বছর কুড়ি আগে তেমন পরিচিতি ছিল না কিম কার্দাশিয়ানের। পেজ থ্রি-র পাতায় মাঝেমধ্যে ২২ বছরের মেয়েটির নাম ভেসে উঠত বটে। তবে নামজাদা আইনজীবী রবার্ট কার্দাশিয়ানের মেয়ে হিসাবে। সেই আইনজীবী, যিনি আমেরিকান ফুটবলার ও জে সিম্পসনের বন্ধু। যিনি সিম্পসনের স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিকের হত্যাকাণ্ডে বন্ধুর হয়ে আদালতে সওয়াল করেছিলেন।
২০০২ সালে আরও কয়েকটি কারণে কিম কার্দাশিয়ানের নাম করতেন অনেকে। হিলটন হোটেলস-এর উত্তরাধিকারী প্যারিস হিলটনের বন্ধু হিসাবেও লোকজন চিনতেন তাঁকে। আবার হিপ হপ গায়িকা ব্র্যান্ডির স্টাইলিস্ট হিসাবেও চোখে পড়ছেন। সেই সঙ্গে ব্র্যান্ডির ছোটভাই উইলি ‘রে জে’ নরউডের বান্ধবী হিসাবেও ধরা পড়ছিলেন পাপারাৎজ্জিদের ক্যামেরায়।
তবে বছর কয়েকের মধ্যে অবশ্য ছবিটা পাল্টে যায়। বিনোদনের পাতায় যাঁর টুকটাক ছবি দেখা যেত, সেই কিম রাতারাতি তারকা হয়ে যান। অনেকের দাবি, এর পিছনে একটি ভিডিয়োর অবদান কম নয়।
রে জে-র সঙ্গে কিমের উদ্দাম যৌনতার ভিডিয়ো ফাঁস হওয়ামাত্রই সকলের নজরে পড়ে গিয়েছিলেন রবার্ট কার্দাশিয়ানের মেয়ে।
একটি ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডের দাবি, ২০০২ সালের অক্টোবরে ২৩তম জন্মদিন উদ্যাপন করতে রে জে-র সঙ্গে মেক্সিকোর কাবো সান লুকাসে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন কিম।
সে সময় একটি ক্যামকর্ডারও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন কিম এবং রে। ছুটির মজাদার ছবি ছাড়াও তাতে বন্দি হয়েছিল দু’জনের ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত।
কিম এবং রে-এর একান্ত ব্যক্তিগত মুহূর্ত কী ভাবে ফাঁস হল? অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। তবে যাবতীয় দায় ঝেড়ে ফেলেছেন দু’জনে। সেই দাবি বা পাল্টা দাবির টানাপড়েন আজও অব্যাহত। তবে তাতে ‘কিম কার্দাশিয়ান, সুপারস্টার’ নামে ওই ভিডিয়োর জনপ্রিয়তায় আঁচ লাগেনি।
নেটমাধ্যমে ওই ভিডিয়োটি নাকি এখনও পর্যন্ত ১৫ কোটি বার দেখা হয়ে গিয়েছে। তবে ভিডিয়োটি সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ্যে আসেনি। ২০০৭ সালে তা ফাঁস হয়েছিল। তার আগে অবশ্য আরও একটি ভিডিয়ো শোরগোল ফেলে দিয়েছিল হলিউডে। সেটি কিমের বন্ধু প্যারিস হিলটনের।
ওই ভিডিয়োটি নাকি ২০০১ সালে তুলেছিলেন খোদ প্যারিস। তাতে প্যারিসের সঙ্গে ছিলেন তাঁর তখনকার বয়ফ্রেন্ড রিক সলোমন। দু’জনের ঘনিষ্ঠতার মুহূর্তগুলি ফাঁস হয়ে গিয়েছিল আরও কয়েক বছর পর— ২০০৪ সালে।
প্যারিস বরাবরই দাবি করেছেন, রিকের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত মুহূর্তের ভিডিয়ো কী ভাবে ফাঁস হল, তা জানেন না। যদিও আমেরিকার একটি ট্যাবলয়েডের দাবি, ‘১ নাইট ইন প্যারিস’ নামে ওই ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আনার জন্য নাকি প্যারিসের পকেটে ১০ লক্ষ ডলার চলে গিয়েছে।
২০০৭ সালে প্যারিসকে পিছনে ফেলে দিয়েছিল কিমের ভিডিয়ো। পর্ন ছবি তৈরি করে এমন এক সংস্থা সেটি প্রকাশ্যে এনেছিল। তবে কিমের ভিডিয়ো কী ভাবে তাদের হাতে পৌঁছল, তা নিয়ে বিস্তর জল্পনা রয়েছে।
৪১ মিনিটের ওই ভিডিয়োটি যাতে প্রকাশ্যে না আসে, সে জন্য আইনি লড়াইও করেছিলেন কিম। তবে শেষমেশ তাতে সফল হয়নি তিনি।
২০০৭ সালে ২১ মার্চ তা দিনের আলো দেখামাত্রই হামলে পড়েছিলেন কোটি কোটি উৎসাহী। অখ্যাত এক স্টাইলিস্ট থেকে রাতারাতি তারকার খ্যাতি পেয়ে গিয়েছিলেন কিম।
ওই ভিডিয়ো থেকেই নাকি কিমের রোজগার হয়েছিল ২ কোটি ডলার, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ১৪৯ কোটি টাকারও বেশি! আয়ের নিরিখে প্যারিসকেও নাকি ছাপিয়ে গিয়েছিল কিমের একটি ভিডিয়ো।
এক লহমায় খ্যাতির আলোয় চলে এলেও তার খেসারতও দিতে হয়েছিল কিমকে। প্যারিসের সঙ্গে কিমের বন্ধুত্বে শেষ পর্দা পড়ে গিয়েছিল!