নায়িকা মানেই তাঁকে ঘিরে একাধিক সম্পর্ক ডানা মেলবে। বলিপাড়ার অভিনেত্রী সিমি গারেওয়ালের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ষাটের দশকে বলিউডে পা রেখেছিলেন তিনি। একের পর এক ছবিতে তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি নজর কেড়েছে। ছবির দুনিয়ায় তাঁর সাফল্যের চড়াই-উতরাই ঘিরে যেমন চর্চা চলেছে, তেমনই তাঁর ব্যক্তিজীবন নিয়েও তুফান উঠেছিল আরব সাগরের তীরে।
একাধিক খ্যাতনামীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন সিমি। জানমগরের মহারাজা থেকে শিল্পপতি রতন টাটা— সিমির প্রেমকাহিনি ঝড় তুলেছিল সিনে দুনিয়ায়।
তখন সিমির বয়স মাত্র ১৭। সেই সময়ই জামনগরের মহারাজার প্রেমে পড়েছিলেন অভিনেত্রী। সিমির প্রতিবেশী ছিলেন তিনি। সেই সূত্রেই দু’জনে আলাপ হয়েছিল।
তবে তিন বছরের বেশি সেই প্রেম টেকেনি। জামনগরের মহারাজের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করেছিলেন সিমি। এ কথা নিজে মুখেই জানিয়েছিলেন, কিন্তু কিছু দিন পরই সেই সম্পর্ক তেতো হয়ে যায়।
জামনগরের মহারাজের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সিমি বলেছিলেন, ‘‘আমরা পাগল ছিলাম। নানান সব কাণ্ড করতাম! যখন পিছন ফিরে তাকাই, হাসি পায়।’’
দেশের শিল্পপতি রতন টাটার সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন সিমি। শোনা যায় টাটার প্রেমে আচ্ছন্ন হয়েছিলেন সিমি। তবে সেই সম্পর্ক বেশি দূর এগোয়নি।
রতন টাটার সঙ্গে তাঁর যে ‘দীর্ঘ ইতিহাস’ রয়েছে, সে কথা নিজেই জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সিমির কথায়, ‘‘ও দারুণ মজার মানুষ। নিপাট ভদ্রলোক। অর্থ কখনই ওঁর চালিকাশক্তি ছিল না।’’
দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটার মনসুর আলি খান পটৌডির প্রেমেও পড়েছিলেন সিমি। শোনা যায়, তাঁরা নাকি একে অপরের প্রেমে মত্ত ছিলেন একসময়। সব সময় তাঁদের জুটিতে দু’টিতে দেখা যেত। সকলেই সে সময় ভেবেছিলেন, তাঁদের চার হাত এক হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।
কিন্তু অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরকে দেখে পটৌডির হৃদয়ে প্রেমের তুফান বয়ে যায়। শোনা যায়, শর্মিলার প্রেমে আচ্ছন্ন হওয়ার কারণেই সিমির হাত ছাড়েন পটৌডি।
একাধিক সম্পর্কে টানাপড়েনের পর ১৯৭০ সালে রবি মোহনের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন সিমি। খুব অল্প দিনের আলাপেই দিল্লির বাসিন্দা রবিকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী।
বিয়ে প্রসঙ্গে সিমি বলেছিলেন, ‘‘২৭ বছর বয়সে বিয়ে হয় আমার। মাত্র তিন মাসের আলাপে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’’
তবে বিয়ে বেশি দিন টেকেনি। ১৯৭৯ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এই প্রসঙ্গে সিমি বলেছিলেন, ‘‘জানতাম, এই সম্পর্ক টিকবে না। আমরা দু’জন পুরো আলাদা মানুষ ছিলাম।’’
‘মেরা নাম জোকার’, ‘কর্জ’ , ‘চলতে চলতে’-এর মতো একাধিক জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করে দর্শকমহলে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন সিমি।
হিন্দির পাশাপাশি বাংলা ছবিতেও অভিনয় করেছেন সিমি। সত্যজিৎ রায়ের ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, মৃণাল সেনের ‘পদাতিক’ ছবিতেও তাঁকে দেখা গিয়েছে।
অভিনয়ের পাশাপাশি সাদা রঙের পোশাক পরিহিতা সিমির শো ‘রদেভুঁ উইথ সিমি গারেওয়াল’ তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। যেখানে সিমির কাছে মন খুলে নিজেদের নানা কথা তুলে ধরতেন খ্যাতনামীরা। তবে তাঁর প্রেমকাহিনি এখনও ভুলতে পারেননি তাঁর ভক্তরা।