর বয়সে ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মেসি? কোথায়ই বা দাঁড়িয়ে এমবাপে? তাঁদের মধ্যে আদৌ তুলনা চলে কি? ২৩ বছরের পরিসংখ্যানে কে কাকে ছাপিয়ে যাচ্ছেন, ব্যবধানই বা কত?
মেসি এবং এমবাপে, দু’জনেই দেশের জার্সিতে খেলা শুরু করেছিলেন ১৮ বছর বয়সে। তার পর ১৯-এই তাঁদের বিশ্বকাপ অভিষেক হয়। ২০১৮ সালে জীবনের প্রথম বিশ্বকাপে খেলতে নেমে ট্রফি জিতে নিয়েছিলেন এমবাপে। মেসি তা পারেননি।
২৩ বছর বয়সে মেসির কেরিয়ারের দিকে চোখ রাখলে দেখা যায়, সেই সময়ে তিনি মোট ২৬৯টি ম্যাচ খেলেছেন। এমবাপে ওই একই সময়ের মধ্যে খেলে ফেলেছেন ৩০৩টি ম্যাচ।
ম্যাচ বেশি হওয়ায় এমবাপের গোলসংখ্যাও মেসির চেয়ে বেশি। ২৩ বছর বয়সে তিনি মোট ২২৯টি গোল করেছেন। মেসি এই বয়সে করেছিলেন ১৮০টি গোল।
গোলের ঠিকানা লেখা পাসের ক্ষেত্রেও ২৩ বছরের এমবাপে কিছুটা এগিয়ে আছেন ২৩ বছরের মেসির থেকে। এমবাপের অ্যাসিস্ট সংখ্যা ১১১। ২৩ বছরে মেসির নামের পাশে ছিল ৮২টি অ্যাসিস্ট।
২৩ বছর বয়সে মেসি এবং এমবাপে যে ক’টি বড় টুর্নামেন্ট জিতেছেন, তার নিরিখে ফারাকটা একেবারে কানঘেঁষা। ২৩-এর মেসির নামের পাশে ছিল ১১টি বড় জয়ের খেতাব। এমবাপে জিতেছেন ১২টি।
২৩ বছর বয়সে দেশের জার্সিতে মোট ৬৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলেছেন এমবাপে। মেসি খেলেছিলেন ৫৭টি ম্যাচ।
৬৭টি ম্যাচে ফ্রান্সের হয়ে এমবাপের গোলসংখ্যা ৪০। অন্য দিকে ৫৭টি ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে মেসি করেছিলেন ১৭টি গোল।
পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে ম্যাচ কিংবা গোল, সব দিক থেকেই ২৩ বছরে মেসিকে ছাপিয়ে গিয়েছেন ফ্রান্সের তরুণ তুর্কি। এমবাপের কেরিয়ার যেন ছুটছে। আগামী দিনে আরও একাধিক রেকর্ড তিনি ভেঙে দিতে চলেছেন, দাবি অনুরাগীদের। অনেকেই বলছেন, মেসি, রোনাল্ডোদের পরবর্তী সময়ে ফুটবলবিশ্বে ছড়ি ঘোরাতে প্রস্তুত এমবাপে।
এক ঝলকে মেসি এবং এমবাপের ২৩ বছরের কেরিয়ার। পরিসংখ্যানে এগিয়ে ফরাসি তারকা।