আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু কমলা হ্যারিসকে ‘ভোট’ দিয়েছেন বলি নায়িকার প্রিয় বান্ধবী। মুম্বইয়ের বাসিন্দা হয়ে কী করে তিনি ভোটে অংশগ্রহণ করলেন, আমেরিকার নাগরিকত্ব কি পেয়েছেন তিনি? সমাজমাধ্যমে ‘ভোটদানের’ ছবি পোস্ট করে চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে পড়েছেন আকাঙ্ক্ষা রঞ্জন কপূর।
মুম্বইয়ের বাসিন্দা আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘ভোট’ দিয়েছেন তিনি। সমাজমাধ্যমে নিজস্বী দিয়ে তেমনই দাবি করেছেন তিনি। টি-শার্টের এক কোণে লেখা ‘আই ভোটেড’। বাংলায় যার অর্থ ‘আমি ভোট দিয়েছি’। নিজস্বীর সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন কমলা হ্যারিসের নাম লেখা একটি স্টিকার। এই ছবিটি ইনস্টাগ্রামের পাতায় স্টোরি দিয়ে আকাঙ্ক্ষা ইঙ্গিত দিলেন যে, তিনি কমলা হ্যারিসকে ভোট দিয়েছেন। তবে এই প্রসঙ্গে এখনও মুখ খোলেননি তিনি। তার পরই শুরু হয়েছে আকাঙ্ক্ষাকে নিয়ে চর্চা।
১৯৯৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে জন্ম আকাঙ্ক্ষার। বাবা-মা এবং দিদির সঙ্গে সেখানেই থাকেন তিনি। তাঁর বাবা বলিউডের অন্যতম প্রযোজক-পরিচালক শশী রঞ্জন। ইন্ডিয়ান টেলিভিশন অ্যাকাডেমির ডিরেক্টর আকাঙ্ক্ষার মা অনু রঞ্জন। তাঁর দিদি অনুষ্কা রঞ্জন পেশায় মডেল-অভিনেত্রী।
মুম্বইয়ের জুহুর একটি স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছেন আকাঙ্ক্ষা। তাঁর স্কুলের সহপাঠী ছিলেন বলি অভিনেত্রী আলিয়া ভট্ট। স্কুলে পড়াকালীন বন্ধুত্ব হয় দু’জনের। আলিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব গাঢ় হলে আকাঙ্ক্ষা তাঁর প্রিয় বান্ধবী হয়ে ওঠেন।
স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার পর মুম্বইয়ের এক কলেজে অভিনয় নিয়ে ডিপ্লোমা করেন আকাঙ্ক্ষা। ২০১৯ সালে মডেল হিসাবে কেরিয়ার শুরু করেন তিনি।
ছোট পর্দার একটি ফ্যাশন শোয়ে মডেলিং করতে দেখা যায় আকাঙ্ক্ষাকে। ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির নামজাদা পোশাক পরিকল্পকের সঙ্গে পরিচিতি তৈরি হয়ে যায় তাঁর। সম্প্রতি মণীশ মলহোত্রের বাড়িতে দীপাবলির অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আকাঙ্ক্ষা।
বলি অভিনেতা অপারশক্তি খুরানার সঙ্গে একটি মিউজ়িক ভিডিয়োয় অভিনয়ের সুযোগ পান আকাঙ্ক্ষা। অঙ্কিত তিওয়ারি, জ্যাসলিন কউর রয়্যালের মতো একাধিক সঙ্গীতশিল্পীর সঙ্গে মিউজ়িক ভিডিয়োয় কাজ করেন আকাঙ্ক্ষা।
বড় পর্দায় নয়, ওটিটির পর্দায় মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন আকাঙ্ক্ষা। ২০২০ সালে কর্ণ জোহরের প্রযোজনায় ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পায় ‘গিল্টি’। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় কিয়ারা আডবাণীকে। ‘গিল্টি’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান আকাঙ্ক্ষা।
হিন্দি ছবির পর ওয়েব সিরিজ়েও অভিনয়ের প্রস্তাব পান আকাঙ্ক্ষা। ২০২১ সালে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পায় ‘রে’ নামের একটি ওয়েব সিরিজ়। সত্যজিৎ রায়ের ছোট গল্প অবলম্বনে এই সিরিজ়ের এক একটি এপিসোড তৈরি করা হয়। ভাসান বালার পরিচালনায় ‘স্পটলাইট’ নামের এপিসোডে হর্ষবর্ধন কপূরের সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় আকাঙ্ক্ষাকে।
ভাসান বালার পরিচালনায় ২০২২ সালে ওটিটির পর্দায় মুক্তি পায় ‘মনিকা, ও মাই ডার্লিং’ নামের একটি ছবি। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছেন রাজকুমার রাও, হুমা কুরেশি এবং রাধিকা আপ্তে। আকাঙ্ক্ষাকে এই ছবিতেও পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়।
প্রিয় বান্ধবীর সঙ্গেও ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন আাকাঙ্ক্ষা। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘জিগরা’। এই ছবির পরিচালকের আসনে ছিলেন ভাসান বালা এবং প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন কর্ণ জোহর। আলিয়া অভিনীত ‘জিগরা’ ছবিতে ক্যামিয়ো চরিত্রে অভিনয় করেন আকাঙ্ক্ষা।
কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে যে, একটি দক্ষিণী ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যাবে আকাঙ্ক্ষাকে। সেই ছবিটির শুটিংও শেষ করে ফেলেছেন তিনি।
বলিপাড়ার অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, ক্রিকেটার লোকেশ রাহুলের সঙ্গে নাকি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন আকাঙ্ক্ষা। রাহুলের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই দেখা যেত আকাঙ্ক্ষাকে। ক্রিকেটারও যখন মুম্বই যেতেন, তখন নাকি আকাঙ্ক্ষার সঙ্গেই বেশির ভাগ সময় কাটাতেন।
এক পুরনো সাক্ষাৎকারে আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে রাহুল বলেছিলেন, ‘‘আমি তো এই সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমার ব্যক্তিগত জীবন আমি ব্যক্তিগত রাখার চেষ্টাই করি। যদি প্রেম, সম্পর্ক নিয়ে কিছু বলার সিদ্ধান্ত নিই তবে তা নিজে থেকেই জানাব।’’
বলিপাড়া সূত্রে খবর, তিন বছর সম্পর্কে থাকার পর ২০২৩ সালে বলি অভিনেতা সুনীল শেট্টির কন্যা আথিয়া শেট্টিকে বিয়ে করেন রাহুল। তাঁদের বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আকাঙ্ক্ষা। শোনা যায়, আথিয়ার সঙ্গেও ভাল বন্ধুত্ব রয়েছে আকাঙ্ক্ষার।
আকাঙ্খা সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানান, বলি পরিচালক শরণ শর্মার সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন নায়িকা। ‘গুঞ্জন সাক্সেনা: দ্য কার্গিল গার্ল’ এবং ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি’ ছবির পরিচালনা করেছেন শরণ।
সমাজমাধ্যমে কম সময়ের মধ্যে নিজস্ব অনুগামী মহল তৈরি করে ফেলেছেন আকাঙ্ক্ষা। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামের পাতায় তাঁর অনুগামীর সংখ্যা ১০ লক্ষের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।