‘লাস্ট স্টোরিজ় ২’-তে কাজের জন্য সবে প্রশংসা কুড়োতে শুরু করেছিলেন। এর মধ্যেই বিতর্কে কাজল। সমাজমাধ্যমের কটাক্ষের শিকার হয়েছেন অভিনেত্রী।
কী কুক্ষণেই যে বলিউডের কমবয়সি নায়িকাদের পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি! খোলাখুলিই বলেছিলেন, নিখুঁত হওয়ার চেষ্টায় লোকজনের মতামতকে গুরুত্ব দেবেন না। বরং একান্তই যদি তা করতে হয়, তবে নিজের মর্জিমাফিক চলুন। এর পরই ট্রোলড হয়েছেন কাজল। তবে কি নতুন নায়িকাদের পরামর্শ দিয়ে ভুল করলেন কাজল?
কমবয়সি নায়িকাদের কী পরামর্শ দেবেন? সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে এ প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন কাজল। জবাবে ‘বাজিগর’-এর নায়িকার সাফ কথা, ‘‘ঈশ্বর আপনাদের এক ধরনের গড়েছেন। তা যদি মনের মতো না হয়, তবে মেকআপের সাহায্য নিতে পারেন।’’
এখানেই থামেননি কাজল। আজকালকার বহু নায়িকাই যে শল্যচিকিৎসকের ছুরি-কাঁচির সাহায্যে নিজেদের ‘নিখুঁত’ করার দৌড়ে শামিল হয়েছেন, তা নিয়েও নিজের মতামত দিয়েছেন।
নিজের মন্তব্যকে আর একটু খোলসা করেছেন কাজল। বলেছেন, ‘‘অস্ত্রোপচার করতে হলে অন্যদের চাপে পড়ে তা করবেন না। এ নিয়ে সব সময় নিজস্ব মতকে গুরুত্ব দিন।’’
কাজলের কথায়, ‘‘(অস্ত্রোপচার করাবেন কি না) তা নিয়ে আপনাদের ব্যক্তিগত অভিমতকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ২৫ জন লোক আপনাদের এমন (অস্ত্রোপচার) করতে বলছেন বলেই তাঁদের চাপে পড়ে তা করবেন না।’’
কাজলের এই মন্তব্য যেন আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে। তা ঘিরে সমাজমাধ্যমে তুফান উঠেছে। কাজলের দিকে কটাক্ষ, সমালোচনা, অযাচিত নানা মন্তব্যের তির ধেয়ে আসছে। কাজলের রূপচর্চার পাশাপাশি তাঁর মেয়ে নিসাকেও ছে়ড়ে কথা বলছেন না অনেকে।
অনেকের দাবি ‘বেফাঁস’ কথা বলেছেন কাজল। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, কেরিয়ারের গোড়ায় তাঁর চেহারা নিয়ে নানা ‘কুমন্তব্য’ শুনেছেন। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা আমাকে নিয়ে নানা মন্তব্য করতেন, তাঁদের থেকে বেশি বুদ্ধিমতী আমি।’’
সমালোচকদের যে তিনি বিশেষ তোয়াক্কা করেন না, তা সাফ বুঝিয়ে দিয়েছেন কাজল। নব্বইয়ের দশকে কেরিয়ারের গোড়া থেকেই নজর কেড়েছিলেন।
কেরিয়ারের গোড়া থেকেই কাজল এ রকম! নায়িকার ভূমিকায় তাঁর সাবলীল অভিনয় তো ছিলই। চিরাচরিত বলিউডি নায়িকাসুলভ ভাবমূর্তিও ভেঙে খান খান করে দিয়েছিলেন। ‘বাজিগর’, ‘করণ অর্জুন’, ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে যায়েঙ্গে’, ‘গুপ্ত’, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’— অভিষেকের পর থেকে একের পর এক ছবিতে পর্দা কাঁপিয়েছেন।
সে সব ছবিতে পটে আঁকা মুখশ্রীর নায়িকার বদলে তিনি যেন মাটির কাছাকাছি থাকা পাশের বাড়ির মেয়ে। তাই জোড়া ভ্রু বা শ্যামলা রঙের জন্য কুণ্ঠাবোধ নেই। বেশির ভাগ নায়িকার মতো তন্বী না হলেও পরোয়া করেননি। বরং সে সব ‘খুঁত’ নিয়েই পর্দায় নেমেছেন।
দীর্ঘ বিরতি কাটিয়ে ঘোর সংসারী কাজল যখন পর্দায় দেখা দিলেন, তখন অবশ্য গায়ের রং নিয়ে সমালোচকদের নানা মন্তব্য সইতে হয়েছে।
উজ্জ্বল বর্ণের ‘রহস্য’ অবশ্য কাজল ফাঁস করেছেন। জানিয়েছিলেন, আগে শুটিংয়ের কাজে রোদে ঘুরে বেড়াতেন। দীর্ঘ দিন পর্দা থেকে দূরে থাকার জন্য সে সবের বালাই নেই। ঘরে বসে থাকতে থাকতেই ফর্সা হয়ে গিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
কাজলের সে যুক্তিকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সমালোচকেরা। তাঁদের মতে, উজ্জ্বল রঙের নেপথ্যে নির্ঘাত শল্যচিকিৎসকদের কারিকুরি রয়েছে।
সম্প্রতি ট্রোলের মুখে পড়েছেন কাজলের মেয়ে নিসাও। মায়ের মতো তাঁর শ্যামলা রং কী ভাবে রাতারাতি বদলে গেল? তবে কি তিনিও মায়ের মতো অস্ত্রোপচারের সাহায্য নিয়েছেন? এ ধরনের প্রশ্নও তুলেছেন সমালোচকেরা।
সমালোচকদের নিরস্ত করতে কাজলের যুক্তি ছিল, খুব স্বাস্থ্যকর ডায়েট করে নিসা। প্রতি দিনের খাওয়াদাওয়া বুঝেশুনে করে। নিয়মিত ত্বকেরও যত্ন নেয়।
সাম্প্রতিক ট্রোলের জবাবে এখনও পর্যন্ত সমালোচকদের বিরুদ্ধে পাল্টা মন্তব্য করেননি কাজল। তবে তিনি কত দিন চুপচাপ থাকবেন, তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান।