Parineeti Chopra

১৭ বছরে বাড়ি ছাড়েন, বলিউডে ব্যর্থতায় অবসাদে ভোগেন, ছ’মাস নিজেকে ‘বন্দি’ রাখেন পরিণীতি

অভিনয়জগতে কেরিয়ার গড়ার কয়েক বছর পর ছবি ব্যর্থ হলে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন বলি তারকা পরিণীতি চোপড়া।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:০৭
Share:
০১ ২১
Parineeti Chopra

বলিপাড়ার প্রথম সারির অভিনেত্রী। দিদিও অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু কেরিয়ার গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন ক্ষেত্রে। সে কারণে ১৭ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। অদৃষ্টের টানে অভিনয়জগতে ফিরে আসার পর ছবি ব্যর্থ হলে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন বলি তারকা পরিণীতি চোপড়া। সদ্য সাতপাকে বাঁধা পড়ে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন তিনি।

০২ ২১
Parineeti Chopra and Raghav Chadha wedding

রবিবার আম আদমি পার্টির সাংসদ রাঘব চড্ডার সঙ্গে রাজস্থানের উদয়পুরে লেক পিচোলার ধারে বিয়ে হল পরিণীতির। বিয়েতে আড়ম্বরও ছিল তাক লাগানোর মতো। বর্তমানে বলিউডে উপার্জনের নিরিখে প্রথম সারিতে থাকা অভিনেত্রীদের মধ্যে পরিণীতি অন্যতম। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার গড়তে চাননি তিনি।

Advertisement
০৩ ২১
Parineeti Chopra

১৯৮৮ সালের ২২ অক্টোবর মাসে হরিয়ানার অম্বালায় জন্ম পরিণীতির। হরিয়ানায় স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনে পাড়ি দেন তিনি।

০৪ ২১

ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ছিল পরিণীতির। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি পরীক্ষায় প্রথম তিনের মধ্যে থাকত পরিণীতির নাম। এমনকি একটি পরীক্ষায় শীর্ষ স্থান অধিকার করার কারণে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পটেলের কাছ থেকে পুরস্কারও পান পরিণীতি।

০৫ ২১

১৭ বছর বয়সে লন্ডনে যান পরিণীতি। ম্যাঞ্চেস্টার বিজ়নেস স্কুলে ব্যবসা, অর্থনীতি এবং বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। তিনটি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করার পর সেখানে গানবাজনা নিয়েও পড়েন পরিণীতি।

০৬ ২১

কলেজে পড়াকালীন সেখানকার ফুটবল ক্লাবের সঙ্গে কিছু সময়ের জন্য কাজ করেন পরিণীতি। এমনকি ম্যাচ চলাকালীন খাবার সরবরাহের দায়িত্বেও থাকতেন তিনি।

০৭ ২১

ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন পরিণীতি। কলেজের পড়াশোনা শেষ করে লন্ডনেই চাকরি খুঁজতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু ২০০৯ সালে ব্রিটেনে অর্থনৈতিক মন্দার ফলে চাকরির আকাল দেখা যায়। ফলে সেখানে হাজার চেষ্টা করেও চাকরি পাচ্ছিলেন না তিনি। বাধ্য হয়ে তাঁকে মুম্বইয়ে ফিরে আসতে হয়।

০৮ ২১

মুম্বইয়ে ফেরার পর বলিপাড়ার খ্যাতনামী প্রযোজনা সংস্থা যশরাজ ফিল্মসের দফতরে জনসংযোগ পরামর্শদাতা (পাবলিক রিলেশন্‌স কনসালট্যান্ট) হিসাবে কাজ করা শুরু করেন পরিণীতি।

০৯ ২১

২০১০ সালেমুক্তিপ্রাপ্ত ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’ ছবির প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন পরিণীতি। সেই সময় অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মায় তাঁর। প্রযোজনা সংস্থার চাকরি ছেড়ে তিনি অভিনয় শিখতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হন।

১০ ২১

২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘লেডিস ভার্সেস রিকি বহল’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় পরিণীতিকে। বক্স অফিসে এই ছবি তেমন ব্যবসা করতে পারেনি।

১১ ২১

২০১২ সালে যশরাজ ফিল্মসের প্রযোজনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ইশকজাদে’। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান পরিণীতি। বনি কপূরের পূত্র অর্জুন কপূর এই ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন। এই ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় পুরস্কার পান পরিণীতি।

১২ ২১

তার পর ‘শুদ্ধ দেশি রোম্যান্স’, ‘হাসে তো ফাঁসে’র মতো রোম্যান্টিক ঘরানার ছবিতে অভিনয় করেন পরিণীতি। দু’টি ছবিই ভাল ব্যবসা করে এবং পরিণীতির অভিনয় যথেষ্ট প্রশংসা পায়।

১৩ ২১

তবে ২০১৪ সালের শেষ দিক থেকে শুরু করে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পরিণীতির কেরিয়ারের সূর্য অস্তমিত হয়ে পড়ে বলে দাবি করেন অভিনেত্রী। সেই সময় পরিণীতি যে ছবিগুলিতে অভিনয় করেছিলেন সেগুলির একটিও তেমন ব্যবসা করতে পারেনি।

১৪ ২১

এক পুরনো সাক্ষাৎকারে পরিণীতি জানান, পর পর ছবি ব্যর্থ হওয়ার কারণে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। ধীরে ধীরে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন।

১৫ ২১

পরিণীতি বলেন, ‘‘দেড় বছর আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময় ছিল। ‘দাওয়াত-এ-ইশক’ এবং ‘কিল দিল’ ছবি দু’টি ভাল চলেনি। পেশাগত দিক থেকে আমি ভেঙে পড়ছিলাম। আমার কাছে কোনও টাকা ছিল না। বাড়ি কেনার জন্য প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করে ফেলেছিলাম। ব্যক্তিগত জীবনেও ঝড় বয়ে যায়। মন ভেঙে গিয়েছিল আমার। জীবনে ইতিবাচক কোনও কিছু ছিল না।’’

১৬ ২১

পরিণীতি আরও বলেন, ‘‘খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম আমি। কোনও বন্ধুবান্ধব ছিল না। এমনকি পরিবার থেকেও নিজেকে সম্পূর্ণ সরিয়ে ফেলেছিলাম। হয়তো দু’সপ্তাহে এক বার তাদের সঙ্গে কথা বলতাম আমি। নিজের ঘরের চার দেওয়ালের বাইরে বার হতাম না।’’

১৭ ২১

খারাপ সময়ের কথা উল্লেখ করে পরিণীতি বলেন, ‘‘ঘরে বসে শুধু টিভি দেখতাম আর ঘুমোতাম। ঘুম থেকে উঠে আবার সেই গতেধরা জীবন। সোফার উপর গুটিয়ে শুয়ে থাকতাম। অসুস্থও হয়ে পড়তাম বেশির ভাগ সময়। ছ’মাস কোনও মিডিয়ার সঙ্গে কথাও বলিনি আমি।’’

১৮ ২১

পরিণীতি জানান, তাঁর ভাই সহজ তাঁকে অবসাদ কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেন। অভিনেত্রী তাঁর এক বান্ধবীর কথাও উল্লেখ করেন। সাক্ষাৎকারে পরিণীতি বলেন, ‘‘আমার ভাই সাহেজ সেই সময় আমায় সঙ্গ দিয়েছিল। ও একমাত্র মানুষ যার সঙ্গে আমি রোজ কথা বলতাম। আমার বান্ধবী সঞ্জনাও সেই সময় আমার পাশে ছিল। দিনে অন্তত ১০-১২ বার কাঁদতাম আমি। দেড় বছর এই পরিস্থিতিতে থাকার পর ২০১৬ সালের গোড়ার দিকে সব ধীরে ধীরে ঠিক হতে শুরু করে।’’

১৯ ২১

২০১৬ সাল থেকে পরিণীতি আবার নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেন বলে সাক্ষাৎকারে জানান। ‘মেরি প্যারি বিন্দু’ এবং ‘গোলমাল এগেন’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাবে রাজি হন তিনি। এমনকি শরীরচর্চার দিকেও মনোনিবেশ করেন অভিনেত্রী।

২০ ২১

বলিউডে কেরিয়ার শুরু করার সময় চেহারা নিয়ে কটাক্ষের শিকার হন পরিণীতি। মুখের গড়ন থেকে শুরু করে ওজন নিয়েও নানা রকম কুমন্তব্য শুনতে হয়েছিল তাঁকে। বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, কটাক্ষের শিকার হয়ে শরীরচর্চার মাধ্যমে ২৮ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন অভিনেত্রী।

২১ ২১

বর্তমানে নতুন সংসার নিয়ে ব্যস্ত পরিণীতি। পাশাপাশি ৬ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে তাঁর ছবিও মুক্তি পেতে চলেছে। টিনু সুরেশ দেশাইয়ের পরিচালনায় মুক্তি পাচ্ছে ‘মিশন রানিগঞ্জ’। এই ছবিতে পরিণীতির সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যাবে অক্ষয় কুমারকে।

সকল ছবি সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement