Bollywood Veteran Actor

মহাতারকার সিনেমা দেখে পাল্টে ফেলেন নিজের নাম, মনোজ কুমার মামলা করেন শাহরুখের বিরুদ্ধে!

২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ওম শান্তি ওম’ ছবি থেকে বিতর্কের সূত্রপাত। ফারহা খান পরিচালিত এই ছবির এক দৃশ্যে মনোজকে নাকি নকল করেছিলেন শাহরুখ। মনোজের অভিযোগ, ছবিতে তাঁকে ব্যঙ্গ করে অপমান করা হয়েছে। বিষয়টি ভাল ভাবে নেননি মনোজ।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৪৯
Share:
০১ ১৮

শুক্রবার বলিপাড়ায় নামল শোকের ছায়া। ওই দিন সকালে মুম্বইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে প্রয়াত হন হিন্দি চলচ্চিত্রজগতের বর্ষীয়ান অভিনেতা মনোজ কুমার। জানা গিয়েছে, বার্ধক্যজনিত একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন ৮৭ বছরের অভিনেতা। এক সময় যিনি দেশভক্তির জন্য ‘ভারত কুমার’ নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন, তাঁকেই বড় পর্দা থেকে দূরে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল।

০২ ১৮

১৯৩৭ সালে জন্ম মনোজের। তাঁর আসল নাম অবশ্য হরিকৃষণ গিরি গোস্বামী। নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মনোজ নিজেই। তা-ও সিনেমার প্রতি তাঁর একান্ত ভালবাসার কারণে।

Advertisement
০৩ ১৮

দিল্লির কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করার পরেই মনোজ অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার গড়ার দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। কম বয়স থেকেই তিনি দিলীপ কুমারের অনুরাগী ছিলেন। কানাঘুষো শোনা যায়, প্রিয় অভিনেতাকে দেখে নিজের নাম বদলে ফেলেছিলেন মনোজ।

০৪ ১৮

১৯৪৯ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ‘শবনম’ নামের একটি হিন্দি ছবি। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন দিলীপ কুমার। দিলীপ অভিনীত চরিত্রের নাম ছিল মনোজ কুমার। সেই চরিত্রের নামানুসারেই নিজের নামও বদলে ফেলেছিলেন মনোজ।

০৫ ১৮

১৯৫৭ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ফ্যাশন’ নামের একটি ছবির হাত ধরে অভিনয়জগতে নেমেছিলেন মনোজ। তার পর একাধিক ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেলেও কেরিয়ারে বিশেষ লাভ করতে পারছিলেন না তিনি।

০৬ ১৮

১৯৬২ সালে ‘হরিয়ালি অওর রাস্তা’ নামের ছবিটি বক্স অফিসে ব্যবসা করেছিল মনোজের। ষাটের দশকে আর পিছনে ঘুরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। একের পর এক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করছিলেন তিনি। একাধিক দেশাত্মবোধক ছবিতে অভিনয় করার জন্য তিনি ‘ভারত কুমার’ নামেও পরিচিতি পেতে শুরু করেছিলেন।

০৭ ১৮

সত্তরের দশকের মা‌ঝামাঝি সময়ে মনোজ তাঁর কেরিয়ারের চূড়ায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সাফল্য বেশি দিন টেকেনি। আশির দশকে মনোজের কেরিয়ারের রেখচিত্র নিম্নমু‌খী হতে শুরু করেছিল। তাঁর কোনও ছবিই বক্স অফিসে ব্যবসা করতে পারছিল না।

০৮ ১৮

১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জয় হিন্দ’ নামে একটি ছবি পরিচালনা করেছিলেন মনোজ। সেই ছবিতে তাঁর পুত্র কুণাল গোস্বামীকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সেই ছবিও বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। তার পর তিনি নিজেই অভিনয়জগৎ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছিল কুণালের সঙ্গেও। তিনিও অভিনয়জগতে সফল হতে না পারায় দূরে সরে গিয়েছিলেন।

০৯ ১৮

মনোজের ব্যক্তিগত জীবন ছিল বেশ রঙিন। এক সাক্ষাৎকারে সে কথা জানিয়েছিলেন নিজেই। মনোজ জানিয়েছিলেন, কলেজে পড়ার সময় তাঁর জীবনে প্রেমের রং লেগেছিল। দিল্লির এক বন্ধুর বাড়িতে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে মনের মানুষের সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল মনোজের।

১০ ১৮

সেই সময়ে শশী গোস্বামী নামে এক মহিলার প্রেমে পড়েছিলেন মনোজ। সেই প্রসঙ্গে অভিনেতা বলেছিলেন, ‘‘শশীকে আমার বন্ধুর বাড়িতে প্রথম দেখেছিলাম। শশীর মাথায় সারা ক্ষণ দুষ্টু বুদ্ধি ঘোরাফেরা করত। আমি এমন চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে খুব কমই দেখেছিলাম। শশীকে দেখে ভাল লেগে গিয়েছিল আমার।’’

১১ ১৮

দেড় বছর মনোজ এবং শশী নাকি একে অপরের সঙ্গে কথা বলেননি। চোখে চোখেই কথা হত তাঁদের। মনোজ বলেছিলেন, ‘‘আমরা তখন আমাদের মনের কথা বলবার সাহস জোগাতে পারতাম না। খালি দূর থেকেই চোখাচোখি হত আমাদের।’’ তার পর বন্ধুরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মনোজ এবং শশীর দিকে।

১২ ১৮

মনোজ জানিয়েছিলেন, দিল্লির এক প্রেক্ষাগৃহে শশীকে নিয়ে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। তার পর থেকে ঘন ঘন তাঁদের দেখাসাক্ষাৎ হত। মনোজের পরিবারের তরফে কোনও বাধা না থাকলেও শশীর মা এবং ভাই তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন।

১৩ ১৮

মনোজের কলেজের পাড়ায় বাড়ি ছিল শশীর। মনোজ বলেছিলেন, ‘‘আমরা যেন প্রেম করতে গিয়ে ধরা না পড়ে যাই, তাই আমি আমার কলেজের ছাদে উঠে পড়তাম। শশীও তখন ওর বাড়ির ছাদে উঠত। পরস্পরের দেখা হয়ে যেত। কেউ টেরও পেতেন না।’’

১৪ ১৮

শশী জানিয়েছিলেন যে, মনোজকে বিয়ের পর চোখে চোখে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁর আত্মীয়েরা। শশী বলেছিলেন, ‘‘মনোজ কত সুন্দরী নায়িকার সঙ্গে অভিনয় করত। আমার আত্নীয়েরা ভাবতেন যে, মনোজ বুঝি কোনও নায়িকার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়বে। কিন্তু ও এমন মানুষ নয়। সেট ওর কাছে মন্দিরের মতো। কাজ শেষ হলেই ও বাড়ি চলে আসত।’’

১৫ ১৮

বলিপাড়া সূত্রে খবর, বলিউডের ‘বাদশা’ শাহরুখ খানের উপর রুষ্ট হয়েছিলেন মনোজ। শাহরুখের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছিলেন তিনি।

১৬ ১৮

২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ওম শান্তি ওম’ ছবি থেকে বিতর্কের সূত্রপাত। ফারহা খান পরিচালিত এই ছবির এক দৃশ্যে মনোজকে নাকি নকল করেছিলেন শাহরুখ। মনোজের অভিযোগ, ছবিতে তাঁকে ব্যঙ্গ করে অপমান করা হয়েছে। বিষয়টি ভাল ভাবে গ্রহণ করেননি মনোজ।

১৭ ১৮

২০০৮ সালে ‘ওম শান্তি ওম’ ছবির নির্মাতা এবং শাহরুখের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মামলা দায়ের করেছিলেন মনোজ। তাঁর দাবি ছিল, অবিলম্বে সেই ছবি থেকে নির্দিষ্ট দৃশ্য মুছে ফেলতে হবে এবং ক্ষমা চাইতে হবে।

১৮ ১৮

এই ঘটনা প্রসঙ্গে মনোজ কুমারের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, শাহরুখ নাকি ইমেলের মাধ্যমে ক্ষমা চেয়েছিলেন। ‘ওম শান্তি ওম’ ছবিটি জাপানেও মুক্তি পেয়েছিল। জাপানে মুক্তিপ্রাপ্ত সংস্করণে ওই বিতর্কিত দৃশ্যটি রেখে দেওয়া হয়েছিল। সেই নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মনোজ। তবে ২০১৩ সালে শাহরুখের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিয়েছিলেন তিনি।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement