হিন্দি ফিল্মজগতে পারিবারিক ছবি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলে যে সিনেমার কথা উঠে আসে, তা হল ‘বাগবান’। অমিতাভ বচ্চন এবং হেমা মালিনী অভিনীত এই ছবি মুক্তির পর দুই দশক পার হলেও তা নিয়ে আলোচনা এখন চলছে।
‘বাগবান’ ছবিটি নিয়ে এখনও সমাজমাধ্যম তোলপাড়। ছবি সংক্রান্ত মজার ছবি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংলাপ নিয়ে আলোচনা-বিতর্কের অন্ত নেই।
২০০৩ সালে রবি চোপড়ার পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘বাগবান’। এই ছবিতে বহু দিন পর জুটি বাঁধেন অমিতাভ এবং হেমা। কিন্তু পরিচালকের প্রথম পছন্দ ছিলেন না তাঁরা।
এক পুরনো সাক্ষাৎকারে ‘বাগবান’ ছবির নেপথ্যকাহিনি ভাগ করে নিয়েছিলেন রবি। তিনি জানিয়েছিলেন যে ‘বাগবান’-এর কাহিনি নাকি ছবি মুক্তির ৪০ বছর আগেই লেখা হয়ে গিয়েছিল।
রবির বাবা ছিলেন বলিপাড়ার খ্যাতনামী ছবিনির্মাতা বলদেব রাজ চোপড়া। সাক্ষাৎকারে রবি জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা যখন নরওয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন, তখন একটি বৃদ্ধাশ্রমেও গিয়েছিলেন তিনি।
বৃদ্ধাশ্রমে যাওয়ার পর সেখানকার বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে রবির বাবা জানতে পেরেছিলেন যে, তাঁরা সন্তানদের কাছ থেকে ভালবাসা এবং যত্নের অভাব বোধ করেন। তাঁদের মনের অবস্থা জানার পর সেই বিষয়ের উপর একটি ছবি নির্মাণের চিন্তাভাবনা করেন রবির বাবা।
রবি জানিয়েছিলেন যে, এক প্রৌঢ় দম্পতির পরিবার, সন্তান এবং তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে একটি ছবির কাহিনি বোনা হয়েছিল। ১৯৭০ সালের শেষের দিকে ‘বাগবান’ ছবির কাহিনি সম্পূর্ণ তৈরি ছিল।
‘বাগবান’ ছবির মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথম পছন্দ ছিলেন না অমিতাভ। রবি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, যখন ছবির গল্প লেখা হয়ে গিয়েছিল তখন অভিনেতা হিসাবে পছন্দ করা হয়েছিল দিলীপ কুমারকে।
তবে ‘বাগবান’ ছবির কাহিনি তৈরি থাকলেও কোনও না কোনও কারণে ছবির কাজ পিছিয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে যখন ‘বাগবান’ ছবির শুটিং শুরু হল, সেই সময় অভিনয় থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিলেন দিলীপ।
‘বাগবান’ ছবির জন্য দিলীপ বাদ পড়লে তার পরিবর্তে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয় অমিতাভ বচ্চনকে। সে প্রস্তাবে রাজিও হন অভিনেতা।
এমনকি ‘বাগবান’ ছবির মুখ্যচরিত্র হিসাবে হেমাও প্রথম পছন্দ ছিলেন না ছবি নির্মাতাদের। পরে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল হেমাকে।
রবি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ‘বাগবান’ ছবির কাহিনি তৈরির পর দিলীপের বিপরীতে নায়িকা হিসাবে নির্বাচন করা হয়েছিল বলি অভিনেত্রী ওয়াহিদা রহমানকে।
‘বাগবান’ ছবির শুটিং শুরুর সময় নাকি ষাটোর্ধ্ব নারীর চরিত্রে মানাত না ওয়াহিদাকে। তাই ছবির অভিনেতা বদলের সঙ্গে অভিনেত্রীরও পরিবর্তন হয়। ওয়াহিদার বদলে হেমাকে পছন্দ করেন ছবি নির্মাতারা।