লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফায় ছ’টি রাজ্য এবং দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৯টি আসনে ভোট রয়েছে। ২০ মে ভোটগ্রহণ। কোন কোন আসনে চোখ থাকবে এই দফায়? কোন প্রার্থী কাড়বেন নজর? তাঁদের পূর্ব ইতিহাসই বা কী বলছে? কার কত সম্পত্তি?
পঞ্চম দফায় বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা এবং দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখ, জম্মু ও কাশ্মীরে রয়েছে ভোট।
পঞ্চম দফায় ভোট রয়েছে উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলী এবং অমেঠীতে। মা সনিয়া গান্ধীর ছেড়ে যাওয়া রায়বরেলীতে এ বার প্রার্থী রাহুল গান্ধী। অমেঠীতে ২০১৯ সালে বিজেপির স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে গিয়েছিলেন রাহুল। এ বার সেখানে কংগ্রেসের প্রার্থী কেএল শর্মা।
পঞ্চম দফায় প্রার্থীর সংখ্যা ৬৯৫। অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর) বলছে, প্রার্থীদের গড় সম্পত্তির পরিমাণ ৩.৫৬ কোটি টাকা। পঞ্চম দফায় প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধনী হলেন ঝাঁসির বিজেপি প্রার্থী। অনুরাগ শর্মার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২১২ কোটি টাকা।
পঞ্চম দফায় ৩৩ শতাংশ প্রার্থীই কোটিপতি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে পঞ্চম দফায় ভোট হয়েছে ৫১টি আসনে। সেখানে বিজেপি প্রার্থীদের গড় সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৬.৯১ কোটি টাকা। এ বার পঞ্চম দফায় বিজেপি প্রার্থীদের গড় সম্পত্তির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২১.৯ কোটি টাকা।
এই দফায় সবচেয়ে বেশি আসনে লড়াই করছেন বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)-র প্রার্থীরা। তাঁদের গড় সম্পত্তির পরিমাণ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের থেকে কমেছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিএসপি প্রার্থীদের গড় সম্পত্তি ছিল ৩.৩ কোটি টাকা। এখন তা কমে হয়েছে ২.৬৬ কোটি টাকা।
পঞ্চম দফার প্রার্থীদের মধ্যে তিন জনের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১০০০ টাকারও কম। উত্তরপ্রদেশের কায়সেরগঞ্জেও ভোট পঞ্চম দফায়। সেখানে প্রার্থী বিজেপির বিদায়ী সাংসদ ব্রিজভূষণ সিংহের ছেলে করণভূষণ সিংহ। এই আসনের সকল প্রার্থীই কোটিপতি।
অন্য দিকে, পশ্চিমবঙ্গের আরামবাগে লড়াই করছেন ১০ জন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে মাত্র এক জন কোটিপতি।
পঞ্চম দফায় ৪৯টি আসনে ভোট। তার মধ্যে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে ৪০টি আসনে। ৪০ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩৬ জনই কোটিপতি। তাঁদের মধ্যে তিন জন প্রার্থীর সম্পত্তির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকার বেশি।
বিএসপি এই দফায় ৪৬টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৬ জন কোটিপতি। কংগ্রেস ১৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে পঞ্চম দফায়। তাঁদের মধ্যে ১৫ জন কোটিপতি। এক জনের সম্পত্তির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকার বেশি।
সমাজবাদী পার্টি পঞ্চম দফায় ১০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। সেই ১০ জন প্রার্থীই কোটিপতি। সমাজবাদী পার্টির প্রার্থীদের নামে অপরাধের মামলাও রয়েছে। ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫০ শতাংশের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। ৪০ শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
পঞ্চম দফায় বিজেপির প্রার্থীসংখ্যা ৪০। তাঁদের মধ্যে ১৯ জনের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। শতকরা হারে ৪৭.৫ শতাংশ। এই দফায় বিজেপির মোট প্রার্থীর মধ্যে ৩০ শতাংশের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুরে বিজেপির প্রার্থী অর্জুন সিংহ। তাঁর বিরুদ্ধেই সবচেয়ে বেশি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। মোট ৯৩টি মামলা দায়ের হয়েছে অর্জুনের বিরুদ্ধে।
সংখ্যার হিসাবে পঞ্চম দফায় ১৫৯ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে অপরাধের মামলা। ১২২ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর অপরাধের মামলা।
উত্তরপ্রদেশের মোহনলালগঞ্জ কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে অপরাধের মামলা। ১১ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪৫.৫ শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে অপরাধের মামলা। অমেঠীতে এক জন প্রার্থীর বিরুদ্ধেও কোনও অপরাধের মামলা নেই।
পঞ্চম দফাতেও রাজনৈতিক দলগুলির প্রার্থীদের মধ্যে মহিলার সংখ্যা কম। যদিও তৃণমূলের সাত জন প্রার্থীর মধ্যে তিন জন মহিলা।
বিএসপি ৪৬ জন প্রার্থী দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে মাত্র দু’জন মহিলা। বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে ৪০টি আসনে। তাঁদের মধ্যে আট জন প্রার্থী মহিলা। কংগ্রেস ১৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। ১৮ জনের মধ্যে দু’জন মহিলা প্রার্থী। সমাজবাদী পার্টির ১০জন প্রার্থীর মধ্যে দু’জন মহিলা।