২০১০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে প্রচারের আলোয় উঠে এসেছিলেন প্যারাগুয়ের মডেল ল্যারিসা রিকলমে। দেশের হয়ে সে বছর ব্যাপক গলা ফাটিয়েছিলেন তিনি।
২০১০-এর বিশ্বকাপে প্যারাগুয়ে ভাল ফুটবলও খেলেছিল। গ্রুপ পর্যায়ের গণ্ডি পেরিয়ে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল, এমনকি কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত তারা পৌঁছতে পেরেছিল। তাতে বাড়তি উৎসাহ পান ল্যারিসা।
বিশ্বকাপের ম্যাচগুলিতে গ্যালারিতে হাজির থাকতেন তিনি। অভিনব সাজপোশাকের জন্য আলাদা করে নজর কাড়তেন। প্রায়শই ক্যামেরা ঘুরে যেত তাঁর দিকে।
স্বল্পবসনা এই মডেল মাঠে বসে খেলা দেখার সময় নিজের মোবাইল ফোনটি গুঁজে রাখতেন বুকে। দুই স্তনের খাঁজ থেকে মোবাইলের অর্ধেক অংশ উঁকি মারত। হু হু করে ভাইরাল হয় সেই ছবি।
প্যারাগুয়ে জিতলে ল্যারিসা নগ্ন ফটোশুটের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ঘোষণা করে জানিয়েছিলেন, তাঁর দেশ জিতলে তিনি সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে ক্যামেরার সামনে আসবেন। এই ঘোষণার পর তাঁর জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যায়।
প্যারাগুয়ে অবশ্য জেতেনি। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল ল্যারিসার দেশকে। তবে ল্যারিসা কথা রেখেছিলেন। সে বছরই ‘প্লে বয় ব্রাজিল’ ম্যাগাজ়িনের সেপ্টেম্বর সংখ্যায় তাঁর নগ্ন ফোটোশুট প্রকাশিত হয়।
২০১০-এর পর ফিফা আয়োজিত ফুটবল বিশ্বকাপে নজর কাড়তে পারেনি প্যারাগুয়ে। ২০২২-এর বিশ্বকাপে তো তারা সুযোগই পায়নি। তাই এ বছর ল্যারিসাকে দল বদলে ফেলতে দেখা গিয়েছে। এ বছর তিনি আর প্যারাগুয়ে নয়, সমর্থন করছেন ব্রাজিলকে।
সমর্থনের জন্য একটি দক্ষিণ আমেরিকান দেশকেই বেছে নিয়েছেন ল্যারিসা। ব্রাজিলের সমর্থনে সেজেগুজে ছবি পোস্ট করেছেন সমাজমাধ্যমে।
ব্রাজিলের হলুদ-সবুজ জার্সি পরে ছবি তুলেছেন ল্যারিসা। ফুটবল হাতে নিয়ে বিশেষ কায়দায় দাঁড়িয়েছেন ক্যামেরার সামনে। তবে এই সাজে রয়েছে ল্যারিসার অনিবার্য সেই মোবাইল।
স্তনের ফাঁকে এ বারও মোবাইল গুঁজতে ভোলেননি ল্যারিসা। ১২ বছর আগে যে ভাবে ভাইরাল হয়েছিলেন, এ বারও একই সাজে ছবি তুলেছেন তিনি। ছবি পোস্ট করেছেন ইনস্টাগ্রামে, যেখানে তাঁর ১ কোটির বেশি ফলোয়ার।
স্তনে মোবাইল গুঁজে ভাইরাল হওয়া ল্যারিসার বয়স তখন ছিল মাত্র ২৫ বছর। এখন তিনি ৩৭ বছরের তন্বী। ২০১০-এর সেই বিশ্বকাপই তাঁর জীবন বদলে দেয়। তিনি এখন দেশের সেরা মডেলদের মধ্যে অন্যতম।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০১০-এর বিশ্বকাপ চলাকালীন ল্যারিসার সঙ্গে জনপ্রিয় একটি সুগন্ধি প্রস্তুতকারক সংস্থার চুক্তি হয়েছিল। কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেন বনাম প্যারাগুয়ের খেলা দেখতে গিয়ে গ্যালারিতে ল্যারিসাকে দেখা গিয়েছিল অন্য রূপে।
সে দিন ল্যারিসা খেলা দেখতে বসেছিলেন বুকে জনপ্রিয় ওই সুগন্ধির নাম লিখে। স্থায়ী কালি দিয়ে লেখা হয়েছিল সেই নাম। সে সব ছবিও রাতারাতি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।
জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে সে বছর আরও একটি ঘোষণা করেছিলেন ল্যারিসা। তিনি জানিয়েছিলেন, প্যারাগুয়ে বিশ্বকাপ জিতলে তিনি দেশের পতাকার নীল, সাদা এবং লাল রং সারা গায়ে মেখে কোনও পোশাক ছাড়াই রাস্তায় দৌড়োবেন।
চলতি বিশ্বকাপে প্যারাগুয়ে নেই, তাই অগত্যা ব্রাজিলের সমর্থনে গলা ফাটাচ্ছেন ল্যারিসা। এর আগে ২০১৯ সালের কোপা আমেরিকাতেও তিনি প্যারাগুয়েকে সমর্থন করেছিলেন।
দল বদল করে ফেলায় কেউ কেউ ল্যারিসাকে বিদ্রুপ করছেন ঠিকই। সমাজমাধ্যমে ঠাট্টাতামাশাও চলছে। তবে ল্যারিসা যে নিজের দেশের একনিষ্ঠ সমর্থক, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। সমাজমাধ্যমের পাতায় তাঁর দেশভক্তির প্রমাণ রয়েছে।