আর্থিক সঙ্কটে ধুঁকছে পাকিস্তান। গত কয়েক মাসে অর্থ সঙ্কট এতটাই প্রকট হয়েছিল যে, দু’বেলা খাবার জোগাতে হিমশিম খেতে হয়েছিল সে দেশের নাগরিকদের। এ বার সেই দেশেরই এক নাগরিক রাতারাতি কোটিপতি হয়ে গেলেন। তা-ও আবার মাছ বিক্রি করে।
এমন কাণ্ডই ঘটেছে পাকিস্তানে। সামান্য মৎস্যজীবী থেকে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে গিয়েছিলেন করাচির এক বাসিন্দা।
১০টি বিরল প্রজাতির মাছ ধরেছিলেন ওই মৎস্যজীবী। সেই ১০টি মাছ বিক্রি করেই ভাগ্য খুলে গিয়েছে ওই মৎস্যজীবীর।
তাঁর নাম হাজি বালোচ। ইব্রাহিম হায়দেরি জেলেপল্লিতে থাকেন ওই মৎস্যজীবী। সম্প্রতি আরব সাগর থেকে ওই মৎস্যজীবীর কর্মীরা বিরল প্রজাতির মাছ ধরেন।
ওই মাছগুলি হল গোল্ডেন ফিশ। সেখানকার স্থানীয় ভাযায় যার নাম ‘সোয়া’। জানা গিয়েছে, এই মাছগুলির নানান গুণ রয়েছে। আর সেই কারণেই মহামূল্যবান।
ওই প্রজাতির ১০টি মাছ পাকিস্তানি অর্থে মোট সাত কোটি টাকায় নিলামে বিক্রি করা হয়েছে করাচি হারবারে। এ কথা জানিয়েছেন পাকিস্তান ফিশারমেন ফোক ফোরামের মুখপাত্র মুবারক খান।
কিন্তু কেন এত দামে বিক্রি হল মাছগুলি? আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, গুণাবলির নিরিখে মাছগুলি মূল্যবান। কী গুণ রয়েছে মাছগুলির?
জানা গিয়েছে, সোয়া মাছগুলি থেকে ওষুধ তৈরি করা হয়। এই মাছগুলির পেটে এমন কিছু পদার্থ রয়েছে, যা দিয়ে বিভিন্ন ওষুধ তৈরি করা হয়।
শুধু তাই নয়, এই মাছগুলি থেকে সুতোর মতো এক ধরনের বস্তু পাওয়া যায়। যা থেকে অস্ত্রোপচারের সামগ্রী তৈরি করা হয়।
মাছগুলির ওজন ২০ থেকে ৪০ কেজির মধ্যে হয়। লম্বায় ১.৫ মিটার পর্যন্ত হয় মাছগুলি। সেই মাছই ধরে কপাল খুলে গিয়েছে ওই মৎস্যজীবীর।
ওই মৎস্যজীবীর কথায়, ‘‘করাচিতে আমরা সমুদ্রে মাছ ধরছিলাম...। তার পরেই আচমকা প্রচুর পরিমাণে গোল্ডেন ফিশ পেলাম। যা আমাদের ভাগ্য খুলে দিল।’’
এই মাছ বাজারে আনতেই লক্ষ্মীলাভ হয়ে যায় ওই মৎস্যজীবীর। প্রতিটি মাছ বিক্রি হয়েছে পাকিস্তানি মুদ্রায় ৭০ লক্ষ টাকা করে।
১০টি মাছ বিক্রি করে সাত কোটি টাকা পেয়েছেন ওই মৎস্যজীবী। একসঙ্গে এত টাকা পেয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত তিনি।
ওই মৎস্যজীবীর সাত জন কর্মী রয়েছেন। এই লক্ষ্মীলাভে তাঁরাও উত্তেজিত। ভাগ্য ফিরে গিয়েছে তাঁদেরও।
এত টাকা নিয়ে কী করবেন করাচির ওই মৎস্যজীবী? তিনি জানিয়েছেন, তাঁর সাত কর্মীকেও ওই টাকার ভাগ দেবেন। আর্থিক দিক থেকে ধুঁকছে পাকিস্তান। এর মধ্যে সে দেশের এক মৎস্যজীবীর এ হেন লক্ষ্মীলাভের খবর তাক লাগিয়েছে।