বোন বলিপাড়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী। কিন্তু মায়ানগরীর ঝলমলে দুনিয়া থেকে শত হস্ত দূরে রয়েছেন তিনি। সম্প্রতি এক শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে প্রচারে এসেছেন খুশবু পটানী।
বলি নায়িকা দিশা পটানীর দিদি খুশবু। ১৯৯১ সালের নভেম্বর মাসে উত্তরপ্রদেশের বরেলীতে জন্ম খুশবুর। বাবা-মা এবং দুই ভাইবোনের সঙ্গে সেখানেই থাকতেন তিনি। বোন অভিনয়ের দিকে ঝুঁকলেও সে বিষয়ে কোনও আগ্রহ ছিল না খুশবুর।
বরেলীর স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে গ্রেটার নয়ডার এক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন খুশবু। সেখান থেকে ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হন তিনি।
শৈশব থেকেই ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন বুনেছিলেন খুশবু। কলেজের পড়াশোনা শেষ করে সেই স্বপ্ন পূরণ করেন তিনি।
পরীক্ষা দিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত হন খুশবু। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে লেফটেন্যান্ট পদে দীর্ঘ দিন কর্মরত ছিলেন তিনি। তার পর মেজর পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন খুশবু।
সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর শরীরচর্চা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন খুশবু। সমাজমাধ্যমে সেই সংক্রান্ত নানা ভিডিয়োও পোস্ট করেন তিনি।
পেশাগত দিক থেকে মিল না থাকলেও বোনের সঙ্গে শরীরচর্চার ক্ষেত্রে মিল রয়েছে খুশবুর। অভিনয়ের পাশাপাশি ফিটনেস নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহী দিশা। মার্শাল আর্টস হোক বা কিকবক্সিং, অনায়াসে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে সক্ষম তিনি।
লেখাপড়ার ক্ষেত্রে দিশা তাঁর দিদির চেয়ে খানিকটা পিছিয়ে। স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে নয়ডার এক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।
তবে কলেজের পড়াশোনা নিয়ে এগোতে পারেননি। বলিপাড়া সূত্রে খবর, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালীন মডেলিংয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি।
কলেজের পড়াশোনা মাঝপথে ছেড়ে বিনোদনজগতের দিকেই মন দিয়েছিলেন দিশা। বরেলী থেকে চলে গিয়েছিলেন মুম্বইয়ে।
২০১৫ সালে তেলুগু ছবি ‘লোফার’-এ অভিনয় করে বড় পর্দায় পা রাখেন দিশা। তার এক বছর পর বলিপাড়ায় কেরিয়ার শুরু করেন তিনি।
২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘এমএস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ ছবিতে অভিনয় করে বহুল প্রশংসা কুড়োন দিশা। তার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি দিশাকে।
‘বাগী ২’, ‘ভারত’, ‘মলং’, ‘রাধে’, ‘এক ভিলেন রিটার্নস’, ‘যোদ্ধা’, ‘কল্কি ২৮৯৮ এডি’, ‘কঙ্গুভা’র মতো একাধিক ছবিতে কাজ করেছেন দিশা। জ্যাকি চ্যানের সঙ্গে চিনা ছবি ‘কুং ফু যোগা’তেও দেখা গিয়েছে তাঁকে।
সম্প্রতি দিশার দিদি খুশবু আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন। রবিবার তাঁর সমাজমাধ্যমের পাতায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে খুশবু জানিয়েছেন যে, ভাঙাচোরা বাড়ি থেকে এক শিশুকন্যাকে উদ্ধার করেছেন তিনি।
সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় ওই শিশুকন্যাকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। অসহায় অবস্থায় ভাঙাচোরা বাড়িতে বাচ্চাটি কান্নাকাটি করছিল।
খুশবু জানিয়েছেন, বাড়ির পাশ থেকে শিশুকন্যার কান্নার আওয়াজ প্রথম পেয়েছিলেন খুশবুর মা। দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন খুশবু।
বাচ্চাটিকে দেখেই তাকে কোলে তুলে তার গায়ের ধুলো ঝেড়ে দেন খুশবু। ভিডিয়োয় তাঁকে বলতে শোনা যায়, “কিছু হবে না, সোনা। তুমি এখন নিরাপদে রয়েছ।”
খুশবু বলে ওঠেন, “আপনারা যদি বরেলীর বাসিন্দা হন এবং এই বাচ্চাটির কোনও খবর পান তা হলে যোগাযোগ করুন। কী ভাবে এক ফুলের মতো শিশুকে কেউ ফেলে চলে যেতে পারেন? এই ধরনের বাবা-মায়েদের দেখলে লজ্জা হয়।” বাচ্চাটিকে উদ্ধার করার পর তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন খুশবু। পরে পুলিশ এসে বাচ্চাটিকে নিয়ে যায়।
সমাজমাধ্যমে নিজের পরিচিতি গড়ে তুলেছেন খুশবু। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামের পাতায় তাঁর অনুগামীর সংখ্যা ন’লক্ষের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।