Face Reconstruction of Zosia

পায়ে তালা, গলায় গাঁথা কাস্তে! ৪০০ বছরের ‘ভ্যাম্পায়ার’কে মৃতের রাজ্য থেকে ফেরানোর চেষ্টায় বিজ্ঞানীরা

দেহাবশেষ খুঁজে যাওয়ার পর অনেকেই মনে করছিলেন, ‘ভ্যাম্পায়ার’ তকমা দিয়ে মাটির নীচে কবরস্থ করা হয় এই মহিলাকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:০১
Share:
০১ ১৬

পায়ে দেওয়া তালা। গলায় গাঁথা লোহার কাস্তে। মাটি ছেড়ে উঠে আসতে চাইলেই যেন ধারালো অস্ত্রে কাটা পড়ে গলা! মৃতের রাজ্য থেকে যাতে কোনও ভাবেই ফিরতে না পারে তার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল কবর দেওয়ার সময়।

০২ ১৬

বেশ কিছু দিন আগে পোল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বে ছোট্ট গ্রাম পিয়েনে নামগোত্রহীন এক মহিলার দেহাবশেষ খুঁজে পান গবেষকেরা। গবেষণার স্বার্থেই সেখানকার এক প্রাচীন কবরস্থানে বেশ কিছু দিন ধরে খোঁড়াখুঁড়ি করছিলেন প্রত্নতাত্ত্বিক ও গবেষকদের একটি দল। সেখানেই এক মহিলার দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়েরা যাঁর নামকরণ করেন জোসিয়া।

Advertisement
০৩ ১৬

সেই দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়ার পর অনেকেই মনে করছিলেন, ‘ভ্যাম্পায়ার’ তকমা দিয়ে কবরস্থ করা হয় ওই মহিলাকে। যে ভঙ্গিতে মাটির নীচে ওই মৃতদেহ পোঁতা হয়েছিল, তা দেখেই এমন ধারণা তৈরি হয়েছে নানা মহলে।

০৪ ১৬

এ বার ৪০০ বছরের পুরনো সেই কঙ্কালের মুখের পুনর্গঠন করলেন বিজ্ঞানীরা। ডিএনএ, থ্রিডি ও ক্লে দিয়ে জোসিয়ার মুখকে জনসমক্ষে এনেছেন একদল গবেষক।

০৫ ১৬

সুইডিশ প্রত্নতাত্ত্বিক অস্কার নিলসন সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘যাঁরা তাঁকে মৃতের জগৎ থেকে না ফেরার সব রকম ব্যবস্থা করেছিলেন, তাঁকেই জীবিত করার সমস্ত চেষ্টা করেছি।’’

০৬ ১৬

নিকোলাস কোপারনিকাস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিকদের দলটি জোসিয়াকে খুঁজে বার করার পর খুলি বিশ্লেষণ করে দেখেছিলেন, তিনি এমনই একটি শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন যার জন্য তিনি মাঝেমধ্যেই অজ্ঞান হয়ে যেতেন।

০৭ ১৬

গুরুতর মাথাব্যথার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন জোসিয়া। এমনটাই মত প্রত্নতাত্ত্বিকদের।

০৮ ১৬

কঙ্কালের খুলির একটি ত্রিমাত্রিক প্রতিরূপ তৈরি করে তাতে ক্লে দিয়ে জোসিয়ার মুখটি প্রাণবন্ত করার চেষ্টা করেছেন। লিঙ্গ, বয়স, জাতি এবং আনুমানিক ওজন সম্পর্কিত তথ্যের সঙ্গে হাড়ের গঠন মিলিয়ে দেখে সুইডিশ প্রত্নতাত্ত্বিকেরা জোসিয়ার মুখের অবয়বটি তৈরি করেছেন।

০৯ ১৬

ওই কঙ্কালের পায়ের বৈশিষ্ট্যও চোখে পড়ার মতো। তাঁর বাঁ পায়ের বুড়ো আঙুল অন্য আঙুলের সঙ্গে এমন ভাবে জড়ানো, যা খুব সহজে খোলা যায় না। কবর দেওয়ার আগে দুই আঙুল যেন পেঁচিয়ে দিয়েছে কেউ।

১০ ১৬

জোসিয়াকে যে কবরে রাখা হয়েছিল, সেখানে কোনও ফলক ছিল না। তাঁর সমাধির কোনও লিখিত প্রমাণও মেলেনি।

১১ ১৬

গবেষকেরা মনে করছেন জোসিয়ার বয়স ছিল ১৩ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। তবে অন্য এক দলের দাবি, জোসিয়ার বয়স এত কম নয়। তাঁর সমাধিতে পোশাকের যে অংশ মিলেছে, তাতে বোঝা যায় তিনি বেশ সম্ভ্রান্ত বংশের। একটি রেশমের টুপির অবশিষ্টাংশও মিলেছে সেখানে।

১২ ১৬

গবেষকেরা জানিয়েছেন, প্রাচীন কালে পোল্যান্ডের স্থানীয় রীতি অনুযায়ী, এই ধরনের টুপি ব্যক্তিবিশেষের সামাজিক মর্যাদা নির্দেশ করত। অর্থাৎ, মৃত মহিলা জীবৎকালে উচ্চ সামাজিক মর্যাদার অধিকারী ছিলেন।

১৩ ১৬

দীর্ঘ দিনের মাটির আস্তরণ সরিয়ে পাওয়া গিয়েছে জোসিয়ার দেহের সব ক’টি হাড়ই। কঙ্কালটির মুখগহ্বরে অক্ষত রয়েছে দাঁতও। তবে উপরের পাটির মাঝখানের একটি দাঁতের গড়ন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন গবেষকেরা।

১৪ ১৬

ওই দাঁতটি খুব উঁচু এবং বড়। ভ্যাম্পায়ারের দাঁতের গড়নের প্রচলিত ধারণার সঙ্গে এই দাঁতের সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছেন কেউ কেউ।

১৫ ১৬

পোল্যান্ডের টোরান শহরের নিকোলাস কোপারনিকাস ইউনিভার্সিটির গবেষক দলের প্রধান ডারিয়ুসজ পোলিনস্কি জানিয়েছেন, যে ভঙ্গিতে ওই মৃতদেহ পোঁতা হয়েছিল, তা নিঃসন্দেহে অস্বাভাবিক। তাঁর কবরে যে ধরনের জিনিসপত্র রাখা হয়েছিল সেগুলি সেই যুগে ভ্যাম্পায়ার তাড়ানোর কাজে বহুল ব্যবহৃত।

১৬ ১৬

এ ছাড়াও প্রাচীন ধারণা অনুযায়ী, মৃত্যুর পর কারও ফিরে আসা আটকাতে মৃতদেহ কবর দেওয়ার সময় বেশ কয়েকটি পন্থা অবলম্বন করা হত। মৃতের পা অথবা মাথা কেটে ফেলা, দেহ পুড়িয়ে ফেলা, উপুড় করে মাটিতে মাথা গুঁজে দেওয়া অথবা বড় পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে দেওয়া এই পন্থাগুলির মধ্যে ছিল অন্যতম।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement