বিশ্বকাপ হোক বা ইউরোর ময়দান, খ্যাতির আলো কেড়ে নেন দর্শকাসনে বসা বহু স্বল্পবসনাই। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মডেল থেকে নীল ছবির তারকারা। লিয়োনেল মেসি বা নেমারদের ছেড়ে তাঁদের দিকে ক্যামেরা তাক করতেই কেউ জার্সি খুলেছেন। কেউ বা আবার নিজের দেশের পতাকা আঁকা অন্তর্বাস দেখিয়েছেন। আর তাতেই রাতারাতি শিরোনামে উঠে এসেছেন এঁদের অনেকে।
২০১৮ সালে রাশিয়ার মাটিতে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই নজর কেড়ে নিয়েছিলেন নাতালিয়া নেমচিনোভা। রাশিয়া এবং সৌদি আরবের ম্যাচে দর্শকদের মধ্যে ক্যামেরা খুঁজে বার করেছে নাতালিয়াকে। প্রথম বারের পর বার বারই তাঁর দিকে ক্যামেরা ঘুরেছে।
সে বার রাশিয়ার জার্সি গায়ে আর পতাকা হাতে লুঝনিকি স্টেডিয়ামে পৌঁছেছিলেন নাতালিয়া। গোটা ম্যাচে রুশদের সমর্থনে পতাকাও না়ড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। পরের দিন তাঁকে নিয়ে ট্যাবলেয়েডের পাতা ভরে উঠেছিল। সেখানে দাবি করা হয়েছিল, নাতালিয়া পর্ন ছবির দুনিয়ায় বেশ পরিচিত মুখ। তবে সে সবই গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
নাতালিয়ার দাবি ছিল, নীল ছবিতে কাজ করেন না তিনি। মডেলিংই তাঁর পেশা। তবে নাতালিয়ার দাবি সত্যি-মিথ্যে যা-ই হোক না কেন, তাঁকে নিয়ে কম মাতামাতি হয়নি। টাইট সাদা স্লিভলেস পোশাকে রাশিয়া লেখা নাতালিয়ার ছবি ভেসে উঠেছিল ট্যাবলয়েডের পাতায় পাতায়।
লাতিন আমেরিকার মাঠে আগুন ছড়িয়ে বেশ নামডাক হয়েছে নিসু কটি নামে এক স্বল্পবসনার। পেরুর জাতীয় দলের ‘বান্ধবী’ হিসাবে তাঁর নামকরণ করেছিল ট্যাবলয়েডগুলি।
২০১৮ সালের বিশ্বকাপ হোক বা কোপা আমেরিকা, পেরু গোল করলেই বেশির ভাগ সময় নিজের ‘টপ’ খুলে ফেলতেন নিসু। সে ছবিতে ছয়লাপ হয়েছে ট্যাবলয়েডগুলি। তার পর থেকেই তাঁর নামের পাশে ‘গার্লফ্রেন্ড’ জুড়ে যায়।
কোপা আমেরিকার বহু খেলায় দেখা গিয়েছে, পেরু গোল করলেই শার্ট খুলে ফেলেছেন নিসু। লাল-সাদা অন্তর্বাস পরেই পতাকা তুলে ধরেছেন। ইনস্টাগ্রামেই জাতীয় দলের ফুটবলারদের হয়ে নানা পোস্ট দেন নিসু।
নাতালিয়ার মতোই মাঠ কাঁপিয়েছিলেন রুশ কন্যা তথা অভিনেত্রী মারিয়া লিম্যান। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে দর্শকদের মধ্যে ক্যামেরা ঘোরালেই দেখা গিয়েছে, রাশিয়ার হয়ে গলা ফাটাচ্ছেন তিনি।
ট্যাবলেয়েডের পাতায় ভেসে উঠতে বেশি দেরি হয়নি মারিয়ার। রাতারাতি খ্যাতি কুড়োনো মারিয়া আগে থেকেই দেশ ছেড়ে ব্রিটেনে বসবাস করতে শুরু করেছিলেন। তবে রুশ ফুটবলাররা যেখানেই খেলতে গিয়েছেন, দর্শকদের মধ্যে দেখা গিয়েছে মারিয়াকে।
২০১৮ সালের বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় স্পেনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত ১-১ করেছিল রাশিয়া। পেনাল্টি শুটআউটে রুখে দাঁড়ান রুশ গোলরক্ষক ইগর আকিনফিভ। মূলত তাঁর সৌজন্যেই ৪-৩ গোলে পেনাল্টি শুটআউটে জেতে রাশিয়া। সে সময় মারিয়ার মুচমুচে ছবিতে বহু অনুরাগীর হৃদয়ে ঝড় উঠেছিল।
২০১৬ সালে ফ্রান্সে ইউরো কাপের সময় থেকেই খ্যাতির আলোয় এসেছিলেন পোল্যান্ডের সুন্দরী মার্তা বার্কজ়ক। দু’বছর পর রাশিয়ায় বিশ্বকাপের সময়ও তাঁকে দর্শকাসনে খুঁজে নেয় ক্যামেরা। ফুটবল স্টেডিয়াম থেকেই যে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়েছিল, সে কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন মার্তা।
সংবাদমাধ্যমে মার্তা বলেছিলেন, ‘‘বিশ্বকাপের আসরই আমাকে প্রচারের আলোয় এনে দিয়েছে। দুনিয়াজোড়া মিডিয়ায় আমার সম্পর্কে কত যে প্রতিবেদন লেখা হয়েছে!’’ বস্তুত, ফিফার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকেও তাঁর ছবি পোস্ট করা হয়েছিল।
বিশ্বকাপের সময় মার্তার সঙ্গে ‘পোলিশ মিস্ ওয়ার্ল্ড কাপ’-এর তকমা এঁটে বসেছিল। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের আগে সাংবাদিক হিসাবে কাজ করছিলেন তিনি। তবে রাতারাতি খ্যাতির আলোয় আসার পর সে কাজ ছেড়ে মডেলিংকেই পেশা হিসাবে বেছে নেন মার্তা।
২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপের সময় হইচই ফেলে দিয়েছিলেন কলোম্বিয়ার সুন্দরী নাতালিয়া বেতানকোর্ট। এমনকি, পপতারকা রিহানাও তাঁকে নিয়ে টুইট করেছিলেন। সে টুইটে আবার নাতালিয়াকে ‘কলোম্বিয়ান কিউটি’ বলে ডেকেছিলেন রিহানা। এর পর তো তাঁকে নিয়ে মাতামাতি হবেই!
ব্রাজিল বিশ্বকাপে দর্শকদের দিকে ক্যামেরা ঘোরাতেই দেখা গিয়েছিল, হামেজ় রদ্রিগেজ়দের হয়ে গলা ফাটাচ্ছেন নাতালিয়া। নাতালিয়ার সে ছবি হু হু করে ছড়িয়ে পড়েছিল।
আজকাল অবশ্য সমাজমাধ্যমের মধ্যমণি হয়ে বসেছেন নাতালিয়া। শুধু ইনস্টাগ্রামেই তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা ১০ লক্ষাধিক।
সুইৎজ়ারল্যান্ডের ফুটবলার ব্লেরিম জ়ামাইলির স্ত্রী হওয়ায় আগে থেকেই শিরোনামে ছিলেন সুইস-সুন্দরী ইরোনা সুলেমানি। তবে ২০১৬ সালের ইউরো কাপের সময় তাঁর খ্যাতি একলাফে বহু গুণ বেড়ে গিয়েছিল।
ইউরোর ম্যাচে যে সমস্ত সুন্দরী স্টেডিয়ামে বসে সুইৎজ়ারল্যান্ডের হয়ে গলা ফাটিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে সাড়া ফেলেছিলেন ইরোনা। সে বার তো তাঁকেই ইউরোপের ‘হটেস্ট ফ্যান’-এর তকমা দিয়েছিল সংবাদমাধ্যম।
আলবেনিয়ার নাগরিক ইরোনা অবশ্য জানিয়েছিলেন, স্বামীর জন্যই সুইসদের হয়ে গলা ফাটাবেন তিনি। নাপোলির প্রাক্তন তারকা জ়ামাইলির স্ত্রী যদিও মডেলিং করে বেশ নামডাক করেছেন। তবে ২০১৬ সালের ইউরোর পর তাঁর খ্যাতি আরও বেড়ে যায়। সে সময় তাঁকে নিয়ে ফোটোশুটও করে ইটালির একটি নামকরা পত্রিকা।