কথায় আছে, চুরি বিদ্যা মহা বিদ্যা যদি না পড়ো ধরা। তবে এই চোরেরা শুধু ধরা পড়েননি তা নয়, চুরিকে তাঁরা এক রকম শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন।
নিজের পরিচয় গোপন করতে অভিনব পদ্ধতি নিয়েছেন কেউ। কেউ বা দিনের আলোয় সটান ঢুকে পড়েছেন বাড়ির ভিতর। পছন্দের জিনিসটি নিয়ে মাথা উঁচু করে বেরিয়ে গিয়েছেন।
অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অদ্ভুত কিছু জিনিসপত্রও চুরি করেছেন কেউ কেউ। যা অর্থমূল্যের নিরিখে নেহাতই সাধারণ।
২০২৩ সালের তেমনই কিছু আজগুবি চুরি বা ডাকাতির ঘটনা ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরায়। যেখানে চোরদের কাণ্ডকারখানায় থ হয়ে গিয়েছে পুলিশও।
মন্টগোমারি কাউন্টির পুলিশের কাছে পাওয়া একটি ভিডিয়োয় যেমন দেখা গিয়েছে, এক ব্যক্তি অনেক কসরত করে চুরি করছেন একটি ৬৮ কেজি ওজনের গরিলার মূর্তি।
আবার পোলক কাউন্টি শেরিফের অফিস থেকে পাওয়া ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ইতিউতি দেখে নিয়ে এক যুবক ঘরের ভিতর অতি সন্তর্পণে ঢুকছেন। আর হাতে নিয়ে বেরোচ্ছেন এক বোতল কমলালেবুর রস আর একটি মদের বোতল।
ওকলাহোমা পুলিশের থেকে পাওয়া ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, বাড়ির বাগান থেকে ছোটদের লাল রঙের খেলনা গাড়ি আর প্লাস্টিকের তৈরি বাস্কেট বল পোস্ট নিয়ে চম্পট দিচ্ছেন এক চোর। চোর কিন্তু বয়সে ছোট নয়। বরং বেশ জোয়ান চেহারা তাঁর।
হিউস্টন পুলিশের থেকে পাওয়া ভিডিয়ো ফুটেজে ধরা পড়েছে একটি শপিং মলে চুরির দৃশ্য। চোর সেখানে অবলীলায় একটি নতুন সাইকেলে চড়ে সেটি চালিয়েই বেরিয়ে যাচ্ছেন সবার সামনে দিয়ে।
সান দিয়েগো কাউন্টির শেরিফের দফতর থেকে পাওয়া একটি ভিডিও ফুটেজে আবার দেখা গিয়েছে কম্বল চুরির ঘটনা। তবে এ কম্বল যে সে কম্বল নয়। নাম ‘হার্মেস’। এক একটির দাম ভারতীয় মুদ্রায় ৪.১৫ লক্ষ টাকা। দেখা যাচ্ছে এক ব্যক্তি দিনের আলোয় বাড়ির ভিতরে ঢুকে বার করে নিয়ে আসছেন তেমন দু’খানা কম্বল।
খাবার সরবরাহকারীর ভেক ধরে বাড়ির বারান্দা থেকে পার্সেল চুরি করার ঘটনাও ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরায়। যিনি কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন, সেই মহিলার পোশাক দেখে মনে হয় তিনি সম্ভ্রান্ত পরিবারের। ফুটেজটি দিয়েছে নাসাউ পুলিশ।
পরিচয় গোপন রাখতে খরগোশের মতো পোশাক পরেও চুরি করতে এসেছে চোর। ক্যাফেটেরিয়ায় ঢুকে চুরি করে নিয়ে গিয়েছে কফির কৌটো, নোনতা-মিষ্টি খাবারও।
মুখ লুকোতে হাতের কাছে পাওয়া কার্ডবোর্ডের বাক্সেও মাথা গলিয়ে নিয়েছেন কেউ। ওই ভাবেই মোবাইলের দোকানে ঢুকে ডাকাতি করেছেন। তুলে নিয়ে গিয়েছেন কোটি টাকার মোবাইল।
তবে সব চুরি যে খুব মসৃণ ভাবে হয়েছে তা-ও নয়। আসবাব চুরি করে পালাতে গিয়ে বমাল গাড়িতে ঢুকতেই পারছিলেন না এক ব্যক্তি। সে এক মারাত্মক পরিস্থিতি।
তবে চুরি করতে গিয়ে বন্ধুত্বও হয়েছে! তা-ও আবার খোদ পাহারাদারের সঙ্গেই। এমন ঘটনার কথাও প্রকাশ্যে এসেছে।
মালিকের গ্যারেজের পাহারায় ছিল তাঁর পোষ্য। চোর বন্ধুত্ব পাতিয়েছে তার সঙ্গেই। চোরকে তাড়ানোর বদলে গদগদ ভাব করে চোরের হতে আদর খেয়েছে সে। চোর গ্যারেজ থেকে সাইকেল চুরি করে যাওয়ার সময় তাকে বলে গিয়েছে, ‘‘বাবাকে বোলো, গ্যারাজের দরজা খুলে রাখা উচিত নয়।’’