নারী-পুরুষের মধ্যে যৌনতার খেলা চলে আসছে সৃষ্টির আদিকাল থেকে। সঙ্গমে মেলে যৌন পরিতৃপ্তি। শরীরে খেলায় একে অপরকে নতুন করে আবিষ্কার করেন যুগল। চার দেওয়ালের গোপন পরিসরে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে মিলিত হন।
তবে প্রতি দিনের অভ্যাসে সঙ্গমেও কখনও কখনও লাগতে পারে একঘেয়েমির দাগ। তখন শরীরের এই খেলায় নতুনত্ব খোঁজেন নারী-পুরুষ। নিত্যনতুন ভঙ্গিতে মিলিত হতে ব্যাকুল হয়ে ওঠেন তাঁরা।
তেমনই নতুনত্ব খুঁজতে গিয়েছিলেন নাগপুরের যুগল। হোটেলের ঘরে অভিনব কায়দায় মিলিত হয়েছিলেন তাঁরা। সেই মিলনই ডেকে এনেছিল মৃত্যু।
ঘটনাটি ২০২১ সালের। নাগপুরের খাপরখেদা এলাকায় একটি হোটেলের ঘরে সময় কাটাতে গিয়েছিলেন যুগল। তাঁরা পরকীয়া সম্পর্কে ছিলেন। ৩০ বছরের যুবক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন এক বিবাহিতা নারীর সঙ্গে।
হোটেলের ঘরে সঙ্গমে অভিনব কিছু কায়দা করেছিলেন যুগল। যৌনসুখের মাত্রা বৃদ্ধি করতে যুবকের হাত, পা কষে বেঁধে দিয়েছিলেন মহিলা। সেই বাঁধনেই নেমে আসে মৃত্যু।
পুলিশ জানিয়েছে, যৌনতৃপ্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে যুবককে চেয়ারে বসিয়ে প্রথমে তাঁর হাত এবং পা শক্ত করে বেঁধে দিয়েছিলেন প্রেমিকা। তার পর গলাতেও জড়িয়ে দিয়েছিলেন নাইলনের দড়ি। তাতেই নাকি যৌনতার সুখ চরমে পৌঁছবে।
হাত, পা বাঁধা অবস্থাতেই তাঁরা মিলিত হয়েছিলেন। তার পর শৌচাগারে যান মহিলা। যুবকের বাঁধন না খুলেই তিনি উঠে গিয়েছিলেন। কিছু ক্ষণ পর ঘরে ফিরে দেখেন, যুবক অচৈতন্য। তাঁর মাথা নুইয়ে পড়েছে।
দ্রুত হোটেল কর্তৃপক্ষকে খবর দেন মহিলা। কর্মীরা এসে যুবকের বাঁধন খোলেন। তার পর খবর দেওয়া হয় পুলিশে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পৌঁছলে তাদের কাছে গোটা ঘটনাটি বিশদে জানান মহিলা।
মহিলাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। কেন তিনি যুবককে চেয়ারে বেঁধে রেখেছিলেন, তাঁর সঙ্গে কোনও শত্রুতা ছিল কি না, সে সব প্রশ্ন করা হয়।
তদন্তে দেখা যায়, হাত, পা বাঁধা অবস্থায় চেয়ারে বসে থাকাকালীন পা পিছলে গিয়েছিল যুবকের। তিনি চেয়ার থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। তখনই তাঁর গলার দড়িতে ফাঁস লেগে যায়। ফলে চিৎকার করে সাহায্য চাওয়ারও কোনও সুযোগ তিনি পাননি।
এই ঘটনায় দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর মামলা রুজু করে পুলিশ। মহিলার ফোন বাজেয়াপ্ত করে তারা। উদ্ধার করা হয়েছিল মৃত যুবকের ফোনও। ওই হোটেলের মালিক এবং কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেন তদন্তকারীরা।
পুলিশের জেরার মুখে মহিলা স্বীকার করে নিয়েছিলেন যে, তিনি যুবকের সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। প্রায়ই তাঁরা হোটেলের ঘরে মিলিত হতেন। এই সম্পর্কের কথা মহিলার পরিবারের কেউ জানতেন না।
সঙ্গমকালে মৃত্যুর ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। এর আগেও পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে নানা ভাবে সঙ্গমের সময় আচমকা মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এসেছে। নানা ক্ষেত্রেই মৃত্যুর কারণ ছিল অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর।
সঙ্গমকালে আচমকা হৃদ্রোগ কিংবা মাত্রাতিরিক্ত অর্গ্যাজ়মের কারণে মৃত্যুর কথা এর আগে শোনা গিয়েছিল। তবে নাগপুরের ঘটনা নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন।
হলিউডের জনপ্রিয় ছবি ‘ফিফ্টি শেডস্ অফ গ্রে’ ছবিতে হাত, পা বেঁধে সঙ্গমের দৃশ্য দেখানো হয়েছিল। সেই ছবি দেখেই নাগপুরের যুগল অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।